দেশে অঘোষিত জরুরি অবস্থা! : সারাদেশে এক মাস ও ঢাকায় অনির্দিষ্টকাল সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ
Bangladesh Islamists burn the Quran
Islamists have scorched bookstores in Bangladesh, torching the Quran and books of the Hadith in Dhaka.
According to bdnews24, Bangladesh's online newspapwer, Hifazat-e Islam has set fire to almost 55 bookstores, destroying more than 50 000 books worth more than 10 million taka (about R1 161 550.)
"They had snatched books from the stores to burn them in the middle of the street. They knew they were copies of the Quran and Hadith but still went ahead to desecrate them," Abdul Matin, who sold books on the pavement of Comrade Moni Singha Road told bdnews24.
A middle-aged businessman, Abdul Wadid, who was among the spectators who had gathered to witness the arson at the mosque's south gate, told bdnews24, "They burned these books while chanting slogans to save the religion. They didn't care to burn the holy book of the religion they belong to. They are enemies of Islam and humanity."
Activists from the Hefazat-e-Islam group have, since Sunday, been demanding an anti-blasphemy law that carries the death penalty. The activists are also demanding mandatory religious education and the end to what they described as an "anti-Islam" policy that calls for gender equality.
The main opposition Bangladesh Nationalist Party has called a 36-hour nationwide strike from Wednesday after 30 people were killed in clashes between Islamists and security forces.
You can read the full story on bdnews24.
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, ফ্রান্সের বিশেষ দূত ঢাকায় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন। এসব সাক্ষাতে মানবাধিকার পরিস্থিতি, যুদ্ধাপরাধের বিচারসহ সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে বলে তারা মনে করছে।
জানা গেছে, ফ্যাঙ্কোয়েস জিমারে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য হিসেবে ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ফ্রান্সের পেটিট কুয়েভিলি শহরের মেয়র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর গতকাল বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাত্কারে এবং চট্টগ্রামে অপর এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, ঢাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য এবং সারাদেশে এক মাসের জন্য সব ধরনের সভা-সমবেশ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় একই ঘোষণা দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি বিরোধী দল বিএনপিকে ঢাকায় কয়েক দফায় সমাবেশ করতে দেয়নি সরকার। এরপর আরও একাধিক সংগঠনকেও সমাবেশ ও মানববন্ধন করতে বাধা দেয়া হয়েছে। তারও আগে সরকার গায়ের জোরে বহুল প্রচারিত দৈনিক আমার দেশ বন্ধ করে দিয়েছে। এরপর বিরোধী দল সমর্থক দিগন্ত টিভি ও ইসলামিক টিভির সম্প্রচারও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে কার্যত দেশে জরুরি অবস্থাই জারি করা হলো। জরুরি অবস্থার অন্যতম অনুষঙ্গ সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা এবং গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ।
জরুরি অবস্থায় গণমাধ্যমে সেন্সরশিপও আরোপ করা হয়। সেই ব্যবস্থাও দেশে বহাল আছে। এ কারণে শাপলা চত্বরের গণহত্যার মতো স্বাধীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গণহত্যার খবরও প্রচার করেনি দেশের গণমাধ্যমগুলো। সম্প্রতি প্রভাবশালী মার্কিন টিভি স্টেশন সিএনএন সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই জানিয়েছে, সিএনএনসহ বিদেশি গণমাধ্যমকে বাংলাদেশে আসার অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। তারা ভিসা চাইলে ভিসা অফিসার জানায়, প্রতিবেদন প্রচারের আগে তা বাংলাদেশ সরকারকে দেখাতে হবে এবং সরকারের মনঃপূত না হলে সেই রিপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা যাবে। মধ্যপ্রাচ্যের আরেক প্রভাবশালী টিভি স্টেশন আলজাজিরাও একই পরিস্থিতি মাথায় নিয়ে বাংলাদেশের খবর প্রচার করছে। সোশ্যাল মিডিয়াকেও নিয়ন্ত্রণ করার পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
