সংসদে অভব্যতার অভিযোগ কল্যাণের বিরুদ্ধে
নয়াদিল্লি: তাঁর বয়স ৭১৷ ৩৩ বছর ধরে সাংসদ৷ বৃহস্পতিবার লোকসভায় সেই প্রবীণ সিপিএম নেতা বাসুদেব আচারিয়াকে সরাসরি তুই-তোকারি করলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সঙ্গে বিচিত্র অঙ্গভঙ্গি৷ বাসুদেববাবু আসন ছেড়ে দাঁড়াতেই কল্যাণবাবু তাঁর দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করেন, 'বসে পড় বাসু, বসে পড়৷ বুদ্ধ কোথায় রে বাসু? বুদ্ধ এখন ধুতি ছেড়ে পাজামা পরছে রে? জেলা পরিষদে তোদের শুইয়ে দিয়েছি৷' জয়রাম রমেশ, লালুপ্রসাদ যাদব ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়রা অনেক চেষ্টা করেও তাঁকে শান্ত করতে পারছিলেন না৷ একসময় সিপিএম ও তৃণমূল সাংসদদের মধ্যে হাতাহাতি হওয়ার উপক্রম হয়৷ তখন সভা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন গোয়ার সাংসদ ফ্রান্সিসকো সারদিনহা৷ তিনি বিরক্ত হয়ে বলেন, 'ভুলে যাবেন না, এটা লোকসভা৷ পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নয়৷' সংসদে খেউড় নতুন কিছু নয়, কিন্ত্ত এ দিন কল্যাণ যে ভাবে লাগামছাড়া কথার তুবড়ি ছুটিয়েছেন তাতে বাকি সাংসদরা একইসঙ্গে বিরক্ত এবং স্তম্ভিত৷
জমি অধিগ্রহণ বিল নিয়ে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যয় বলতে শুরু করার পরেই ঘটনার সূত্রপাত৷ সুদীপবাবু তাঁর বক্তব্য শুরু করেন নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরের কৃষকদের সেলাম জানিয়ে৷ তিনি বলেন, '১৮৯৪ সালের দানবীয় আইন নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরের উপরে প্রয়োগ করা হয়েছিল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কৃষকরা যে লড়াই করেছেন, তা এখন ইতিহাস৷ কৃষকদের উপরে গুলি চলেছে, অত্যাচার হয়েছে, প্রচুর কৃষক মারা গিয়েছেন৷' এটুকু বলার পরই সিপিএম সাংসদ রামচন্দ্র ডোম উত্তেজিত হয়ে প্রতিবাদ করতে থাকেন৷ সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়েন তৃণমূল সাংসদরা৷ চিত্কার শুরু হয়ে যায়৷ সিপিএম ও তৃণমূল সাংসদরা তখন সমানতালে চেঁচাচ্ছেন৷ সবার উপরে ছিল কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলা৷ তিনি বলতে থাকেন, 'আমরা এ সব অ্যালাও করব না৷' জয়রাম দ্রুত যান তাঁদের শান্ত করতে৷ এর মধ্যে কাকলি ঘোষদস্তিদারকে বলতে শোনা যায়, 'মার্ডারারস৷'
সভা শান্ত হলে সুদীপ বলেন, 'ঈশ্বর ওদের ক্ষমা করুন৷' আবার সিপিএমের হইচই শুরু হয়৷ এ বার বাসুদেব আচারিয়া নিজের জায়গায় উঠে দাঁড়ান৷ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তখন বলেন, 'বোস, বাসু, বোস৷' তিনি এত জোরে কথা বলছিলেন যে হট্টগোলের মধ্যেও তাঁর কথা বোঝা যাচ্ছিল৷ আবার জয়রাম রমেশ তাঁর কাছে গিয়ে শান্ত হতে বলেন৷ সারদিনহা সমানে বলতে থাকেন, 'শান্ত হোন৷ আপনারা শান্ত হোন৷' সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত তৃণমূল সাংসদদের বলেন, 'বসুন, বলতে দিন৷' সুদীপবাবু তার পর বলেন, 'ওদের কষ্টটা হল, কেউই এ বার আর জিতে আসতে পারবেন না৷' ঠিক পিছন থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সিপিএমের নেতাকে বলেন, এ বার বাঁশি বাজাতে হবে৷ এর পর সুদীপের বাকি ভাষণের সময় আর কোনও গণ্ডগোল হয়নি৷
