আল্লা,ম্যাঘ দে
আল্লা ,পানি দে
আল্লা,অন্ধ যেজন,তাহাদের চক্ষু
ফুটাইয়া দে
শারদোত্সবে বসন্তের আগমণী আমি দেখেছি নন্দিনীকে
কলরবে উথাল পাথাল বৃষ্টিতে, শুনেছি তাঁর মধু কন্ঠস্বর
পলাশ বিশ্বাস
Souvik Chakrabarty
adav pure vc er baktobbo sunun.........
কলরবে উথাল পাথাল বৃষ্টিতে, শুনেছি তাঁর মধু কন্ঠস্বর
আরব বসন্তের হাল হকীকতে ওয়েল ওয়াকিফ হওয়ার পর বসন্ত বলতে বসন্তের মহামারিকেই ভয় পাই।বাংলার কৃষি বিদ্রোহকে সত্তর দশকে চিন আখ্যা দিয়েছিল,বসন্তের বজ্রনির্ঘোষ,সেই গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরার পরিকল্পনায় আজও থমকে আছে ভুমি সংস্কার,যার সুচনা দু শো বছর আগে হরিচাঁদ ঠাকুরের আসলি নবজাগরণে,ব্রাহ্মণ্যবাদের বজ্র আটুনি থেকে বৌদ্ধময় ভারতের জ্বল জ্বল প্রতিচ্ছবি যেন, আদিবাসী কৃষক বিদ্রোহ সারি সারি ঔপনিবেশিক উত্পাদনপ্রণালির গন্ডি পেরিয়ে অধুনা মুক্তবাজারেও সেই দাবিতে সমানে সোচ্চার কৃষিজীবী জাতপাতে,বর্ণ বৈষম্যে খন্ডিত বিখন্ডিত লোক গ্রাণীণ ভারত।
জাতি ব্যবস্থা ও বর্ণবৈষম্যের রাজনীতি ক্ষমতা দখল লাড়াইয়ের মধ্যেও এপার বাংলা ওপার বাংলা পরবাসী উদ্বাসুত বাংলার ভূগোল ইতিহাসে যে সহজাত প্রগতিবাদ,সহঅস্তিত্ব ও মনুষত্বের জয়গান,সহজিযা বাউল বৈষ্ণব জীবন যাপন ভোগ ষাঁড় সংস্কৃতিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে,বাঙালি ও বাংলার সেই উদ্বুদ্ধ প্রবুদ্ধ ঐতিহ্যেই বসবাস বাঙালি জাতিসত্তার।
বর্ণ জাতি ভেদ ডিঙিয়ে ঔপনিবেশিক কাল থেকে সেই শুরু,তেভাগা খাদ্য আন্দোলন নক্সাল জমানায সেই সত্তর দশক পর্যন্ত জাত বজ্জাতির বিরুদ্ধে যা বঙ্গীয মানসবিবেক,তার প্রতিচ্ছবি দেখলাম কলকাতার জলমগ্ন রাজপথে প্রবল বৃষ্টিতে ভিজে থাকা লিঙ্গোর্ধ শ্রেণীচেতস যুব মুখে মুখে।
মিছিলের শহরে মিছিলের ফিরে আসার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বোধ হয় এটাই।
বিদেশি কোনো তত্ব দিয়ে এই ছোট্ট মোডকে চিন্হিত না করে সভাষ মুখোপধ্যায়ের পদাতিকে নবান্নের সুগন্ধে চাপানি মার্কি জৌলুস থেকে এক্কেবারে আলাদা এই মিছিলের অরাজনৈতিক মুখ,যা ক্ষমতার চোখে এমনকি অন্ধ ভক্তবৃন্দের চোখে বহিরাগতের রাজনৈতিক আস্ফালন।
আল্লা,ম্যাঘ দে
আল্লা ,পানি দে
আল্লা,অন্ধ যেজন,তাহাদের চক্ষু
ফুটাইয়া দে
চক্ষুষ্মান চক্ষুষ্মতী বাঙালি বাঙালিনীর বড়ই আকাল।
দশ হাতে তশটি রত্নপাথর,তাবিজ ধাগা রুদ্রাক্ষ ভুষিত শপিং মলে যে বাঙালির অধিষ্ঠান,টিভি তেখ অন্দরমহলে যার জ্যোতিষ বসতি,বিপদে রক্ষার জন্য তেত্রিশ কোটি দেব দেবি ছাড়াও রোজই নূতন দেব দেবি,অবতার, বাবা,তান্তরিকে যার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন,সহবাসে যার জাপানি তৈল চাইই,উত্পাদণ প্রণালির মহাশ্মশানে,জনপদের গোরস্থানে,গণসংহার কালে অন্ধকারের শাসনে এই মগের মুলুকে চক্ষুষ্মানরা সবাই একযোগে নিরুদ্দেশে।
তাঁরা যেন এই প্রবলে বৃষ্টিপাতে ফিরে এল আবার।
ভেবেছিলাম,লড়াকু সেদিনের সেই জননেত্রী পরবল বডষ্টিতে ক্ষমতার সব সমীকরণ উলটে পালটে দিয়ে উথাল জনপথে এসে দাঁড়িয়ে বলবেন,কি সমস্যা,এই ত আমি তোমাদের মুখ্যমন্ত্রী।
ঔ পথের ঠিকানা ভুলেছেন দিদি,পথি একন তাঁকে পথ দেখাবে।
কেমন পথ দেখছেন তিনিঃ
যাদবপুরকে জবাব দিতে কাল পাল্টা মিছিল তৃণমূলের
Last Updated: Sunday, September 21, 2014 - 11:29
27
SHARES
কলকতা: যাদবপুরে ছাত্রমিছিলের পাল্টা মিছিল এবার তৃণমূলের। সোমবার রাজভবন অভিযান করবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, যাদবপুরে নৈরাজ্য চলছে। সেই বক্তব্যই রাজ্যপালের কাছে জানাবে তারা।
অন্যদিকে সোমবার দুপুরে মিছিল করবেন তৃণমূল সমর্থক শিক্ষাকর্মীরা। দুপুর একটায় যাদবপুর থেকে শুরু হবে মিছিল। কোনও দলীয় পতাকা ছাড়াই গোলপার্ক পর্যন্ত যাবে মিছিল।
রাজ্যপালের অনুরোধে সোমবার দুপুর পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত রেখেছেন যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীরা। তবে, উপাচার্যকে সরানো না হলে আন্দোলন যে আরও বৃহত্তর আকার নেবে তাও রাজ্যপালকে জানিয়ে এলেন আট সদস্যের প্রতিনিধিদল।
ছাত্রদের দাবি, রাজ্যপাল কথা দিয়েছেন তাঁদের সমস্ত বক্তব্য বিবেচনা করবেন। তবে, আন্দোলন স্থগিত থাকলেও ক্লাস, বয়কটের সিদ্ধান্তে কিন্তু এখনও অনড় ছাত্রছাত্রীরা।নন্দন থেকে রাজভবন। ঝমঝম বৃষ্টি যেন জনসুনামি হয়ে আছড়ে পড়ল রাজপথে। স্লোগান আর গানে এ যেন এক অন্য মহানগর। বৃষ্টির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে মিছিল। চেনা-অচেনার গণ্ডি ছেড়ে রাজপথের ঠিকানা যেন তখন কেয়ার অফ মেয়ো রোড।
লক্ষ্য ছিল রাজভবন। কিন্তু, মিছিল আটকে দেওয়া হল মেয়ো রোডে। পুলিসের ব্যারিকেডের সামনেই রাস্তায় বসে পড়লেন ছাত্রছাত্রীরা। আরও তীব্র হল পুলিস-বিরোধী স্লোগান।
গত কয়েকদিন ধরেই ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি সামাজিক আলাপচারিতার ক্ষেত্রগুলো মুখর হয়ে উঠেছিল শনিবার দুপুরের এই বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেওয়ার আহ্বানে৷ নানা পোস্টার, ছবি, কার্টুন, ছড়া আর কবিতা দিয়ে শানিয়ে তোলা হচ্ছিল প্রতিবাদকে৷
সবকটি পোস্টেই ছিল যাদবপুরের আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের হ্যাশট্যাগ– হোক কলরব! শনিবার সকাল থেকে প্রায় একটানা বৃষ্টি সত্ত্বেও দুপুর দুটো নাগাদ ভরে উঠতে থাকে রবীন্দ্রসদন-নন্দন চত্বর৷ রাস্তা জুড়ে ছাত্রছাত্রীদের ঢল এবং তাদের সমবেত কলরব আদতেই মনে করিয়ে দিচ্ছিল, এটা আর পাঁচটা বাঁধা গতের বিক্ষোভ নয়, বরং এক অন্য ধারার প্রতিবাদ জন্ম নিচ্ছে এই শহরে৷ যেখানে স্লোগান বাঁধা হচ্ছে – লাঠির বদলে গানের সুর, দেখিয়ে দিচ্ছে যাদবপুর৷ - See
খবর যেরকমঃকলকাতার রাজপথে প্রতিবাদী যৌবনের ঢল৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি তাণ্ডবের প্রতিবাদে এবং ঘটনার দায়ে অভিযুক্ত উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাল ছাত্র-ছাত্রীরা৷
কলকাতার ঐতিহ্যমণ্ডিত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একত্মা প্রকাশ করে শুক্রবার থেকে শিক্ষকদের একাংশ কোনো ধরনের প্রশাসনিক কাজ করবেন না বলে জানিয়েছেন।
এছাড়া কলকাতারা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
অপরদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পক্ষে রাস্তায় নেমেছেন কলকাতার বুদ্ধিজীবী মহলের একটি অংশ।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনা নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি সঠিকভাবে কাজ করছে না- এ অভিযোগে গত ২৮ আগস্ট থেকে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শেষ কবে এমন বিশাল ছাত্র-মিছিল দেখেছে কলকাতা, অনেকেই মনে করতে পারছেন না৷ সঠিকভাবে বলতে গেলে, এমন অরাজনৈতিক বিক্ষোভ মিছিলের নজির প্রতিবাদী এই শহরেও খুব বেশি নেই৷ ঘটনা যদিও যাদবপুরের কিন্তু অন্যান্য কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সহমর্মী ছাত্র-ছাত্রীরা দলে দলে এই বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন৷ অসমর্থিত সূত্রে তাঁদের সংখ্যাটা প্রায় ৩৬ হাজার৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন এখানকার প্রাক্তনীরাও৷ রয়েছেন প্রেসিডেন্সি কলেজের মতো বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা৷ অন্যদিকে নয়াদিল্লি-তে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরও কিছু নামী কলেজের ছাত্রছাত্রীরা ভৌগোলিক দূরত্বকে কার্যত অস্বীকার করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন দিল্লির রাজপথে৷
গত কয়েকদিন ধরেই ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি সামাজিক আলাপচারিতার ক্ষেত্রগুলো মুখর হয়ে উঠেছিল শনিবার দুপুরের এই বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেওয়ার আহ্বানে৷ নানা পোস্টার, ছবি, কার্টুন, ছড়া আর কবিতা দিয়ে শানিয়ে তোলা হচ্ছিল প্রতিবাদকে৷ সবকটি পোস্টেই ছিল যাদবপুরের আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের হ্যাশট্যাগ– হোক কলরব! শনিবার সকাল থেকে প্রায় একটানা বৃষ্টি সত্ত্বেও দুপুর দুটো নাগাদ ভরে উঠতে থাকে রবীন্দ্রসদন-নন্দন চত্বর৷ রাস্তা জুড়ে ছাত্রছাত্রীদের ঢল এবং তাদের সমবেত কলরব আদতেই মনে করিয়ে দিচ্ছিল, এটা আর পাঁচটা বাঁধা গতের বিক্ষোভ নয়, বরং এক অন্য ধারার প্রতিবাদ জন্ম নিচ্ছে এই শহরে৷ যেখানে স্লোগান বাঁধা হচ্ছে – লাঠির বদলে গানের সুর, দেখিয়ে দিচ্ছে যাদবপুর৷
রবীন্দ্রসদন থেকে বিক্ষোভ মিছিলের গন্তব্য ছিল রাজভবন৷ উদ্দেশ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারের ইস্তফার দাবি জানানো রাজ্যপালের কাছে৷ বিধি মোতাবেক, রাজ্যের যিনি রাজ্যপাল, তিনিই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য৷ যে কারণে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি ঘটনার পর পরই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং বিতর্কিত উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী-কে ডেকে পাঠিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট নিয়েছিলেন৷ কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের কোনও বক্তব্য যেহেতু জানার চেষ্টা হয়নি রাজ্যপাল বা সার্বিকভাবে প্রশাসনের তরফ থেকে, তাই বিক্ষোভের আওয়াজ রাজভবন পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷
প্রত্যাশিতভাবেই সেই বিক্ষোভ মিছিলকে রাজভবন পর্যন্ত যেতে দেওয়া হয়নি৷ বরং মাঝপথেই পুলিশের এক ত্রি-স্তর ব্যারিকেড সেই মিছিলের রাস্তা আটকে দাঁড়িয়েছিল৷ ঘটনাচক্রে এই জায়গার অদূরেই রয়েছে মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি, যে জননায়ক সারা বিশ্বকে অহিংস আন্দোলনের পথ দেখিয়েছিলেন৷ যাদবপুরের ছাত্র-ছাত্রীরাও আগাগোড়া অহিংস রাস্তাতেই এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন৷ বাধা পেয়ে মিছিল সটান বসে পড়ে রাস্তাতেই৷ শুরু হয় সমবেত স্লোগান, গান৷ আটজন ছাত্রছাত্রীর একটি দল পুলিশের পাহারায় দেখা করতে যান রাজ্যপালের সঙ্গে৷
রাজ্যপাল ত্রিপাঠি প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ছাত্র-প্রতিনিধিদের বক্তব্য শোনেন, উপাচার্যকে অপসারণের দাবির নৈতিকতা স্বীকার করেন, সমর্থন জানান এবং প্রতিশ্রুতি দেন, পুরো বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার৷ তবে এর জন্য রাজ্যপাল সোমবার পর্যন্ত সময় চেয়ে নিয়েছেন ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে৷ রাজ্যপাল ছাত্র-বিক্ষোভ সম্পর্কে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানাননি, বরং নৈতিক সমর্থন জানিয়েছেন, এই খবরেই উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন অবস্থানরত ছাত্র-ছাত্রীরা৷ সিদ্ধান্ত হয়, আন্দোলন চললেও অবস্থান তুলে নেওয়া হবে৷
এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য এখনও একইরকম অনুতাপহীন৷ শনিবার হঠাৎই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে উপাচার্যের পাতায় দেখা গিয়েছিল, তিনি সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন৷ বলেছেন “আই অ্যাম সরি”৷ কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই ওয়েব পাতাটি ব্লক করে দিয়ে জানানো হয়, কে বা কারা নাকি হ্যাকিং করে ওই কথা লিখে দিয়ে গেছে৷ এর পরই গোটা ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র দেখতে শুরু করেন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী৷ কিন্তু তিনি দেখতেও পান না, রাজ্যপাল যে সহানুভূতি দেখালেন ক্ষুব্ধ ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি, শুধু সেই বিচক্ষণতা দেখাতে পারলেই আজ এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হতো না তাঁকে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হত না এই অচলাবস্থা৷
যাদবপুরে পুলিশ লাঠি চালায়নি। যথেষ্ট সংবেদনশীলতার সঙ্গে ও ধৈর্য্য ধরেই কাজ করেছে তারা। আজ এক সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই দাবি করলেন পুলিশ কমিশনার সুরজিত কর পুরকায়স্থ। তাঁর দাবি, পুলিশ যা করেছে, আইন মেনেই করেছে। পুলিশ কমিশনার দাবি করেছেন, বহিরাগতদের কাছে মারাত্মক অস্ত্র ছিল, এমনই খবর ছিল পুলিশের কাছে।
ইন্টারন্যাশনাল লাইভ: ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনে উত্তাল ক্যাম্পাস।
বুধবার দুপুরে প্রতীকি অবরোধ পালন করেছেন এসএফআই (স্টুডেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া) সমর্থকরা। তাদের অভিযোগ, পুলিশের সঙ্গে তৃণমূলের বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের ওপর যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ধামাচাপা দিতেই এই কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ বাম ছাত্র সংগঠনের। তাঁদের পক্ষ থেকে ভিসি অভিজিত্ চক্রবর্তীর অবিলম্বে অপসারণ দাবি করা হয়েছে।