গতরাতে বিবিসি জানায়, অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকায় রাজনৈতিক দলের মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর একথা নিশ্চিত করে বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করবে এমন নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত রাজধানীতে কোনো দলকেই সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হবে না।
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ক্রমবর্ধমান জনরোষ ও জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের ব্যাপারে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের আসন্ন রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সরকারের এ সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন বিরোধীদল। তারা একে অসাংবিধানিক এবং বাকশাল প্রতিষ্ঠার অংশ বলে মন্তব্য করেছেন।
তবে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের শরিক অন্য দলগুলো সরকারের এ সিদ্ধান্তকে অবনত মস্তকে মেনে নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গতকাল ঢাকায় ১৪ দলের পূর্বঘোষিত এক
সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে।
আগামী এক মাস কোনো দলকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে না —মিরসরাইয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী : আমাদের মিরসরাই প্রতিনিধি জানান, আগামী এক মাস কোনো দলকে সভা-সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর।
গতকাল চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় জোরারগঞ্জ নতুন থানা উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সমাবেশের অনুমতি নিয়ে যারা সমাবেশকে দুর্বৃত্তদের হাতে তুলে দেন, জনসাধারণের জানমালের ওপর অত্যাচার, গাড়ি ভাংচুর, মালামাল লুট করে তাদের যুক্তিসংগত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে সমাবেশ করার অধিকার স্বীকার করা সত্ত্বেও আগামী এক মাস পর্যন্ত কোনো দলকে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না।
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের অনুমতি নিয়ে বিরোধী দল ভাংচুর, জ্বালাও-পোড়াও করে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। সমাবেশের নামে গাড়ি ভাংচুর, জ্বালাও-পোড়াও, দোকানপাটে আগুন, মসজিদে হামলা ও পবিত্র কোরআনে আগুন দেয়, তাদের প্রতিহত করা হবে।
সমাবেশের অনুমতি নিয়ে যারা সমাবেশকে দুর্বৃত্তদের হাতে তুলে দেয়, তাদের চরিত্র গত ৫ মে দেশবাসী দেখেছে দাবি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত হেফাজত ইসলামের ওপর ভরসা করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকার উত্খাতের স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু ১০ মিনিটে তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে গেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, ৫ মে ঢাকায় সমাবেশ করার জন্য বিএনপি-জামায়াত হেফাজত ইসলামকে পাঁচ কোটি টাকা দিয়েছে। কিন্তু ইসলাম রক্ষা মাওলানা শফী সাহেবের একার দায়িত্ব নয়। ইসলাম রক্ষার নামে তারা ৯৬২টি কোরআন শরিফ পুড়িয়ে দিয়েছে।
সংলাপের জন্য সংসদকে উপযুক্ত স্থান উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংলাপের জন্য সরকার সব সময় প্রস্তুত। এ জন্য কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবের প্রয়োজন নেই। আসন্ন বাজেট অধিবেশনে বিরোধী দলকে যোগ দিয়ে আলোচনার আহ্বান জানান তিনি।