কিন্ত্ত গণ্ডগোল আবার শুরু হয় বাসুদেব আচারিয়া বলতে ওঠার সময়৷ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ জনা পাঁচেক তৃণমূল সাংসদ উঠে দাঁড়িয়ে হইহল্লা শুরু করে দেন৷ কল্যাণবাবু এ বার হিন্দিতে বলেন, 'বুদ্ধ কাঁহা হ্যায়?' এতক্ষণ বাংলায় কথা চলছিল বলে সম্ভবত কেরলের সিপিএম সাংসদরা ভাল করে বুঝতে পারেননি৷ হিন্দিতে এই কথা শোনার পর তাঁরা হইহই করে জায়গা ছেড়ে নেমে আসেন৷ তৃণমূল সাংসদরাও নেমে পড়েন৷ মাঝখানে একসারি আসন৷ একদিকে সিপিএম ও বাম সাংসদরা ও অন্যদিকে তৃণমূল সাংসদরা উত্তেজিত হয়ে চিত্কার করছেন৷ একে অন্যের দিকে আঙুল তুলে শাসানির ভঙ্গিতে কথা বলছেন৷ প্রায় হাতাহাতি হওয়ার উপক্রম৷ মন্ত্রী নারায়ণস্বামী গিয়ে সিপিএম সাংসদদের সামলাচ্ছেন৷ জয়রাম, লালুপ্রসাদ, জগদম্বিকা পাল তৃণমূল সাংসদদের শান্ত করার কাজে ব্যস্ত৷ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে টানছেন৷ সারদিনহা তখন বললেন, 'দয়া করে, সভার মর্যাদা রক্ষা করুন৷' অবস্থা একটু শান্ত হওয়ার পর সিপিআই সাংসদ প্রবোধ পান্ডার সঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তর্কাতর্কি শুরু হয়৷ আবার প্রচণ্ড চিত্কার৷ তার মধ্যে সারদিনহা বললেন, 'অত্যন্ত খারাপ৷ আপনারা যদি নিজেদের বিরোধ মেটাতে চান তো অন্য জায়গায় গিয়ে মেটান৷'
পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে বাসুদেব আচারিয়া বলেন, 'কখনও ভাবিনি এমন পরিস্থিতি আসবে৷' তার পর তিনি বলতে শুরু করেন৷ ভাষণের মধ্যে এক জায়গায় সৌগত রায় বলেন, নন্দীগ্রামে কী হয়েছিল? বাসুদেবের জবাব, নন্দীগ্রামে এক ইঞ্চি জমিও নেওয়া হয়নি৷ সৌগত রায় বলেন, ঘোষণাতেই তো গন্ডগোল হয়েছিল৷ বাসুদেব আচারিয়ার জবাব, 'ঘোষণা করা আর অধিগ্রহণের মধ্যে অনেক ফারাক আছে৷' এর পর আবার হট্টগোল৷ পরে বাসুদেববাবু বলেন, 'কী করব! ওদের প্রশিক্ষণ দরকার৷ ওরিয়েন্টেশন কোর্স করা দরকার৷' গণ্ডগোল যখন হচ্ছে, তখন সারদিনহা বারবার করে বলতে থাকেন, 'এ সব কিছুই নথিভুক্ত হবে না৷ এটা অত্যন্ত খারাপ রুচির পরিচয়৷ আপনারা এই সভাকে উপহাস করছেন৷'
কিছুদিন আগেও যশবন্ত সিংয়ের দিকে আঙুল তুলে চিত্কার করতে করতে ছুটে গিয়েছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তার পর তাঁকে দুঃখপ্রকাশও করতে হয়েছিল৷ তখন বিরোধী নেত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছিলেন, প্রথমবারের সাংসদ দুঃখপ্রকাশ করেছেন বলে বিজেপি বিষয়টাকে 'ক্লোজড চ্যাপ্টার' বলে মনে করছে৷ তার কিছুদিনের মধ্যেই ফের একই ঘটনা৷
জমি অধিগ্রহণ বিল নিয়ে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যয় বলতে শুরু করার পরেই ঘটনার সূত্রপাত৷ সুদীপবাবু তাঁর বক্তব্য শুরু করেন নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরের কৃষকদের সেলাম জানিয়ে৷ তিনি বলেন, '১৮৯৪ সালের দানবীয় আইন নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরের উপরে প্রয়োগ করা হয়েছিল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কৃষকরা যে লড়াই করেছেন, তা এখন ইতিহাস৷ কৃষকদের উপরে গুলি চলেছে, অত্যাচার হয়েছে, প্রচুর কৃষক মারা গিয়েছেন৷' এটুকু বলার পরই সিপিএম সাংসদ রামচন্দ্র ডোম উত্তেজিত হয়ে প্রতিবাদ করতে থাকেন৷ সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়েন তৃণমূল সাংসদরা৷ চিত্কার শুরু হয়ে যায়৷ সিপিএম ও তৃণমূল সাংসদরা তখন সমানতালে চেঁচাচ্ছেন৷ সবার উপরে ছিল কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলা৷ তিনি বলতে থাকেন, 'আমরা এ সব অ্যালাও করব না৷' জয়রাম দ্রুত যান তাঁদের শান্ত করতে৷ এর মধ্যে কাকলি ঘোষদস্তিদারকে বলতে শোনা যায়, 'মার্ডারারস৷'
