BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Friday, April 17, 2015

ভারত কেন বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিচ্ছে বি.ডি.রহমতউল্লাহ্

ভারত কেন বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিচ্ছে

বি.ডি.রহমতউল্লাহ্
dis 2
বিদ্যুৎ ঘাটতির দেশ ভারত থেকে বাংলাদেশ বেশি দামে আরো বিদ্যুৎ আনবে। জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের (একনেকনির্বাহী কমিটি তার শেষ সভায় এর জন্য ১৬০০ কোটি টাকা অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে ভারতের বহরমপুর থেকে বাংলাদেশের ভেড়ামাড়ায় গ্রীড নির্মাণ খাতে এবং ভেড়ামাড়া-ঈশ্বরদী ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মানের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ লাইন দিয়ে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিদ্যুতের ট্যারিফও ধরা হয়েছে অনেক বেশী। বাংলাদেশ-ভারত বিদ্যুৎ ক্রয়-বিক্রয়ে ট্যারিফ নির্ধারনে বাংলাদেশের কোন ভূমিকা নেই ।
এ বিষয়ে ২০১০-এর ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ভারত-বাংলাদেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে ঘোষিত কিছু সিদ্ধান্ত উল্লেখযোগ্য। বৈঠক চলাকালে সংবাদ ব্রিফিংয়ে তৎকালীন বিদ্যুৎ সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন,বাংলাদেশ-ভারত গ্রীড লাইন স্থাপন প্রকল্প চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় মোট ১৩০ কিলোমিটার (বাংলাদেশে ৮৫ ও ভারতে ৪৫ কিলোমিটারলাইন স্থাপন ও বাংলাদেশে একটি গ্রীড উপকেন্দ্রও স্থাপন করতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশের মোট ব্যয় হবে প্রায় এগারোশ কোটি টাকা। সরকার ও পাওয়ার গ্রীড কোম্পানী অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)যৌথভাবে এই ব্যয় বহন করবে। গ্রীড লাইন ব্যবহারের জন্য হুইলিং চার্জ দিতে হবে। এ প্রকল্পটি ভেড়ামাড়ার ষোলদাগে নির্মিতব্য গ্রীড ও বাংলাদেশ-ভারত ১৩০ কিলোমিটার লাইনের বিষয়ে বলা হলেও এটিই হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত বিদ্যুৎ বাণিজ্যের মৌলিক দৃষ্টি ভঙ্গি। ওই সভায় বিদ্যুৎ সচিব আরো জানানভারত থেকে আনা বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করবে ভারতের এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। অথচ আন্তর্জাতিক বিদ্যুৎ বাণিজ্যে একপক্ষীয় দর নির্ধারন অযৌক্তিক এবং একপক্ষীয়। হুইলিং চার্জসহ প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের সম্ভাব্য দাম সাড়ে তিন টাকার মতো হতে পারে বলে ঘোষণা দেয়া হয় যা গ্রাহক প্রান্তে শেষ পর্যন্ত পাঁচ টাকা হতে পারে। সভায় ভারতের বিদ্যুৎ সচিব জানানভারতে এখন গ্রাহক বিদ্যুৎ পায় প্রতি ইউনিট সাড়ে তিন টাকা দামে। বাংলাদেশে তখন বিদ্যুতের গড় দাম ছিলো প্রতি ইউনিট চার টাকার মতো। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সচিব বলেনভারতের বিভিন্ন বেসরকারী বিদ্যুৎ কোম্পানী যথা টাটাআদানি,ল্যাংকোবিড়লা ইত্যাদি এই লাইন দিয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে।
