মোদির মাদারী খেলঃ Saradindu Biswas
আমি বিশ্বাস করি রিজার্ভ ব্যাংকের কাছে ন্যুনতম এই তথ্য আছে যে এ পর্যন্ত সরকারী ছাপাখানাতে কত ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট ছাপানো হয়েছে। এই সমস্ত টাকাই রাষ্ট্রের সম্পদ। এর যে পরিমাণ টাকা দেশের বাজারে, মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগছে সবটাই সাদা। এমনকি যে টাকাটি বাজারে না খাটিয়ে সাধারণ মানুষ নানা কারণে জমা করে রেখেছে সেটিও অবৈধ নয়। যে পরিমাণে টাকা বিদেশের ব্যাংকে বিভিন্ন নামে জমা হয়ে আছে সে টাকাও ভারতের সম্পদ। তার একটি ঘষা পয়সাও জাল নয়।
কথা হল আয়ের সাথে সংগতিহীন ভাবে যারা টকা জমিয়ে রেখেছে, সরকারকে ট্যাক্স দিচ্ছেনা সেই বিপুল পরিমাণের টাকা কালো। এই টাকাকে যে ভাবেই হোক সরকার বিশেষ পদক্ষেপ নিয়ে সরকারী কোষাগারে ফেরত আনা সমর্থন যোগ্য। তা সে সার্জিকাল অপারেশন করে হোক আর বিশেষ বাহিনী গঠন করে হোক রাষ্ট্রের সম্পদ সরকারী কোষাগারে ফিরিয়ে আনা রাজধর্ম।
মোদি কি সেটা করলেন?
একেবারে না।
যে বিপুল পরিমাণের সাধারণ মানুষ, প্রান্তিক চাষি, ঠিকা শ্রমিক, মহিলা গৃহকর্মী একটু মাথাগোঁজার ঠাই বানানোর জন্য, মেয়ের বিয়ের জন্য তিলেতিলে টাকা জমা করে রেখেছেন, যে বিপুল পরিমাণের মানুষ এখনো ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারেনি তাঁরা এখন কী করবেন?
কালোটাকা ধরার নামে এতো কালোবাজারিদের সুযোগ করে দিলেন মোদি ভাই।
মোদির ঘোষণার সাথে সাথে শুরু হয়ে গেছে বাজারী খেল। যারা ৫০০ টাকা ভাঙ্গিয়ে বাজার করতে চেয়েছিলেন তাদের খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। ৫০০টাকার নোট দিলে ১কিলো মুরগীর মাংস পাওয়া গেছে। সব থেকে বিপদে পড়েছেন সেই মানুষটি যার এখনো কোন ব্যাঙ্ক একাউন্ট নেই।
৫০০ আর ১০০০ টাকার পরিবর্তে যে ২০০০ টাকার নোট বাজারে আসবে তার জালি কারবার বন্ধ হবে তো মোদি ভাই?
ঐ টাকায় কি গান্ধীর জল ছাপ থাকবে (যদিও আমি মনে করি ভারতীয় টাকায় গান্ধীর ছবি থাকা উচিৎ নয়, অশোকস্তম্ভ থাকা উচিৎ) না কি গোলওয়ার্কার বা শ্যামাপ্রসাদ ঢুকবে?
এই মাদারী খেল বন্ধ করুন মোদি সাহেব। কালোটাকা ধরতে গেলে মূরোদ চাই। একটি নিকম্মা ধাপ্পাবাজের দ্বারা সেই রাজধর্ম পালন সম্ভব নয়।
No comments:
Post a Comment