সাংবিধানিক অধিকার সব সময় রক্ষা করা যায় না —সৈয়দ আশরাফ : সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, সাংবিধানিক অধিকার সব সময় রক্ষা করা যায় না। সাভারে দুর্ঘটনা ঘটেছে, দক্ষিণাঞ্চলে ঝড়ের কারণে তেমন একটা প্রাণহানি না হলেও অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখানে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশে একটি স্বাভাবিক পরিস্থিতি প্রয়োজন। এ জন্য সভা-সমাবেশ বন্ধ রাখার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটা শুধু বিরোধী দলের জন্য নয়, সরকারি দলের নেতাকর্মীরাও এই সময় সভা-সমাবেশ করতে পারবে না।
গতকাল দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অবস্থানকারী হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের সরিয়ে দেয়ার পর রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ করতে দেয়নি পুলিশ। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দল সমাবেশের জন্য তিন দফা আবেদন করেও অনুমতি পায়নি। তা ছাড়া কয়েক দিন ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কোনো সভা-সমাবেশ করতে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রেস ক্লাবের সামনে সাধারণ নাগরিক ও বিভিন্ন সংগঠনের সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধনের রেওয়াজ থাকলেও সেখানে অস্থায়ী নিশেধাজ্ঞা জারি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) এক নির্দেশনায় বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তাদের অনুমতি ছাড়া প্রেস ক্লাবের সামনে কোনো কর্মসূচি পালন করা যাবে না। এর পরও শনিবার বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তাদের নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করতে এলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তির দাবিতে মাহমুদুর রহমান মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ নামের একটি সংগঠন তাদের কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। গতকালও প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তায় কোনো সংগঠনকে কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হয়নি।
রাজনৈতিক নেতাদের নিন্দা : সরকারের এ সিদ্ধান্তে নিন্দা জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু গতকাল বলেছেন, সরকার বিরোধী দলের সভা-সমাবেশ ও মিছিল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করে দিয়ে সংবিধানবিরোধী আচরণ করেছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ১৯৭৫ সালকেও হার মানিয়েছে।
অন্যদিকে, বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী সভা-সমাবেশের বিরুদ্ধে সরকারি নীতির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সভা-সমাবেশ বন্ধ করার সরকারের আচমকা সিদ্ধান্তে আমি বিচলিত হয়েছি। সারা দেশের মানুষও জরুরি অবস্থা অথবা একদলীয় শাসনের আতঙ্কে রয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেছেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত গণতন্ত্রের পরিপন্থী। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মিটিং-মিছিল করার অধিকার সবারই আছে। এটা সাংবিধানিক অধিকার। এ অধিকার কেড়ে নেয়ার এখতিয়ার কারও নেই।
বাকশালের নমুনা পাওয়া যাচ্ছে —হাফিজউদ্দিন খান ও সৈয়দ আবুল মকসুদের প্রতিক্রিয়া : গতকাল রেডিও তেহরান জানায়, আগামী এক মাস রাজনৈতিক দলগুলোকে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ করতে না দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছেন দেশের বিশিষ্টজনরা। তারা বলছেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত সংবিধান পরিপন্থী। এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ হওয়া উচিত।
বিশিষ্ট কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেক সৈয়দ আবুল মকসুদ রেডিও তেহরানকে বলেন, 'কোনো গণতান্ত্রিক দেশে একদিনের জন্য সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ হতে পারে না। এটা গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ। দেশে এমন ঘটনা ঘটেনি যাতে একদিনের জন্যও সমাবেশ নিষিদ্ধ থাকতে পারে। সরকার যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে তাতে ক্রমাগত গণতান্ত্রিক অধিকার সংকুচিত হচ্ছে; যা গণতান্ত্রিক চেতনা, রীতিনীতি ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক চরিত্রের পরিপন্থী।'