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের লাঠিচার্জের সময় হঠাৎ বিদ্যুত চলে যায়। ছাত্রদের অভিযোগ, রাতে সুপরিকল্পিত ভাবে লাইট নিভিয়ে দিয়ে হামলা চালায় পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার দুপুরে। অরবিন্দ ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। কর্মসমিতির বৈঠক চলাকালীনই অরবিন্দ ভবনের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, যাদবপুর শ্লীলতাহানি কাণ্ডে তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষ নয়।
নজিরবিহীন ঘটনার স্বাক্ষী রইল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ঘেরাওমুক্ত হতে ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকলেন ভিসি। ঘেরাও তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে আহত হন ৩৩ জন ছাত্র। সূত্র: এনডিটিভি
ঢাকা/এমএল, ১৭ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ
যাদবপুর কাণ্ডে উপাচার্যের দুঃখপ্রকাশ ঘিরে বিতর্ক
যাদবপুর কাণ্ডে উপাচার্যের ‘দু:খপ্রকাশ’ ঘিরে বিতর্ক দেখা দিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে তাঁর ছবির তলায় লেখা, তিনি দুঃখিত। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রদীপ ঘোষ অভিযোগ করেছেন, উপাচার্য এমন কোনও কথা লেখেননি। ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়েছে বলে জানান রেজিস্ট্রার। পুলিশের কাছে এই ব্যাপারে অভিযোগ জানানো হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এদিন সকালে থেকেই গতকালের মত আজও অব্যহত ছিল অচলাবস্থা। উপাচার্য, রেজিস্ট্রারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছে গতকালের মতই। সকালে যাদবপুর কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিল করেন শহরের বেশ কয়েকটি কলেজের পড়ুয়ারা। এরই মধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেখা যায় উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর ছবির তলায় লেখা ‘তিনি দুঃখিত’। উপাচার্যের ক্ষমা চাওয়াকে স্বাগতও জানায় ছাত্র সংগঠনগুলি। তারপরই রেজিস্ট্রার জানিয়ে দেন ক্ষমা চাননি উপাচার্য। যা ঘিরে দেখা দিয়েছে নতুন বিতর্ক।
কলরবে উত্তাল জনমন
ভিজে একসা ব্যানার। জল ছিটে ধেবড়ে গিয়েও তবু জ্বলজ্বল করছে লালরঙা অক্ষরগুলো। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে লক্ষ্য করে তাতে স্পষ্ট চ্যালেঞ্জ: এক্সপেক্ট রেজিস্টেন্স! ছাত্রছাত্রীদের মর্যাদা না-দিলে প্রতিরোধ হবেই। শনিবার বিকেলে মিছিলের একেবারে পুরোভাগে এই ঘোষণাই জনজোয়ারের মেজাজটা বুঝিয়ে দিল। আশ্বিনে খেপা শ্রাবণের মতো ঝমঝমে বৃষ্টিও সেই ঝাঁঝ ভোঁতা করতে পারেনি।
যাদবপুর: ছাত্রজোয়ার শাম্ত হল আশ্বাসে
| ||||
অভিজিৎ বসাক
| ||||
|
যাদবপুরের আঁচ গিয়ে পড়ল এবার বেঙ্গালুরুতে, প্রতিবাদে মুখর ‘গার্ডেন সিটি’
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Sunday, 21 September 2014 02:41 PM
প্রথমে দিল্লি। তারপর বেঙ্গালুরু।
যাদবপুরকাণ্ডে প্রতিবাদের ঢেউ ক্রমেই আছড়ে পড়ছে রাজ্যের বাইরে। শনিবার রাজধানীর পর, রবিবার গর্জে উঠল বেঙ্গালুরু।
রবিবাসরীয় সকালে গানে-স্লোগানে মুখর হয়ে উঠল বেঙ্গালুরুর টাউন হল, কারও হাতে ছিল গিটার, কেউবা শুধুই দিল তালি।
নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনায় বাকরুদ্ধ যাদবপুরের প্রাক্তনীরা।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে পড়ুয়াদের উপর পুলিশি বর্বরতার প্রতিবাদে, যাদবপুরের প্রাক্তনীদের পাশে দাঁড়ালেন বেঙ্গালুরুর বাসিন্দারাও।
যাদবপুরকাণ্ডের প্রতিবাদে শনিবার কলকাতায় পথে নামেন পড়ুয়ারা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজপথ ভাসে জনস্রোতে। প্রতিবাদের আঁচ পৌঁছয় রাজধানী দিল্লিতেও। সেখানে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান প্রাক্তনীরা। দিল্লির পর এবার যাদবপুরের পাশে দাঁড়াল বেঙ্গালুরু।
সময় চাইলেন রাজ্যপাল, 'আশ্বাসে' উঠল অবস্থান, সোমবার বৈঠক যাদবপুরের পড়ুয়াদের
কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও অর্ণব মুখোপাধ্যায় এবিপি আনন্দ
Saturday, 20 September 2014 02:36 PM
কলকাতা: পুলিশি নিগ্রহের অভিযোগ ও তাঁদের দাবি নিয়ে আচার্য রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে কথা বললেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের প্রতিনিধিরা। ছাত্রদের দাবি, উপাচার্যকে অপসারণের দাবি শুনে সময় চেয়েছেন রাজ্যপাল। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তারপরই মেয়ো রোড থেকে অবস্থান প্রত্যাহার করেছেন ছাত্রছাত্রীরা। সোমবার থেকে ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা বজায় ও পঠনপাঠনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফেরানোর পরামর্শ দিয়েছেন কেশরীনাথ। আগামী সোমবার জিবি বৈঠকের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে ছাত্ররা।
সব মিলিয়ে যাদবপুরকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা অব্যাহত।
যাদবপুরকাণ্ডে আগেই সক্রিয় হয়েছেন রাজ্যপাল। শিক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রসচিব, উপাচার্যকে তলবের পর কথা বলেছেন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে। কথা বলতে চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গেও। সেইমতো মহামিছিলের পর মেয়ো রোডের অবস্থান বিক্ষোভের মঞ্চ থেকে শনিবার রাজভবনে যায় আন্দোলনকারী ছাত্রদের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। প্রায় দেড় ঘণ্টা কথা হয় রাজ্যপালের সঙ্গে। আলোচনা শেষে ছাত্র প্রতিনিধিরা দাবি করেন, রাজ্যপালের কাছে গোটা বিষয়টি সবিস্তার জানানো হয়েছে। রাজ্যপাল তাঁদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। মেয়ো রোডের অবস্থান তুলে নিলেও আচার্যর পরামর্শমতো ক্লাস বয়কটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হবে কিনা, ভবিষ্যৎ আন্দোলনের রূপরেখাই বা কী হবে, তা ঠিক করতে সোমবার বৈঠক ডেকেছে ছাত্রছাত্রীরা।
রাজভবন সূত্রে খবর, আচার্যর সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ ছাত্র প্রতিনিধি। ছাত্রদের কথা মন দিয়ে শুনেছেন আচার্য। পাশাপাশি, সোমবার থেকে ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা বজায় ও পঠনপাঠনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফেরানোর জন্য ছাত্রদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এর আগে অবশ্য সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাজ্যপাল বলেন, ওখানে কী হয়েছে, তা আপনারা আরও ভাল জানেন।
যাদবপুরকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্যপালের দফতরে গিয়ে নিজের গোল্ড মেডেল ফেরত দিয়েছেন তপোব্রত ঘড়ুই নামে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এক গোল্ড মেডেলিস্ট।
এদিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে পথে নামেন পড়ুয়ারা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে শহরের রাজপথে জনজোয়ার নামে। নন্দন চত্বর থেকে মিছিল বের হয়। স্লোগানে-প্রতিবাদে মুখর পড়ুয়ারা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি মিছিলে সামিল অন্যান্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়দের ছাত্রছাত্রীরাও। দুপুর ২টো নাগাদ মিছিল শুরু হয় নন্দনের সামনে থেকে। গন্তব্য ছিল রাজভবন। বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ, মিছিল যখন জওহরলাল নেহরু রোডে, তখনও মিছিলের শেষ অংশ অ্যাকাডেমির কাছে। তখনও মিছিলে যোগ দিচ্ছেন পড়ুয়ারা। এদিকে, মিছিল মেয়ো রোডের কাছে মিছিল আটকে দিয়েছে পুলিশ। ছাত্রদের একটি প্রতিনিধিদল রাজ্যপালের কাছে যাবে। কিন্তু পড়ুয়ারা সাফ জানিয়েছেন, উপাচার্য, সহ উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তাঁরা মেয়ো রোডেই অবস্থান করবেন।
যাদবপুরকাণ্ডের প্রতিবাদে অব্যাহত রয়েছে গোটা শহরেই। এদিন সকাল থেকেই প্রতিবাদে সোচ্চার কলেজ পড়ুয়ারা। যাদবপুরের উপাচার্যের অপসারণ ও পুলিশি বর্বরতার নিন্দায় মৌন মিছিল। সকালে গোলপার্ক থেকে এই মিছিল শুরু হয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে ঘুরে গোলপার্কের কাছে মিছিল শেষ হয়। মিছিলে পা মেলান বিভিন্ন কলেজের পড়ুয়ারা। মুখে কালো কাঁপড় বেঁধে ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন তাঁরা।
এদিকে, যাদবপুরের ঘটনার প্রতিবাদে দিল্লিতেও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও মিছিল করছেন বলে জানা গেছে।
N PICS: Jadavpur University students hold march, demand VC’s resignation, fresh probe http://iexp.in/vDi113276 (4 photos)
উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি অধ্যাপক সংগঠনের
ঘরের মধ্যেই কোণঠাসা যাদবপুর বিশ্ববিদালয়ের উপাচার্য। যাদবপুর ক্যাম্পাসে পুলিশি তাণ্ডবের প্রতিবাদে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে সরব পড়ুয়ারা। এবার সেই একই দাবিতে সরব যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের সংগঠন জুটা। ... আরও»
যাদবপুরের পাশে প্রেসিডেন্সি ছাত্রদের লালবাজার অভিযান, মিছিল এপিডিআর-এরও
যাদবপুরকাণ্ডের প্রতিবাদে ক্রমেই সুর চড়াচ্ছে গোটা শহর। একদিকে, যাদবপুরের আন্দোলনকারীদের পাশে প্রেসিডেন্সির পড়ুয়ারা। আরেকদিকে উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে রাজপথে এপিডিআর। ... আরও»
আনন্দবাজারের খবর
পথ চেনাতে পথেই প্লাবন
কলরবে উত্তাল জনমন
ভিজে একসা ব্যানার। জল ছিটে ধেবড়ে গিয়েও তবু জ্বলজ্বল করছে লালরঙা অক্ষরগুলো। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে লক্ষ্য করে তাতে স্পষ্ট চ্যালেঞ্জ: এক্সপেক্ট রেজিস্টেন্স! ছাত্রছাত্রীদের মর্যাদা না-দিলে প্রতিরোধ হবেই।
শনিবার বিকেলে মিছিলের একেবারে পুরোভাগে এই ঘোষণাই জনজোয়ারের মেজাজটা বুঝিয়ে দিল। আশ্বিনে খেপা শ্রাবণের মতো ঝমঝমে বৃষ্টিও সেই ঝাঁঝ ভোঁতা করতে পারেনি। উপাচার্য ও পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভের পারদ এ বার খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিশানা করল।
তবে এ রাগ ঠিক রাজনীতির চেনা বুলির ছকে-বাঁধা রাগ নয়! বরং কোনওরকম দলীয় পতাকার ফাঁদে না-পড়ার শপথই বারবার শোনা গিয়েছে। ফিচেল হাসির মেজাজে হাততালি দিয়ে ছড়া কাটা হয়েছে, ‘এই শতকের দু’টি ভুল / সিপিএম ও তৃণমূল / আলিমুদ্দিন শুকিয়ে কাঠ / শত্রু এখন কালীঘাট!’
বাম জমানায় নন্দীগ্রাম-কাণ্ড বা রিজওয়ানুরের ঘটনার পরে বারবার দলমত নির্বিশেষে রাজনীতির পতাকাহীন মিছিল দেখেছে কলকাতা। পরিবর্তনের পরে গত বছর জুনে কামদুনি-কাণ্ডের ধাক্কায় সংস্কৃতি-জগতের বিশিষ্টজনেদের ডাকেও পথে নেমেছিল এ শহর। সে-বারও সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দানা বাঁধতে দেখা যায়। এ বার আরও স্পষ্ট ভাবে শোনা গিয়েছে সেই প্রতিবাদী স্বর। স্লোগান উঠেছে ‘কালীঘাটের হাওয়াই চটি, সাদা শাড়ি, বাংলা থেকে দূর হটো!’
ফেসবুকের সরস টিপ্পনীর ঢঙেও মুখে-মুখে ফিরেছে রঙ্গব্যঙ্গ। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ উপাচার্য তাই হয়ে উঠেছেন ‘কালীঘাটের ময়না’। মিছিল বলেছে, ‘কালীঘাটের ময়না / তোমার দ্বারা হয় না!’ সুকুমার রায়কে স্মরণ করে পুলিশকেও রেয়াত করা হয়নি। পার্ক স্ট্রিটের মোড়ের কাছে কতর্ব্যরত উর্দিধারীদের দেখেই সহাস্য স্লোগান উঠল, ‘পুলিশ দেখে জাপ্টে ধরে / গান শোনাব বিশ্রী সুরে।’
যাদবপুরে পুলিশি অত্যাচারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নেটজগতেই সমকালের একটি জনপ্রিয় বাংলা গানের লাইন ধার করে শুরু হয়েছিল এই প্রতিবাদ। ‘হোককলরব’, শব্দটি তার পর থেকেই আন্দোলনের সহমর্মীদের মন্ত্র হয়ে উঠেছে। নন্দন থেকে রাজভবনের পথেও তাই বারবার রোল, হোক, হোক, হোক, হোককলরব! এবং এই কলরব স্রেফ ছাত্রছাত্রী বা তরুণ সমাজের মধ্যেই আটকে থাকেনি।
৭৫ বছরের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী দিলীপ দাস এই ভিড়ের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। ‘ফিয়ার নাথিং’ লেখা চুপচুপে ভিজে গেঞ্জির যুবকের পাশেই হাঁটছিলেন তিনি। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মহিলার চটি ছিঁড়ে গিয়েছে। সেই চটি হাতে নিয়ে শাড়ি সামলে হাঁটছেন দৃপ্ত ভঙ্গিতে।
গলার শিরা ফুলিয়ে শিখ যুবক স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘ছিন লেঙ্গে আজাদি!’ তাঁর খুব কাছে হাঁটতে থাকা কলেজ-তরুণীর মাথার ফেট্টিতে লেখা ‘বহিরাগত’। সেন্ট জেভির্য়াস কলেজের ছাত্রীটি হাসতে হাসতে বললেন, “যাদবপুরের ঘটনা যখন, তা হলে আমিও তো বহিরাগত!”
সপসপে ভিজে টি-শার্ট, কুর্তি, শর্টসের তরুণদের ফুর্তির শেষ নেই। রোগা চেহারার চশমা-নাকে একটি মেয়েকে দেখে তাঁর সহপাঠীদের ঠাট্টা: কী রে, তুই তো কলেজের ক্লাসের বাইরে কিচ্ছু জানিস না! মেয়েটির চোখা জবাব: যাদবপুরে যা ঘটেছে, তার পরেও কী বসে থাকব!