যৌথ সংবাদ ব্রিফিংয়ে ভারতের বিদ্যুৎ সচিব বলেনদ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার পথে ভারত বেশ কিছুদূর এগিয়েছে। আরও অনেক দূর যেতে হবে। বাংলাদেশকে এগোতে হবে বেশ কিছুটা দ্রতলয়ে। এ ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগীতা করতে ভারত প্রস্তুত। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সচিব বলেনভারতে সঙ্গে বিদ্যুৎ খাতে এসব কার্যক্রম কোনোটাই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হচ্ছে না। সব কাজের ভিত্তি হচ্ছে সহযোগিতা।
প্রধানমন্ত্রী গত ৯ এপ্রিল বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রনালয়ে সভা করেন। সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন,'আমরা নিজেরা বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে যদি বিদ্যুৎ আমদানি করে চালাতে পারিতাহলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ব্যয়,পরিচালন ও সংরক্ষণ ব্যয় এবং নানারকম ঝক্কি-ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকা যাবে। সে সব চিন্তা ভাবনা করে আমরা ভারত থেকে আরও ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার কথা ভাবছি'। প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্যে ধরে নেয়া যায় যেএটি বর্তমানে রাষ্ট্রীয় মূল নীতির আওতার অর্ন্তভূক্ত। জ্বালানী ও বিদ্যুৎ নিরাপত্তা তখনই বিঘ্নিত হয়যখন জ্বালানী ও বিদ্যুৎ সরবরাহ অনিশ্চিত হয়ে উঠেঘাটতিনিম্নমানঅনিরাপদট্যারিফ বেশী হওয়া কিংবা ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার বেশী।
জ্বালানীর যে সংকট দেখানো হচ্ছে তা ইচ্ছে করে তৈরী করা হয়েছে। আমাদের দেশে জ্বালানীর কোন সংকট নেই। একটি চক্র ইচ্ছে করে এ জ্বালানী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে এবং বড়ভাবে তা প্রচার-প্রচারণা করছে। বর্তমানে ব্যবহৃত প্রায় সবগুলো গ্যাস কূপের সংরক্ষণ ও ওয়ার্ক ওভার কাজ করে এবং একই সাথে নতুন কূপ খনন করে কয়েকশ টিসিএফ প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করা যেতো। এজন্য সর্বাধিক সময় প্রয়োজন ছিলো ৩ থেকে ৪ বছর। বর্তমান ব্যবহারের পরিমান ও ধরন অনুযায়ী আমাদের এক বছরের গ্যাসের চাহিদা মাত্র এক টিসিএফ। এছাড়াও বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানীর প্রাপ্ততা বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় অগ্রগামী। প্রশ্ন হচ্ছে বিদ্যুত ঘাটতির দেশ ভারত কেন বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিচ্ছে?
ভারত প্রায় ১২৪ কোটি জনসংখ্যার ৩৩ লাখ বর্গ কিলোমিটারের দেশ। আর জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয়। ভারতের বর্তমানে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২ লাখ ৫৫ হাজার মেগাওয়াট। এছাড়াও আছে ৪০ হাজার মেগাওয়াটের ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ। মোট এই ২ লাখ ৯৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসে নবায়নযোগ্য জ্বালানী থেকে। এ হলো স্থাপিত ক্ষমতা। কিন্তু মূল প্রশ্নটি হলো উৎপাদন সামর্থ্য সক্ষমতা কতো মেগাওয়াটভারতের বিদ্যুৎ চাহিদা হলো ২ লাখ মেগাওয়াট। আর উৎপাদন সক্ষমতা হলো ১ লাখ ৫০ হাজার মেগাওয়াট। তাহলে স্পষ্টতই ঘাটতি হলো ৫০ হাজার মেগাওয়াটের ঘাটতির শতকরা হার হলো ২৫ শতাংশ। ভারত বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে ৩য় বৃহৎ দেশ। ভারতের জিডিপি বার্ষিক ২ দশমিক ০৪৭ ট্রিলিয়ন ইউএস ডলার। যেখানে ভারতের জনপ্রতি বার্ষিক বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমান ৯২০ কিলোওয়াট ঘন্টাঅথচ বিশ্বের গড় হচ্ছে ২৬০০ কিলোওয়াট ঘন্টা আর ইইউ রাষ্ট্রসমূহের গড় হচ্ছে ৬২০০ কিলোওয়াট ঘন্টা। ভারতে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগই পায়নি ৩০ কোটি মানুষযা শতকরা হিসেবে দাঁড়ায় ২৪ শতাংশআর যে ৯৪ কোটি মানুষ বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছেতাঁদের মধ্যে অনিরাপদঅনির্ভরশীলনিম্নমানসম্পন্নঅস্থায়ীস্বাস্থ্য ও বায়ু দূষণকারী বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা হলো ১৫ কোটি। বিশ্ব স¦াস্থ্য সংস্থার এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যেভারতে প্রায় ৮০ কোটি মানুষই বিদ্যুৎ প্রাপ্তির স্বল্পতার জন্য তাঁর ব্যবহৃত জ্বালানীর অধিকাংশই ব্যবহার করে বায়ু দূষনকারী ও জীববৈচিত্র্য বিনাশী ফুয়েল যার মধ্যে রয়েছে ফুয়েল উড,কৃষি বর্জ্জবায়ো কেক ইত্যাদি। এগুলো বায়ুতে প্রচন্ড বিষযুক্ত ধোঁয়া উদগীরন করে। বিশ্ব স¦াস্থ্য সংস্থার ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে,ভারতে প্রতি বছর শুধু জ্বালানীর দূষণেই ৩ থেকে ৪ লাখ মানুষ মারা যায়। আর অসুস্থ হয় অসংখ্য মানুষ। ভারতের বিদ্যুতের অবস্থা যেখানে ২ লাখ ৯৫ হাজার মেগাওয়াটসেখানে উৎপাদন সামর্থ হচ্ছে মাত্র ১ লাখ ৫০ হাজার মেগাওয়াট। অথচ মোট চাহিদা হচ্ছে ২ লাখ মেগাওয়াট।
ভুটানের জ্বালানী ও বিদ্যুৎ খাত
ভুটান প্রায় ৮ লাখ অধ্যুষিত মাত্র ৩৮ হাজার বর্গ কিলোমিটারের দেশ,ভুটান চীন ও ভারত পরিবেষ্টিত। ভুটানের ড্রুক গ্রীন নামক রিসার্চ সংস্থার পর্যবেক্ষন অনুযায়ীভুটানের জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাব্য কারিগরী পরিমান হচ্ছে ৩০ হাজার মেগাওয়াট। এর মধ্যে কারিগরী ও আর্থিকভাবে সম্ভাব্য পরিমান হচ্ছে ২৪ হাজার মেগাওয়াট।
এতো সহজপ্রাপ্যসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানী থাকা সত্ত্বেও ভুটানের ৬০ শতাংশ মানুষ অর্থাৎ ৮ লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র সাড়ে চার লাখ মানুষ এ পর্যন্ত বিদ্যুৎ পেয়েছে। কারণ পাশেই বিদ্যুত ঘাটতির ভারতের অবস্থান। ভারত পররাষ্ট্র নীতিসহ সামগ্রিকভাবে ভুটানের উপরে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। বর্তমানে ভুটানে প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ভারত নির্মান করছে।
এ দেড় হাজার মেগাওয়াটের প্রায় ৯৫ শতাংশ বিদ্যুতই ভারতে সরবরাহের জন্য ভারত থেকে প্রাপ্ত ঋণ ও গ্রান্টের অর্থে নির্মান করা হয়েছে। এ বিদ্যুৎ ভারতের পশ্চিম বঙ্গঝাড়খন্ডবিহারউড়িষ্যা,সিকিমনাগপুরএলাহাবাদ অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। এজন্য ভারত ভুটানকে ৬০ শতাংশ অনুদান ও ৫ শতাংশ হারে সরল সুদে কিছু কঠিন শর্তে ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে। শর্তের অধীনে আছে ভারত থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শুধু মালামালই নয়এর যাবতীয় প্ল্যানডিজাইনপরামর্শক,প্রকৌশলী এবং জনবল ভারত থেকে আনতে হবে। এছাড়া ভারতের অনুমতি ছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাননক্সা বা ডিজাইনের কোন পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা যাবে না ।