তিনি আরও বলেন, সরকার এক মাসের জন্য সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। পরবর্তীতে যদি ছয় মাস নিষিদ্ধ করে তাহলে তাদের বাধা দেবে কে? দেশের জনগণ ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের উচিত এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি বেশি করে সভা-সমাবেশ করা। ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ প্রতিরোধ না হলে ভবিষ্যতে এ নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেন সৈয়দ আবুল মকসুদ।
তিনি আরও বলেন, 'এ সরকার যে আচরণ করছে তা গণতান্ত্রিক নয়। তারা তাদের খুশিমতো রাষ্ট্র চালাচ্ছে। সভা-সমিতি করা, সংবাদ প্রকাশ করা মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। সাংবিধানিক এ অধিকার সংকুচিত করার অর্থ হলো সংবিধানকে লঙ্ঘন করা। এখন সরকার যে কাজ করছে তা সংবিধান পরিপন্থী। দেশের গণতান্ত্রিক শক্তির উচিত সরকারের এ সিদ্ধান্ত প্রতিহত করা।'
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হাফিজউদ্দিন খান রেডিও তেহরানকে বলেন, 'সরকারের এ সিদ্ধান্ত সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের শামিল। যতক্ষণ পর্যন্ত একটি সভা-সমাবেশ শান্তিপূর্ণ থাকে, আইন লঙ্ঘন না করে, ততক্ষণ তাতে বাধা দেয়া যাবে না।'
বিরোধীদলকে আন্দোলন থেকে বিরত রাখার কৌশল হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'নিষেধাজ্ঞার কারণে যদি এক মাস কোনো সভা সমাবেশ বন্ধ থাকে, এরপর বর্ষার জন্য কেউ সভা-সমাবেশ করতে পারবে না।'
হাফিজউদ্দিন খান আরও বলেন, সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলন হতে পারে; কিন্তু সে সুযোগ সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। সংবাদপত্রে এর বিরুদ্ধে লেখালেখি করা যায় এবং টেলিভিশন টকশোতে এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে সেসবও বন্ধ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে দুটি টেলিভিশন ও একটি সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
সরকারের অনেক পদক্ষেপে বাকশালের নমুনা পাওয়া যাচ্ছে উল্লেখ করে হাফিজউদ্দিন খান বলেন, দেশের মানুষ এখন চরম অস্বস্তিতে রয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা দিন দিন আরও ঘনীভূত হচ্ছে। এখন একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু না হলেও, সব গণমাধ্যম বন্ধ না হলেও সরকারের অনেক কর্মকাণ্ডে বাকশালের নমুনা পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
সরকারি দলের সাধুবাদ : এদিকে আগামী এক মাস সারাদেশে রাজনৈতিক দলের মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ১৪ দল। সরকারের সিদ্ধান্ত স্বাগত জানিয়ে তাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি তাত্ক্ষণিকভাবে স্থগিত করে। গতকাল বিকালে মুহাম্মদপুর টাউনহল মাঠের পাশে ১৪ দলের পূর্বনির্ধারিত সমাবেশে অংশ নিতে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মিছিলসহ আসতে থাকে। একপর্যায়ে ঢাকা মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সরকারের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে সমাবেশ স্থগিতের ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ১৪ দল আগামী এক মাস তাদের মিছিল-সমাবেশ বন্ধ রাখবে। এ সময় মঞ্চে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক উপস্থিত ছিলেন।
অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকায় সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর একথা নিশ্চিত করে বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সভাসমাবেশ করবে এমন নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত রাজধানীতে কোন দলকেই সভা সমাবেশ করতে দেয়া হবে না।
তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাতে এক ব্যাখ্যায় জানিয়েছে, 'সাধারণ' সভা-সমাবেশের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি।
ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, কোনো দলের কর্মসূচিতে জানমালের ক্ষতি বা নাশকতার আশঙ্কা থাকলে তাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেবে না সরকার। তবে 'সাধারণ' সভা-সমাবেশে সরকারের আপত্তি নেই।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এটা কোনো নিষেধাজ্ঞা নয় বরং জনগণের জানমাল রক্ষার্থে পূর্বসতর্কীকরণ ব্যবস্থা।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর বিবিসি বাংলাকে বলেন, সংবিধানে যুক্তিসঙ্গত বিধিনিষেধ সাপেক্ষে সভাসমাবেশের অধিকার দেয়া আছে। এর অর্থ হলো, সমাবেশ যারা করবেন তারা জনগণের সম্পত্তি নষ্ট করবেন না, গাড়ি-বাস-ট্রেনে আগুন দেবেন না, কোরান শরীফ পোড়াবেন না।
তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত না হচ্ছি যে সমাবেশের নাম করে দুর্বৃত্তরা ওই ধরণের কাজগুলো করবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত এই যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধের আওতায় আমরা সভাসমাবেশের অনুমতি না দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। "আমরা বলেছি এটা হবে অনির্দিষ্টকালের জন্য" - বিবিসিকে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেন, রাজনৈতিক বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে গত কিছুদিনে যেসব ঘটনা ঘটেছে তা নতুন। ঢাকায় যে মাত্রায় এগুলো ঘটেছে তা আর কোথাও হয় নি। তাই ঢাকার ক্ষেত্রেই সভাসমাবেশ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তার মানে কি ঢাকাকে নিরাপদ করার জন্য এ সিদ্ধান্ত হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে মি. আলমগীর বলেন, আমরা সব জায়গাকেই নিরাপদ রাখতে চাচ্ছি।
তিনি বলেন "বিরোধীদল জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করেছে, কোরান শরীফ পর্যন্ত পুড়িয়েছে এবং ৪৮ ঘন্টায় নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার অগণতান্ত্রিক-স্বৈরতান্ত্রিক হুমকি দিয়েছে।" তার কথায়, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা দেশের আইন মান্য করার চেতনা না দেখায় ততক্ষণ পর্যন্ত এসব ব্যবস্থা নিতেই হবে।
এর আগে আজ চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে মহিউদ্দিন খান আলমগীর আভাস দিয়েছিলেন যে এই নিষেধাজ্ঞা হবে এক মাস মেয়াদের।
তিনি সেখানে বলেন, "যারা সভাসমাবেশের অনুমতি না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তাদের বলতে চাই, শান্তিপূর্ণ সকল সভা সমাবেশকে আমরা উৎসাহিত করি। কিন্তু যারা সভাসমাবেশকে দুর্বৃত্তদের হাতে তুলে দেন, জনসাধারণের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করেন, গাড়ি পোড়ান, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জিনিসপত্র নষ্ট করেন, দোকান লুট করেন, তাদেরকে - ওই যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ সাপেক্ষে সভাসমাবেশ করার অধিকার স্বীকার করা সত্বেও - আগামি এক মাস পর্যন্ত আমরা কোন সমাবেশ কোন দলকেই করতে দেবো না।"
এর আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও এ বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানান। কিন্তু তিনিও এক মাসের কথাই বলেছিলেন বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়।
ঢাকার সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী 'ঘূর্ণিঝড় মহাসেন-উত্তর ত্রাণকার্য ও পুনর্বাসনের সুবিধার জন্য' জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সৈয়দ আশরাফ উল্লেখ করেছিলেন।
কিন্তু বিবিসি বাংলার সাথে সাক্ষাৎকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা হবে অনির্দিষ্টকালের।
সরকারের উচ্চপর্যায়ে আরো কয়েকজনের সাথে এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বিবিসি বাংলার কথা হয়েছে। কিন্তু তারা এই নিষেধাজ্ঞার কথা স্পষ্টভাবে জানতেন বলে তাদের কথায় মনে হয় নি।
ক্ষমতাসীন ১৪-দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রাশেদ খান মেনন তার প্রতিক্রিয়ায় বিবিসিকে বলেন, এ সিদ্ধান্ত সঠিক হয় নি।
http://www.bbc.co.uk/bengali/news/2013/05/130519_pg_bd_meetings_ban.shtml