স্রেফ নেট-প্রচার নির্ভর অসংগঠিত মিছিলের ডাকে ঘরে বসে থাকতে পারেননি অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ও। বললেন, “জীবনে এর আগে কখনও এমন সিরিয়াসলি মিছিলে হাঁটতে পথে নামিনি!” স্বস্তিকা যাদবপুরের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তনী।
নাটক-সিনেমার অঞ্জন দত্ত, সুমন মুখোপাধ্যায়, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়রাও এই মিছিলেরই মুখ! ছাত্রদের পাশে দাঁড়াতে পথে নেমেছেন চেনা-অচেনা মাস্টারমশাইরা। যাদবপুরের শিক্ষক ইংরেজির চান্দ্রেয়ী নিয়োগী, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মধুবন্তী মৈত্র বা বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষক সৌমিত্র বসু (বর্তমানে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক)-ও ঘরে বসে থাকতে পারেননি। যাদবপুরের প্রাক্তনী এক দম্পতি সুপ্রিয়া ও অরূপ চক্রবর্তীও আগাগোড়া হাঁটলেন মিছিলে। সুপ্রিয়া বললেন, “আমার মেয়েও ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হয়েছে। এখন বিকেল পাঁচটা বাজলেই ওর জন্য চিন্তা হয়। আমাদের সময়ে নির্ভয়ে কত রাত পর্যন্ত ক্যাম্পাসে থাকতাম!”
পুলিশ অবশ্য খাতায়-কলমে এই ভিড়কে ছ’হাজারের বেশি বলে মানতে চায়নি। তবে বিকেল চারটেয় মিছিলের মুখ মেয়ো রোডের কাছাকাছি এসে পৌঁছনোর সময়েও দেখা গেল শেষ ভাগ অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসের কাছে। পুলিশের একাংশই ঠারেঠোরে মানছেন, লালবাজার যা বলছে মিছিলের বহর তার দু’-তিন গুণের কম নয়!
বেলা আড়াইটেয় মিছিলের পথ চলা শুরুর সময়ে বৃষ্টি পড়ছিল মুষলধারে। সেই বৃষ্টিই যেন মিছিলকে আরও খেপিয়ে তুলল। তাৎক্ষণিক স্লোগান উঠল, ‘আয় বৃষ্টি ঝেঁপে, যাদবপুর গেছে খেপে!’ আর এই খ্যাপামির শরিক কলকাতার সঙ্গে গোটা দেশের ছাত্রসমাজ।
মেয়ো রোডের মুখে পুলিশি ব্যারিকেডের সামনে থামাতে হয় মিছিল। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ সাত সদস্যের প্রতিনিধিদলকে পুলিশ রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করাতে নিয়ে যায়। তত ক্ষণ অপেক্ষমান ভিড়কে পথনাটকে মাতিয়ে রাখলেন স্কটিশ চার্চ কলেজ, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা।
প্রতিনিধিরা ফিরে এসে সহযোদ্ধাদের জানালেন, তাঁদের রাজভবন অভিযান সফল। রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা খুশি। শুনেই ফের উল্লাস। তখন সন্ধে সাতটা। বৃষ্টি থেমেছে। আন্দোলনকারীদের চুপচুপে ভেজা পোশাক শুকিয়েছে গায়েই। বিদায়বেলায় ফের স্লোগান, ‘পুলিশ যত মারবে / মিছিল তত বাড়বে’। ক্লান্তি ছাপিয়ে লড়াইয়ের উত্তাপ তখন ছড়িয়ে-পড়ছে জনতার চোখেমুখে।
পথ চেনাতে পথেই প্লাবন
মিছিলে দেখেছিলাম একটি মুখ....
সুমন মুখোপাধ্যায়
প্রথম মিছিলে হেঁটেছিলাম, তা সেই এগারো-বারো বছর বয়সে। যুদ্ধবিরোধী মিছিল। বাবার হাত ধরে। আর আজ আবার যেন সেই ‘যুদ্ধবিরোধী’ মিছিলেই পা মেলালাম!
ছেলেবেলার সেই মিছিলে ‘পাপেট’ নিয়ে গিয়েছিলাম, কণ্ঠে ছিল,
‘মেরি বাবা মেরি বাবা মেরি বাবা
খাবা খাবা খাবা আমি, খাবা সবই খাবা
থলিতে ভরব যা হাতের কাছে পাবা।’
তখন আমেরিকার যুদ্ধনীতির প্রতিবাদে সেই মিছিলে সামিল হয়ে মনে হয়েছিল, ইতিহাসে ঠাঁই করে নিলাম! তখনই ভেবেছিলাম, ‘কমিটমেন্ট’ কথাটা নিছক একটা শব্দ নয়, এটা আদপে ‘অ্যাক্ট’।
ভুল ভেবেছিলাম! ভাবিনি, সেই ‘থলিতে ভরব যা হাতের কাছে পাবা’র বিরুদ্ধে, আর এক ‘যুদ্ধনীতি’র প্রতিবাদে আবার পথে নামব আরও অজস্র ছেলেমেয়ের সঙ্গে, আরও অনেক সহমর্মী মানুষের সঙ্গে!
অবশ্য, এটাই দ্বিতীয় বার মিছিলে হাঁটা নয়। এর আগেও নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের পরের দিনই, চলচ্চিত্র উৎসবের সময় ছোট মিছিলে হাঁটি। এর পরেই নন্দীগ্রামের ছায়ায় কলেজ স্কোয়ার থেকে সেই মহামিছিল। গিয়েছিলাম ধর্মতলা পর্যন্ত। সেই মৌন মিছিলের শব্দতরঙ্গ বুঝিয়ে দিয়েছিল, পরিবর্তন আসতে চলেছে। তখনও ভাবতে পারিনি, এর মাত্র দু’বছরের মধ্যেই ‘পরিবর্তিত’ এক সরকারের বিরুদ্ধে আবার পথে নামতে হবে।
কামদুনির গণধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে সেই মিছিল থেকে প্রথম পাওয়া গেল মা-মাটি-মানুষের সরকারের বিরোধী স্বর। তার পর থেকে একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে এই রাজ্যে। যা আমাদের ক্রমাগত বিষাদে জর্জরিত করছে। কোনও দিনই তো বুঝিনি যে নির্ভরতার একটা বিশ্বস্ত জায়গা এত দ্রুত ভঙ্গুর হয়ে পড়বে!
প্রতিবাদ মিছিলে সুমন মুখোপাধ্যায় ও স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। শনিবার শহরে।
|
মার্কস বলেছিলেন, ইতিহাস পুনরাবর্তিত হয়। প্রথম বার তা হয় ট্র্যাজেডি হিসেবে, দ্বিতীয় বার প্রহসন। আর ইতিহাসবিদ হবসবম এর সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন তৃতীয় পুনরাবর্তনের মাত্রা: হতাশা। যাদবপুরের ঘটনার পরে অমোঘ সেই তৃতীয় মাত্রার কথাই মনে পড়েছিল। কিন্তু আজকের মিছিলে যখন ছাত্রদের প্রতিবাদী মুখ দেখলাম, প্রতিবাদী স্বর শুনলাম, তখন মনে পড়ে গেল সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের আর এক অমোঘ পঙক্তি:
‘মিছিলে দেখেছিলাম একটি মুখ,
মুষ্টিবদ্ধ একটি শাণিত হাত
আকাশের দিকে নিক্ষিপ্ত...’