ভারতে সরবরাহকৃত বিদ্যুতের মূল্য ভুটান নয়অবশ্যই ভারত কর্তৃক নির্ধারিত হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সরবরাহকৃত বিদ্যুৎ ইতোমধ্যেই ভারত নির্ধারণ করেছে। ভারতে সরবরাহকৃত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য ৩ দশমিক ২ ইউএস সেন্টস ধরা হয়েছে। যেখানে ভুটান একই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে তার নিজস্ব বিদ্যুৎ ভুটানবাসীর জন্য নির্ধারন করেছে ৫ দশমিক ২ ইউএস সেন্টস। এছাড়া ভুটান যদি চায় অন্য দেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে তাও সম্ভব নয়।
নেপালের জ্বালানী ও বিদ্যুৎ খাত
নেপাল প্রায় ৩ কোটি জনঅধ্যুষিত ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৮০ বর্গ কিলোমিটারের একটি দেশ। নেপাল চীনের পার্বত্য অংশ বাদ দিলে বেশীরভাগ এলাকাই ভারত পরিবেষ্টিত। নেপালের সরকারী বিদ্যুৎ সংস্থা এনই-র পর্যবেক্ষন অনুযায়ী নেপালের জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা হচ্ছে প্রায় ৮৩ হাজার মেগাওয়াটযার মধ্যে কারিগরী ও আর্থিকভাবে সম্ভাব্য পরিমান ৪৩ হাজার মেগাওয়াট। নেপাল ৪ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে এ পর্যন্ত মাত্র ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। সঙ্গত কারণেই কাঠমুন্ডুসহ সারা নেপালে দৈনিক প্রায় ২০ ঘন্টা লোড শেড থাকে ।
এতো সহজপ্রাপ্যসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানী থাকা স্বত্ত্বেও নেপালের ৫৪ শতাংশ মানুষ অর্থাৎ ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ এ পর্যন্ত বিদ্যুৎ পেয়েছে। আর যারাও বিদ্যুৎ পাচ্ছে তারাও তা মাত্র ৪ ঘন্টা ব্যবহার করতে পারছে। নেপাল তার সম্ভাব্য জলবিদ্যুতের সিংহভাগ ভারত নিয়ে নেয়। নেপালের প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ ছাড়া অর্থাৎ নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি (এনইএ)-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী ভবিষ্যতে নেপালের জন্য সর্বোচ্চ চাহিদা ১০ হাজার মেগাওয়াট রেখে বাকী সম্ভাব্য ৭০ হাজার মেগাওয়াট ভারত নিয়ে থাকে নেপালের সাথে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির কারণে। এসব নানা কারণে এবং সিভিল সোসাইটিবামপন্থীসহ প্রগতিশীল গোষ্ঠীর প্রচন্ড বিরোধিতার মুখে ভারতের সাথে চুক্তিগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে না। নেপাল তার বিদ্যুৎ খাতকে উন্নত করতে এডিবিবিশ্ব ব্যাঙ্কসহ বিভিন্ন আর্থিক সংস্থা ও দেশের সাথে বহু দেন দরবার করলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
ভারতে তার মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের (২ লাখ ৯৫ হাজার মেঃওঃ১ লাখ ৫০ হাজার মেঃওয়াটই উৎপাদিত হয় কয়লা থেকে যা শতকরা হিসেবে দাঁড়ায় প্রায় ৫১ শতাংশ। বিশ্বে যেসব দেশ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বসিয়েছেসেসব দেশ বৈশ্বিক বায়ু দূষণজীববৈচিত্র্য ধ্বংসকরন,কার্বন উদগীরনSO2,NO2জলবায়ুর উষ্ণতা বৃদ্ধিসহ পানি দূষণের জন্য এরাই প্রধানত দায়ী। আবার বিশ্বে মোট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের শতকরা মোট ৩০ শতাংশই ভারতচীন ও যুক্তরাষ্ট্র উৎপাদন করছে। ইতোমধ্যেই বিশ্বের পরিবেশবাদী সংস্থাগুলো এ ৩টি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রথাগত পদ্ধতিতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পরিহার