সভা শান্ত হলে সুদীপ বলেন, 'ঈশ্বর ওদের ক্ষমা করুন৷' আবার সিপিএমের হইচই শুরু হয়৷ এ বার বাসুদেব আচারিয়া নিজের জায়গায় উঠে দাঁড়ান৷ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তখন বলেন, 'বোস, বাসু, বোস৷' তিনি এত জোরে কথা বলছিলেন যে হট্টগোলের মধ্যেও তাঁর কথা বোঝা যাচ্ছিল৷ আবার জয়রাম রমেশ তাঁর কাছে গিয়ে শান্ত হতে বলেন৷ সারদিনহা সমানে বলতে থাকেন, 'শান্ত হোন৷ আপনারা শান্ত হোন৷' সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত তৃণমূল সাংসদদের বলেন, 'বসুন, বলতে দিন৷' সুদীপবাবু তার পর বলেন, 'ওদের কষ্টটা হল, কেউই এ বার আর জিতে আসতে পারবেন না৷' ঠিক পিছন থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সিপিএমের নেতাকে বলেন, এ বার বাঁশি বাজাতে হবে৷ এর পর সুদীপের বাকি ভাষণের সময় আর কোনও গণ্ডগোল হয়নি৷
কিন্ত্ত গণ্ডগোল আবার শুরু হয় বাসুদেব আচারিয়া বলতে ওঠার সময়৷ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ জনা পাঁচেক তৃণমূল সাংসদ উঠে দাঁড়িয়ে হইহল্লা শুরু করে দেন৷ কল্যাণবাবু এ বার হিন্দিতে বলেন, 'বুদ্ধ কাঁহা হ্যায়?' এতক্ষণ বাংলায় কথা চলছিল বলে সম্ভবত কেরলের সিপিএম সাংসদরা ভাল করে বুঝতে পারেননি৷ হিন্দিতে এই কথা শোনার পর তাঁরা হইহই করে জায়গা ছেড়ে নেমে আসেন৷ তৃণমূল সাংসদরাও নেমে পড়েন৷ মাঝখানে একসারি আসন৷ একদিকে সিপিএম ও বাম সাংসদরা ও অন্যদিকে তৃণমূল সাংসদরা উত্তেজিত হয়ে চিত্কার করছেন৷ একে অন্যের দিকে আঙুল তুলে শাসানির ভঙ্গিতে কথা বলছেন৷ প্রায় হাতাহাতি হওয়ার উপক্রম৷ মন্ত্রী নারায়ণস্বামী গিয়ে সিপিএম সাংসদদের সামলাচ্ছেন৷ জয়রাম, লালুপ্রসাদ, জগদম্বিকা পাল তৃণমূল সাংসদদের শান্ত করার কাজে ব্যস্ত৷ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে টানছেন৷ সারদিনহা তখন বললেন, 'দয়া করে, সভার মর্যাদা রক্ষা করুন৷' অবস্থা একটু শান্ত হওয়ার পর সিপিআই সাংসদ প্রবোধ পান্ডার সঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তর্কাতর্কি শুরু হয়৷ আবার প্রচণ্ড চিত্কার৷ তার মধ্যে সারদিনহা বললেন, 'অত্যন্ত খারাপ৷ আপনারা যদি নিজেদের বিরোধ মেটাতে চান তো অন্য জায়গায় গিয়ে মেটান৷'
পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে বাসুদেব আচারিয়া বলেন, 'কখনও ভাবিনি এমন পরিস্থিতি আসবে৷' তার পর তিনি বলতে শুরু করেন৷ ভাষণের মধ্যে এক জায়গায় সৌগত রায় বলেন, নন্দীগ্রামে কী হয়েছিল? বাসুদেবের জবাব, নন্দীগ্রামে এক ইঞ্চি জমিও নেওয়া হয়নি৷ সৌগত রায় বলেন, ঘোষণাতেই তো গন্ডগোল হয়েছিল৷ বাসুদেব আচারিয়ার জবাব, 'ঘোষণা করা আর অধিগ্রহণের মধ্যে অনেক ফারাক আছে৷' এর পর আবার হট্টগোল৷ পরে বাসুদেববাবু বলেন, 'কী করব! ওদের প্রশিক্ষণ দরকার৷ ওরিয়েন্টেশন কোর্স করা দরকার৷' গণ্ডগোল যখন হচ্ছে, তখন সারদিনহা বারবার করে বলতে থাকেন, 'এ সব কিছুই নথিভুক্ত হবে না৷ এটা অত্যন্ত খারাপ রুচির পরিচয়৷ আপনারা এই সভাকে উপহাস করছেন৷'
কিছুদিন আগেও যশবন্ত সিংয়ের দিকে আঙুল তুলে চিত্কার করতে করতে ছুটে গিয়েছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তার পর তাঁকে দুঃখপ্রকাশও করতে হয়েছিল৷ তখন বিরোধী নেত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছিলেন, প্রথমবারের সাংসদ দুঃখপ্রকাশ করেছেন বলে বিজেপি বিষয়টাকে 'ক্লোজড চ্যাপ্টার' বলে মনে করছে৷ তার কিছুদিনের মধ্যেই ফের একই ঘটনা৷
No comments:
Post a Comment