এই রমজানে ঢাকায় তৈরি হয়ে যাক আরো কিছু মন্দির
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ২:০৬ |
ঢাকা শহরে শেষ কবে নতুন মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়েছে আমি ঠিক জানিনা, কিন্তু সময়ের সাথে কিছু মন্দির আর কিছু অমুসলিম পরিবারের ভিটেমাটি খেয়ে ফেলা হয়েছে বিসমিল্লা বলে সেটা মোটামুটি ধরে নেয়া যায়। এই ধরণের আকাম যেই কুতুবেরা করেন, তাদের যদি কিঞ্চিত ধারণাও থাকত, সংখ্যালঘুর ওপর অন্যায় সুবিধা নিয়ে জাহান্নামে কি বিরাট প্যালেস তৈরি হচ্ছে, তাহলে আমাদের দেশ সর্বধর্মের জন্যই আরো আরামের থাকত। সম্রাট আলমগীরের সময়ে তার কোন এক সেনাপতি নারায়ে তকবীর দিয়ে পাঞ্জাবের কোন এক গ্রামের প্রাচীন মন্দির ধ্বংস করে দিয়ে সেখানে দিব্যি আজান দিয়ে মসজিদ তুলে কেল্লা ফতে করে ফেলল। সেই মন্দিরের পুরোহিত, বহু খড়কাঠ পুড়িয়ে দিল্লী এলেন বিচার চাইতে, এবং এক সুযোগে রাজদরবারে পৌছে নিজের অভিযোগও উপস্থাপন করলেন। ন্যায়পরায়ণ সুশাসক সম্রাট তদন্ত করে দেখলেন অভিযোগ সঠিক। তাই খোঁজ করলেন এই অবস্থায় কি করা যায়। এই সম্পর্কিত মাসায়ালায় পাওয়া গেল, কোন স্থান মসজিদ হিসেবে ব্যাবহৃত হলে সেখানে ভিন্ন প্রয়োজনে ব্যাবহার নিষিদ্ধ। তাই সেই পুরোহিতকে ডেকে নিজে ক্ষমা চেয়ে নিজের অক্ষমতার কথা জানালেন পূর্বস্থানে মন্দির পুনর্নির্মাণের। তবে এই সুযোগ দিলেন, যে পুরো মোঘল সম্রাজ্যের যেকোন স্থানে সে চাইলে মন্দির নির্মান করতে পারবে। সেই পুরোহিত তখন চাইল দিল্লীর মুসলিম ক্ষমতা আর শৌর্যের কেন্দ্র দিল্লী জুমা মসজিদের সিড়ির কাছেই যায়গা দেখিয়ে জানালো এখানেই চাই তার মন্দির। পরবর্তীতে সেখানেই নির্মাণ হয় সরকারী খরচে মন্দির। আমি নিজেও দিল্লী গিয়ে মনে হয় দেখেছিলাম সেই মন্দির। আজকে ধর্মের নামে বাড়াবাড়ি যারা করে, তাদের ধমকানোর মত আল্লাহওয়ালাদের আর দেখিনা। হযরত ওমর (রাঃ) যখন গেলেন জেরুজালেমে সেখানকার অধিবাসীদের সাথে চুক্তির জন্য, সেই অধিবেশন ডাকা হয়েছিল সিনাগগ ( অথবা গীর্জা ঠিক মনে নেই) এর ভেতরে। আলোচনা চলাকালীণ নামাজের সময় হলে তিনি এই কারণে সেখানে নামাজ আদায় করেন নাই, যে পরবর্তীতে মুসলিমরা সেটার অন্যায্য সুবিধা নিয়ে সেই স্থান দখল করে নেবার চেষ্টা করতে পারে। আর একই সাথে আল্লাহর রাসুল (সঃ) মদীনার মসজিদে খ্রীস্টান প্রতিনিধিদের মসজিদের ভেতরেই তাদের উপাসনা করার সুযোগ দিয়েছিলেন বলে পড়েছিলাম কোথাও।
ঢাকার দেড়কোটি জনসংখ্যার মাঝে লাখ দশ পনের তো হিন্দু ধর্মাবলম্বী হবারই কথা, প্রতি বছরেই যেমন এক দুই ডজন নতুন মসজিদ গজিয়ে ওঠে নানা হাউজিং, প্রোজেক্ট আর কলোনিতে, একই সাথে বছরে তো এক আধটা মন্দিরও হবার কথা। কই কখনো তো শুনিনি সেই কথা। নিজে অনাহারী থেকে অমুসলিম কয়েদীদের খাদ্যের ব্যাবস্থা করা ছিল সেই সময়ের মুসলিমদের ক্যালিবার, আর নারাবাজী করে অসহায় মানুষের ওপর যুলম হল আজকের জমানার। তবে যেসব যালিমদের এসব সুকীর্তি, তারা যে নিজ স্বজাতির ওপরেও খুব সদয় তা নয়। নেকড়ের তো মেষবালকের রক্ত চোষার জন্য ছুতো লাগবেই।
বাবা আদমের দুনিয়ার ক্র্যাশ ল্যান্ডিং এর পরের বেশিরভাগ সময়েই কাটিয়েছেন এই ভারতে, আর নবীদের এক অংশ তাদের কর্মক্ষেত্র হিসেবে পেয়েছিলেন ভারতকে। কিছু গবেষকের মতেই প্রাচীন বেদের ভিত্তি ছিল নূহ নবীর ওপর পাঠানো সহীফার ওপরে। পরবর্তীতে কালে কালান্তরে গঞ্জিকার ধোঁয়ার সাথে বহু কূপমন্ডুকতা ঢুকে এখন কল্পনা, প্রতিমাপূজা আর বাগাড়ম্বরের এক আশ্চর্য মিশ্রণ আজকের হিন্দুধর্ম যার একনিষ্ঠ অনুসারী আমি লম্বা সময় ভারতে কাটিয়েও খুব বেশী পাইনি। তার পরেও প্রতিটি মানুষেরই এই পৃথিবীর জীবনে অধিকার আছে তার পরিচয় আর বিশ্বাসকে বেছে নেবার। আসল খেলা ফাইনাল চোখ বন্ধ হবার পরে।
রমজান রহমতের মাস, হকদারের হক বুঝিয়ে দেবার মাস আর আত্মশুদ্ধির মাস। তাই রমজানের আমেজে বলা যায় ঢাকার জনসংখ্যার হিসেবে মন্দিরগুলি কোথায় হওয়া উচিৎ একটু খোঁজ নেয়া যাক।
প্রকাশ করা হয়েছে: আমার দিনকাল বিভাগে । সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ২:০৮ | বিষয়বস্তুর স্বত্বাধিকার ও সম্পূর্ণ দায় কেবলমাত্র প্রকাশকারীর...
No comments:
Post a Comment