করে 'ক্লীন কোল' পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য চাপ দিচ্ছে। ২০১০ সালে কোপেনহেগেনে জলবায়ুর সম্মেলনসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পরিবেশবাদীদের আন্দোলনের তীব্রতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ভারতকে অবশ্যই তার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পরিহার করতে হবে। আর এ কারণেই পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে ভারতকে বিদ্যুৎ যোগাড় করতে হবে। নেপাল এবং ভুটান থেকে ১ লাখ ২০ হাজার মেগাওয়াট প্রাপ্তির বিষয়ে ভারত নিশ্চিত করেছে।
বর্তমানে ভারতের বিদ্যুৎ ঘাটতি হচ্ছে ৫০ হাজার মেগাওয়াট। আমরা জানি আগামী ২০৩০ সালে ভারতের বিদ্যুৎ চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৯ লাখ ৫০ হাজার মেগাওয়াট। কাজেই ২০৩০ সালে ভারতের বিদ্যুৎ ঘাটতি দাঁড়াবে প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার মেগাওয়াট। আর নেপাল ও ভুটানের মোট সম্ভাব্য জলবিদ্যুতের পরিমান ১ লাখ ২০ হাজার মেগাওয়াট। ভারতের নিজস্ব সম্ভাবনাময় অব্যবহৃত জলবিদ্যুতের পরিমান প্রায় ৩ লাখ মেগাওয়াট। নেপাল ও ভুটানের ১ লাখ ২০ হাজার ও অন্যান্য সম্ভাব্য পন্থায় আরও ১ লাখ মেগাওয়াট যোগ করলে দাঁড়ায় মোট ৫ লাখ ২০ হাজার মেগাওয়াট। তখনো ভারতের ঘাটতি থেকে যায় প্রায় ২ লাখ মেগাওয়াট। মিয়ানমারের সম্ভাব্য জলবিদ্যুতের পরিমান প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার মেগাওয়াট। সুতরাং মিয়ানমারের এই বিদ্যুৎ আনার কথা চিন্তা করছে ভারত।
আগেই বলা হয়েছেভারত একটি প্রচন্ড বিদ্যুৎ ও জ্বালানী ঘাটতির দেশ। বিদ্যুৎ ও জ্বালানী ঘাটতির দেশ হওয়া স্বত্ত্বেও ভারত বাংলাদেশকে কোন স্বার্থে ভেড়ামারা দিয়ে ৫০০ মেগাওয়াট দেবার পরও আগরতলার পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কুমিল্লায় আরও ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে যাচ্ছেভারত অচিরেই বাংলাদেশের দিনাজপুর বা তেতুলিয়া দিয়ে আরও ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তাব দেবে। কারণ হলো,ভারত যখন নেপালভুটান ও মিয়ানমার থেকে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ নেবেতখন ভারতকে এ বিদ্যুৎ নিজের দেশে নিতে গেলে বাংলাদেশের গ্রীডকেই ব্যবহার করতে হবে। বাংলাদেশ তার নিজস্ব অর্থে নির্মিত এ গ্রীড ব্যবহার করে ভারত বাংলাদেশের চারদিকে পাটনা,গয়াকলকাতাআসামদিনাজপুর (ভারত), হাওড়াজামশেদপুর সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ দিতে পারবে। নতুবা ভারতকে এ জলবিদ্যুৎ নিতে যে গ্রীড নতুন করে বানাতে হবে তা শুধু ব্যয় বহুলই হবে নাএ গ্রীড এতো দীর্ঘ হবে যে তাতে সিস্টেমলসসহ ভল্টেজ ড্রপ হবে। আর আর্থিক ও কারিগরী দিক থেকে অগ্রহনীয় ও সম্পূর্ণ বাতিলযোগ্য হবে।
ভারত এ কারণেই ইতোমধ্যে বাংলাদেশের ব্যয় করা কোটি কোটি টাকায় নির্মিত এবং ভবিষ্যতে নির্মাণ করা হবে এমন গ্রীড দিয়েএ দেশকে করিডোর বানিয়ে বিদ্যুৎ নিতে চায়। আর এতে ভারত এক অংশ থেকে আরেক অংশকে বিদ্যুৎ সংযোগে যুক্ত করতে আগ্রহী। কিন্তু বাংলাদেশ এটা বুঝেও বলছেবাংলাদেশের স্বার্থেই বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে।।

No comments:

LinkWithin

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...