এই মিছিলের জ্যান্ত, উজ্জ্বল মুখগুলোর দিকে তাকিয়ে, এই উদ্যমী, উৎসাহী, নাছোড়বান্দা ছাত্রছাত্রীদের স্লোগানের ছন্দে ছন্দে পা মিলিয়ে যখন হেঁটে চলেছি রবীন্দ্র সদন থেকে রাজভবনের দিকে, তখন বার বার মনে প্রশ্ন উঠেছে, আমি তো শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢুকেছি! এই মিছিলে আমার কী ভূমিকা? ইতিহাসের স্মৃতি খুঁড়ে বৃষ্টিস্নাত রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে ভেসে উঠছিল ইতিহাসের নানা সময়ের, নানা মুহূর্তের কোলাজ! আচমকাই দৃশ্যমান হল, জাদুঘরের পাশে, পার্ক স্ট্রিট মোড়ে লিফলেট বিলোচ্ছেন জাঁ পল সার্ত্র! পার্ক স্ট্রিটের মোড় যেন আজ ষাটের দশকের ছাত্রবিক্ষোভে বিস্ফারিত প্যারিসের রাজপথ! যেন ঘুম ভেঙেছে সুপ্ত আগ্নেয়গিরির! সেই লাভাস্রোতে ডুবে যাচ্ছে শাসনতন্ত্রের ইমারত! তারুণ্যের সেই আগুনে নিজেকে প্রজ্জ্বলিত করতে পেরেছিলেন সার্ত্রের মতো বিশ্ববরেণ্য তাত্ত্বিক। তাঁর সেই অবদান এবং অংশগ্রহণ পৃথিবীর ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে। আর এক প্রখ্যাত তাত্ত্বিক আলথুজার অবশ্য সার্ত্রের মতো রাস্তায় নেমে পড়তে পারেননি। ইতিহাস তির্যক ভঙ্গিতে সে কথাও মনে রেখেছে। আসলে, আমাদের সমাজে এক জন চিন্তাবিদ বা ‘ইন্টেলেকচুয়াল’-এর সামাজিক ও রাজনৈতিক ভূমিকা কী, সেটা বোধহয় সার্ত্র এবং আলথুজার-এর এই সক্রিয়তা (অ্যাক্ট) বনাম নির্লিপ্ততার নিরিখে আন্দাজ করা যেতে পারে।
সার্ত্রের মতো লিফলেট বিলোতে হয়তো আমি পারিনি, কিন্তু মিছিলে পা মেলাতে পেরেই তখন মনে হচ্ছিল, আমিও ওদের প্রতিবাদের শরিক হতে পারলাম! আজকে যখন মিছিলে মাথায় ফেট্টি বাঁধা, জামায় স্লোগান আঁকা, হাতে ফেস্টুন ধরা মুখগুলো দেখছিলাম, মনে পড়ে যাচ্ছিল সাম্প্রতিক ইতিহাসে দেখা তিয়েনানমেন স্কোয়ারের চিত্রাবলি, বাংলাদেশের শাহবাগের ছবির মন্তাজ! মনে পড়ে যাচ্ছিল, দুনিয়া কাঁপানো সেই ফ্রেম! তিয়েনানমেন স্কোয়ারে আগুয়ান ট্যাঙ্কের সামনে উদ্ধত একক শরীরের ব্যারিকেড!
শুরু হল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রতিবাদের এক নতুন চিহ্ন, যার ক্যানভাস বিস্তৃত হল তাহরির স্কোয়ার পর্যন্ত। এর অভিঘাতে বদলে গেল শাসকের মুখ, খুলে গেল শাসনযন্ত্রের মুখোশ! শুধু তাই নয়, পুনর্বিন্যস্ত হল রাজনৈতিক প্রতিরোধী এবং শাসকের সম্পর্কের সমীকরণ!
আজকের মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে এলোমেলো ভাবে মনে পড়ছিল আইজেনস্টাইনের ‘ব্যাটলশিপ পোটেমকিন’, জন রিডের ‘দুনিয়া কাঁপানো দশ দিন’, হেমিংওয়ে-র ‘ফর হুম দ্য বেল টোল্স’ এবং পন্টেকর্ভো-র ‘ব্যাটল অফ আলজিয়ার্স’। এগুলোর সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে সম্পর্ক আছে স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে মানুষের সংগ্রাম। আবার মনে পড়ে যাচ্ছিল, সত্তরের দশকের তুমুল রাজনৈতিক ডামাডোলের মাঝখানে উৎপল দত্তকে যখন কার্যত লুকিয়ে লুকিয়ে করতে হচ্ছে ‘দুঃস্বপ্নের নগরী’ বা বাসে কংগ্রেসিদের বোমা মারার প্রতিবাদে করেছিলেন ‘পেট্রল বোমা’। ভাবছিলাম, উৎপল দত্ত আজ থাকলে কী করতেন?
উৎপলবাবু সম্পর্কে কতগুলি পরস্পরবিরোধী গল্প শোনা যায়। তিনি যেমন সক্রিয় ভাবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয় নিয়ে চটজলদি নাটক লিখে ফেলতে পারতেন বা প্রযোজনাও করে ফেলতেন, আবার তেমনই শোনা যায়, মিছিলে হাঁটার জন্য তিনি কুঁজোর মধ্যে পাঞ্জাবি-পাজামা ভরে রাখতেন! বা যখন পুলিশ নাট্যদলের অভিনেতা বা পরিচালককে খুঁজছে, তখন তিনি সহ-অভিনেতাদের এসে বলতেন, ‘কমরেডস, পুলিশ আসছে, পালান!’ এগুলো হয়তো গল্পকথাই! কিন্তু, আমি নিশ্চিত, কমরেড উৎপল দত্ত রাতারাতি ‘নিশিরাতে পুলিশের লাঠি’ নামে কোনও নাটকও করে ফেলতে পারতেন!
আমাদের সময়ের শিল্পীদের অবশ্য এর কোনও ক্ষমতাই নেই। সে কথা স্বীকার করে নেওয়া ভাল। না হলে আজকের মিছিলে অন্তত আরও কিছু মুখ দেখা যেত।
আবার কি আমরা সেই দুঃস্বপ্নের নগরীতে ফিরে যাচ্ছি? আবার কি আমাদের লুকিয়ে লুকিয়ে নাটক করতে হবে? আবারও কি ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে কোনও কথা বললেই কি দেখতে হবে, আমার ভাগ্যে পুলিশের চোখরাঙানি? বা চড়চাপড়ও বটে! বা লাঠির গুঁতো? বা থানায় অনির্দিষ্ট অপেক্ষা? এত সব এলোমেলো আকাশপাতাল ভাবনার মধ্যে চেতনা আবার ফিরিয়ে দিল বাস্তবভূমিতে, কানে ভেসে এল ‘হোক কলরব’ স্লোগান!
দেখলাম, উদ্ধত বুকে, সাহসের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীরা চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন রাষ্ট্রশক্তির আস্ফালনকে।
ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ জনসমুদ্রের ফেনিল চূড়ায়
ফসফরাসের মতো জ্বলজ্বল করতে থাকল
মিছিলের সেই মুখ।
পথ চেনাতে পথেই প্লাবন
প্রতিবাদ দেশ জুড়েই
যাদবপুর কাণ্ডের প্রতিবাদে দিল্লির বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ। ছিলেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া-সহ অনেকেই। ছবি: প্রেম সিংহ
উত্তেজনায় থরথর কাঁপছিল অধুনা প্রবাসী বাঙালি তরুণের গলা। “বহিরাগত কাকে বলছে ওরা? ধরুন আমি প্রেসিডেন্সিতে পড়ি। আমি যাদবপুর ক্যাম্পাসে গেলেই কি বহিরাগত হয়ে যাব! আর বহিরাগত মানেই আমি কি গুন্ডা, যে পুলিশ দিয়ে পেটাতে হবে?”
নয়াদিল্লির হেইলি রোডে বঙ্গভবনের উল্টোদিকের ফুটপাথ। কেউ কেউ সেখানেই বসে আর্ট পেপারের রোল খুলে ফেল্ট পেনে পোস্টার লিখছিলেন, কেউ খুলে বসেছিলেন ল্যাপটপ। তরুণটির সঙ্গে দেখানেই দেখা। যাদবপুরের প্রাক্তনী, কর্মসূত্রে এখন গুড়গাঁওয়ে। শনিবার তিনি ও তাঁর মতো আরও বেশ কয়েক জন দুপুর গড়ানোর আগেই হাজির হয়ে গিয়েছেন রাজধানীতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অতিথিশালার সামনে।
জমায়েতটা ওখানেই। হঠাৎ বৃষ্টিতে ভেজা কলকাতার রাজপথে যখন পা বাড়াচ্ছে যাদবপুরের মিছিল, তখন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের গঙ্গা ধাবা-র সামনে জড়ো হচ্ছিলেন সেখানকার ছাত্রছাত্রীরা। কেউ প্রাক্তন যাদবপুর, আবার কেউ কোনও দিন কলকাতাই চোখে দেখেননি। কিন্তু হাজার দেড়েক কিলোমিটার উজিয়ে কলকাতার কলরব ঠিকই পৌঁছেছে।
যাদবপুরের উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর পদত্যাগের দাবিতে বৃহস্পতিবারই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রেসিডেন্ট কমিশনারকে স্মারকলিপি দেয় ছাত্র সংগঠন আইসা। আজ আইসা, এসএফআই, ডিএসএফ-সহ দলমত নির্বিশেষে মোট সাতটি ছাত্র সংগঠন যাদবপুরের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ জমায়েতের ডাক দেয়। জেএনইউ ক্যাম্পাস থেকে বাসে-অটোয়-ম্যাটাডরে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে সেই দলটাই পৌঁছে যায় বঙ্গভবনের সামনে। যেখানে অপেক্ষা করছিলেন ওই প্রাক্তনী তরুণের মতো বেশ কিছু প্রতিবাদী।
জেএনইউ ক্যাম্পাসের যে কোনও প্রতিবাদী মিছিলেরই চালু স্লোগান ‘হাল্লা বোল’। সেই স্লোগান উঠল বঙ্গভবনের সামনেও। মাঝে মাঝে হাততালি দিয়ে নাটকের গান। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজিতে লেখা পোস্টার ‘পুলিশি নির্যাতন কেন হবে ক্যাম্পাসে?’ ‘কেন এর পরেও পদত্যাগ করবেন না উপাচার্য?’ তারই মধ্যে বেশ কিছু পোস্টারে নতুন লব্জ ‘বাউন্সার’। ‘ক্যাম্পাস থেকে বাউন্সার হটাও’। লক্ষ্য কি মঙ্গলবার রাতের ‘গেঞ্জি পুলিশ’ বাহিনী? আর শুধু জেনএনইউ নয়, চোখে পড়ল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়েরও কিছু মুখ। ছাত্রছাত্রীরা তো বটেই, ছিলেন কিছু শিক্ষকও। ইতিমধ্যে খবর আসে, বঙ্গভবনে আসার পথে তুঘলক রোড থানার সামনে জেএনইউ-এর বাস আটকে দিয়েছে পুলিশ। বাস থেকে নাকি প্রতিবাদীদের নামতেও দেওয়া হচ্ছে না। তা নিয়ে বেশ খানিকক্ষণ উত্তপ্ত কথা চালাচালি চলে।
প্রতিবাদী জমায়েত যে হবে, খবর ছিল পুলিশের কাছে। তবে হিসেবে ভুল হয়েছিল তার কলেবর নিয়ে। বঙ্গভবনের সামনে তাই প্রথম দিকে কতকটা আলসে মেজাজেই দাঁড়িয়েছিল একটিমাত্র পুলিশ জিপ। ভিড় ক্রমেই বাড়ছে দেখে বসে লোহার ব্যারিকেড। খবর যায় পুলিশ কন্ট্রোলে, ‘চল্লিশ নয়, অন্তত চারশো লোক জমেছে।’ পৌঁছয় র্যাফ। তবে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে যায়নি। উত্তেজনায় লোহার ব্যারিকেড ধরে ঝাঁকুনি দিতে দেখা গিয়েছে অনেককে। তবে মাথা ঠান্ডা রেখেই পরিস্থিতি সামলেছে পুলিশ।
গোটা সময়টায় আগাগোড়া ছবি তুলে সোশ্যাল সাইটে আপলোড করে যাচ্ছিলেন অনেকে। খবর আসছিল কলকাতার মিছিল নিয়েও। বঙ্গভবনের সামনে থেকে অশোক রোড ধরে যন্তরমন্তরে গিয়ে শেষ হয় মিছিল। মিছিল শেষে দু-এক জন জানালেন, আজকের কর্মসূচি শেষ হলেও জারি থাকবে প্রতিবাদ। যাদবপুরের প্রাক্তনীদের অধিকাংশ শহরেই শাখা রয়েছে। উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে আচার্য-রাজ্যপালের কাছে চিঠি লিখছেন তাঁরাও।
কাল, রবিবার বেঙ্গালুরুর টাউন হলে অবস্থান বিক্ষোভ করবেন যাদবপুর-সহ কলকাতার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তনীরা। আজ আবার হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় এবং হায়দরাবাদের ‘ইংলিশ অ্যান্ড ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউনিভার্সিটি’-র ছাত্রছাত্রীরা যাদবপুর কাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান।
উত্তর থেকে দক্ষিণ ভারত হয়ে উত্তরবঙ্গ। সেই যাদবপুর ঢেউ। কলকাতার মতোই বৃষ্টি মাথায় করে মিছিল এগোচ্ছিল শিলিগুড়ির রাস্তায়। মূলত ছাত্রছাত্রীদের সেই মিছিলের সামনে ব্যানার ‘যাদবপুরে মার খেয়েছি, শিলিগুড়িতে জোট বেঁধেছি’। সেই মিছিলও যত এগিয়েছে, সাধারণ মানুষের ভিড়ে কলেবর বেড়েছে তার। সেবক রোড ঘুরে মিছিল পৌঁছয় হিলকার্ট রোডে। এ দিকে, প্রতিবাদে সরব হয়েছে পাহাড়ের ছাত্র সংগঠন ও ডুয়ার্সের আদিবাসী সংগঠনগুলিও। দার্জিলিঙে পথে নামার কথা জানিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ছাত্র সংগঠন বিদ্যার্থী মোর্চা। তাদের মুখপাত্র সন্দীপ ছেত্রী বলেছেন, “যাদবপুরের যা ঘটেছে, তার দায় রাজ্য সরকারকে নিতে হবে।” আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য সম্পাদক তেজকুমার টোপ্পোর কথায়, “প্রতিবাদ করার অধিকারও সকলের রয়েছে। এ কোন রাজ্যে আমরা রয়েছি, লড়াই করে কোন পরিবর্তন আনলাম!”
রাজ্যপালের আশ্বাসে উঠল অবস্থান
ঘোষণা ছিল, রাজভবন থেকে সদর্থক বার্তা না-মিললে মেয়ো রোড ছেড়ে নড়বেন না ছাত্রছাত্রীরা। রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলে প্রতিনিধি দল ফিরে আসার পরে অবস্থান তুলে নেওয়ারই সিদ্ধান্ত হল। কেশরীনাথ ত্রিপাঠী যে ভাবে তাঁদের কথা শুনেছেন, ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন, তাতে খুশি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত পড়ুয়ারা।
নিজস্ব সংবাদদাতা
২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
বহিরাগত হটাতে চায় না কোনও দল
যাদবপুরে অশান্তির পিছনে বহিরাগতদের ভূমিকার কথা শনিবারেও জোর দিয়ে বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী। বস্তুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে বহিরাগতদের উপস্থিতির জেরে অশান্তির ঘটনা নেহাত কম নয়। এবং সেই বহিরাগতদের বেশির ভাগই কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকেন।
নিজস্ব সংবাদদাতা
২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
দুই যাদবপুর
কর্তৃপক্ষ বুঝেছেন, এই স্বাধীন মনোভাব চিন্তার স্তরে বিনষ্ট করতে পারলে আর ছাত্র পিটিয়ে বদনাম কুড়োতে হবে না, আপনিই সব পোষ মেনে যাবে। সুকান্ত চৌধুরী
পরিবর্তন। ভূতপূর্ব উপাচার্য শৌভিক ভট্টাচার্য ও বর্তমান (অস্থায়ী) উপাচার্য অভিজিত্ চক্রবর্তীয়
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গলবার রাতের ছবি দেখতে দেখতে ভাবছিলাম দু’বছর আগে সেখানে আর একটা রাতের কথা। আড়াইটে নয় অবশ্যই, ন’টা নাগাদ। কোনও গণ্ডগোল নয়: দিনভ’র কাজের পর ষাট-সত্তর জন অধ্যাপক ছ’টা থেকে ন’টা আলোচনা করছিলেন, ইউজিসি ঘোষিত এক নতুন গবেষণা-অনুদানের কী করে সদ্ব্যবহার করা যায়। নির্ভেজাল উচ্চতর গবেষণা নিয়ে এই আলোচনায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তত্কালীন উপাচার্য শৌভিক ভট্টাচার্য। ক’মাস মাত্র যাদবপুরে এসেছেন তখন, কিন্তু তাঁর গোড়ার ভাষণ ও সভা পরিচালনা থেকে স্পষ্ট, তার মধ্যেই তিনি সাঁইত্রিশটা বিভাগ আর একুশটা স্কুল-এর গবেষণা-বৃত্তান্ত গুলে খেয়েছেন, ভবিষ্যত্ পদক্ষেপের একটা পরিকল্পনাও ছকে এনেছেন।
বেরিয়ে ধন্য মনে হচ্ছিল, এমন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে আছি যেখানে এমন আলোচনা সম্ভব। আর ধন্যবাদ দিলাম তখনও-নতুন সরকারকে, যার তত্কালীন নিয়োগনীতির দৌলতে এমন উপাচার্য পাওয়া গেছে যিনি এই চর্চার নেতৃত্ব দিতে সক্ষম।
কিছু দিন বাদেই শৌভিকবাবু পদত্যাগ করে চলে গেলেন, ছাত্র আন্দোলনের ফলে নয়, কিছু বয়স্কের উত্পাত আর বাধাসৃষ্টিতে। ইতিমধ্যে সরকার উপাচার্য-নিয়োগের রীতি দু’বার বদলেছে, তার ফলে সারস্বত নেতৃত্বের নিরিখে নিয়োগের সম্ভাবনা হয়ে পড়েছে ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর।
পঠনপাঠনের যাদবপুর, গবেষণার যাদবপুর কিন্তু এখনও বিদ্যমান ও সক্রিয়। এই মুহূর্তে প্রাঙ্গণের যে উত্তাল অবস্থা, পাঁচ-সাত বছর বাদে-বাদে এমন এক একটা বিপর্যয় কিছু দিনের জন্য এই অন্য যাদবপুরকে একটু সঙ্কুচিত করে ফেলে, শীঘ্রই তা ফিরে যায় নিজের খাতে।
এ বার কিন্তু ভয় হচ্ছে, সেই ফিরে যাওয়ার পথে কাঁটা পড়বে। কারণ এ বার বিশ্ববিদ্যালয়কে অভ্যস্ত ছন্দে ফিরে যাওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হচ্ছে না। সরকার তথা উপাচার্যের স্পষ্ট বার্তা, এই বেয়াড়া বিদ্যায়তনটিকে ভালরকম শিক্ষা দিতে হবে।
অতএব ছাত্র পেটানো হচ্ছে, প্রস্তাব হচ্ছে পুলিশ পিকেট বসাবার। এ সব নিয়ে অন্তত প্রতিবাদ হয়। কিন্তু একই সঙ্গে একটা সমান্তরাল প্রক্রিয়া চলছে, যা অদৃশ্য ও অহিংস, অথচ যার বিধ্বংসী প্রভাব আরও স্থায়ী ও সুদূরপ্রসারী। এর ফলে প্রচুর শিক্ষকপদ দীর্ঘদিন খালি পড়ে আছে। বহু অপরিহার্য কাজের ভিত্তি যে স্ট্যাটিউট ও অর্ডিন্যান্স, সেগুলি দীর্ঘকাল সরকারি অনুমোদনের অপেক্ষায়। যে আন্তর্বিষয়ক স্কুলগুলি যাদবপুরের শ্রেষ্ঠ গবেষণার একটা মস্ত অবলম্বন, সেগুলিকে অনাথ অবস্থায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
তেইশ বছর আগে সরকারি কলেজের হাঁফধরা আবহাওয়া থেকে যাদবপুরে এসে উদ্দীপ্ত হয়েছিলাম তার মুক্ত পরিবেশে। এর খারাপ দিক অবশ্যই ছিল: কিছু উচ্ছৃঙ্খলতা, প্রচুর শৌখিন পল্লবগ্রাহিতা। কিন্তু সঙ্গে ছিল ভাল দিকটা; স্বাধীন চিন্তা ও উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ, সেগুলি কাজে পরিণত করার জন্য বেশ কিছু প্রশাসনিক স্বাচ্ছন্দ্য। যাদবপুরে যে প্রাণবন্ত বিদ্যাচর্চার পরিবেশ পেয়েছি, তার মূলে এই মুক্ত বায়ুর সঞ্চার। তার শ্রেষ্ঠ প্রকাশ আর্ন্তবিষয়ক স্কুলগুলিতে, যার নজির ভারতে আর কোথাও নেই।
এই স্বাধীন স্বকীয় মনোভাব নিয়েই যেন কর্তৃপক্ষ সন্দিগ্ধ ও চিন্তিত। তাঁরা ঠিক ধরেছেন, এটাই নষ্টের গোড়া। চিন্তার স্তরে, রূপায়ণের স্তরে এটি বিনষ্ট করতে পারলে আর ছাত্র পিটিয়ে বদনাম কুড়োতে হবে না, আপনা-আপনিই সবাই পোষ মেনে যাবে।
শিক্ষায়তন রাজনীতির আখড়া নয়, পঠনপাঠন গবেষণার স্থান। গত ক’দিনের প্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা যাদবপুরের সদস্যদের বলেছেন। তাঁকে সভয় ও সনির্বন্ধ অনুরোধ, দয়া করে যাদবপুরকে সেই চোখে দেখুন। যদি তাকে দেখেন স্রেফ বিরোধী শক্তির আখড়া হিসাবে, সেইমত তার উপর পুলিশ-প্রশাসন চাপিয়ে দেন, প্রত্যুত্তরে সেই দিকটাই বেশি করে ফুটে উঠবে, দেশের একটি শ্রেষ্ঠ বিদ্যাস্থানের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক হবে বিপক্ষীয়।
তার বদলে তাকে দেখুন বিদ্যাকেন্দ্র হিসাবে। খোঁজ নিন, না হয় এসেই দেখে যান সেখানকার নানা দিকে প্রাগ্রসর গবেষণা, দেশি-বিদেশি অসংখ্য যোগ ও সম্মান, রাজনীতির বাইরে (ও অনেক বেশি মাত্রায়) ছাত্রছাত্রীদের অন্য হরেক চিন্তা ও বিনোদন। শেষ অবধি হয়তো আপনিও একমত হবেন, রাজনৈতিক যাদবপুরের যে জুজু পুলিশ-প্রশাসন নিজস্বার্থে গড়ে তুলেছে, তা গৌণ ও বহুলাংশে কাল্পনিক। জায়গাটার মুখ্য পরিচয় অন্যত্র, অন্য রূপে। এই খেয়ালি অস্বস্তিকর যাদবপুরকে বাগে আনার স্থূল তাত্ক্ষণিক উপায় পুলিশের লাঠি, সূক্ষ্ম ও সামগ্রিক উপায় আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক পুনর্গঠন। সেটাই আড়ালে-আবডালে অনেক দূর এগিয়েছে।
তিন শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক ক’দিন আগে এই পাতায় আবেদন জানিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় যেন না হয়ে ওঠে রাষ্ট্রশক্তির করদ রাজ্য। সেটা করতে পারলে অনেক আপদ বাঁচে ঠিকই, কিন্তু আমাদের উত্তরাধিকারের অবমাননা ও উত্তরাধিকারীদের বঞ্চনা করা হয়।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে এমেরিটাস অধ্যাপক
সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হন সংখ্যাগুরু পড়ুয়ারা, যাদবপুর প্রসঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্য বিচারপতির
উত্তাল যাদবপুর: শিক্ষামন্ত্রীর কাছে উপাচার্যের ইস্তফা দাবি জুটার, উপাচার্যের নিন্দায় সরব নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা
Students' Federation of India - West Bengal added 4 new photos.
রাজাবাজারে ভাঙলে তুমি, মারলে তুমি যাদবপুরে...
বুকচিতিয়ে এস.এফ.আই ব্যারাকপুরের রাস্তাজুড়ে...
Tintin Banerjee shared Students' Federation of India - West Bengal's status update.
Students' Federation of India - West Bengal added 13 new photos.
মারবে মারো লড়াই তবু চলবে,
রক্ত ঝরুক পাল্টা আগুন জ্বলবে।
No comments:
Post a Comment