BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Friday, April 17, 2015

আসামকে বাইরে রেখেই স্থলসীমান্ত চুক্তি?

আসামকে বাইরে রেখেই স্থলসীমান্ত চুক্তি?

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বহু প্রতীক্ষিত স্থলসীমান্ত চুক্তি থেকে এবার আসামকে বাদ রেখেই অনুমোদন করানোর উদ্যোগ নিয়েছে দিল্লি। আর একেবারে না হওয়ার থেকে অন্তত ভাল, এই মনোভাব থেকে কিছুটা নিমরাজিও হয়ে গেছে ঢাকার ক্ষমতাসীন সরকার।

না, এ ব্যাপারে কোনও অনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি ঠিকই, আর বিষয়টি এতটাই স্পর্শকাতর যে, ভারত সরকারের কর্তাব্যক্তিরাও প্রকাশ্যে একেবারেই মুখ খুলতে চাইছেন না। কিন্তু ভারতের প্রথম সারির বাণিজ্যিক পত্রিকা ইকোনমিক টাইমস রিপোর্ট করেছে, শাসক দল বিজেপির একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে তারা এ বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন। আর এই পুরো সিদ্ধান্তটাই নেওয়া হয়েছে আসামে আসন্ন নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই।

আসলে স্থলসীমান্ত চুক্তি নিয়ে বিজেপির ভেতরে যে বিরোধিতা, তার তীব্রতা সবচেয়ে বেশি ছিল আসামেই। এই চুক্তি ভারতের চারটি সীমান্তবর্তী রাজ্যকে প্রভাবিত করবে– পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয় আর ত্রিপুরা। চুক্তির খসড়ায় যে ব্যবস্থা সুপারিশ করা হয়েছে, তাতে এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আসামই। কারণ সে রাজ্যে বাংলাদেশ সীমান্তে বিতর্কিত ৬.১ কিলোমিটার অংশ নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির বিনিময়ে আসামকে প্রায় ২৬৮ একর জায়গা বাংলাদেশের হাতে তুলে দিতে হবে।

আপত্তিটা উঠছে ঠিক এখানেই, কারণ এই জমি ছাড়ার বিষয়টা আসামে ভীষণ আবেগের ইস্যু, সংবেদনশীলতার ইস্যু। বাংলাদেশ থেকে আসামে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের লাগাতার বিরোধিতা করেই বিজেপি ভারতের এই রাজ্যে ধীরে ধীরে পায়ের তলায় জমি তৈরি করেছে, সেখানে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারই যদি বাংলাদেশের কাছে নিজেদের ভূখণ্ড বিকিয়ে দেয় তাহলে বিজেপি কোন মুখে আসামে ভোট চাইবে? ঠিক এই প্রশ্নটা নিয়েই গত একমাস ধরে দলীয় সভাপতি অমিত শাহ'র কাছে দরবার করে আসছেন আসামের ছোট-বড় দলীয় নেতারা।

গত ডিসেম্বরেই আসামে এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, স্থলসীমান্ত চুক্তি অবিলম্বে পাস করানো দরকার, আর এতে আসামের সাময়িক ক্ষতি হলেও দীর্ঘমেয়াদে তাতে রাজ্যের ভালই হবে, আর ক্ষতিটাও তিনি পুষিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। মোদির এই কথা শুনে বিজেপির রাজ্য নেতারা নাকি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন, কারণ তাদের আশঙ্কা ছিল দলকে রাজি করালেও বাকি আসামকে তারা মোটেই এই যুক্তি গেলাতে পারবেন না!

অথচ বিজেপি ধরে রেখেছে আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে তারা প্রথমবারের মতো আসামের ক্ষমতায় আসতে চলেছে। গত বছরের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ১৪টি আসনের মধ্যে ৭টিই পেয়েছে তারা। ৩৬.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে অনেকটা পেছনে ফেলে দিয়েছে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেসকেও। এখন স্থলসীমান্ত চুক্তির ভূত যদি তাদের সেই বাড়া ভাতে ছাই দেয়, সেই আশঙ্কা থেকেই আসামের বিজেপি নেতারা তাদের হাই কমান্ডের কাছে চুক্তির বিরুদ্ধে তদবির শুরু করে দেন।

আর সেই পটভূমিতেই এখন মোটামুটি স্থির করা হয়েছে :

(ক) বিরতির পর ভারতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন ফের বসবে ২০ এপ্রিল থেকে, আর সেই অধিবেশনেই সরকার স্থলসীমান্ত বিলটি পেশ করবে।

(খ) কিন্তু আপাতত পশ্চিমবঙ্গ আর মেঘালয় সীমান্তের বিষয়টিই চুক্তিতে উল্লিখিত থাকবে, আসামকে চুক্তির বাইরে রাখা হবে কিনা সেটা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিবেচনা করা হচ্ছে। চুক্তিতে আসাম জমি হারালে তার কি রাজনৈতিক প্রভাব পড়ছে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে সেটাও।

(গ) তবে ইকোনমিক টাইমসের মতে, এখনও এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, প্রধানমন্ত্রী মোদি তার ইউরোপ ও কানাডা সফর থেকে ফিরেই এ ব্যাপারে শেষ কথা বলবেন।

আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এই চুক্তি নিয়ে সমঝোতা হয়েছে দুটো স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের মধ্যে। ভারত কিন্তু একতরফাভোবে এই চুক্তি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তবে তার পরও আসাম নিয়ে তাদের এই রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার বিষয়টি দিল্লি সুকৌশলে ঢাকার কাছেও উত্থাপন করেছে এবং জানা যাচ্ছে, আসামকে বাদ রেখেই আপাতত যদি চুক্তিটি পাস করাতে হয়, বাংলাদেশের তাতে তেমন আপত্তি নেই বলেও আভাস দেওয়া হয়েছে।

আসলে চুক্তিটি বেশ কয়েক বছর ধরে ঝুলে আছে এবং একেবারে না হওয়ার থেকে কিছুটা অন্তত হয়ে গেলে সেটা বাংলাদেশের জন্যও কাম্য। তারপর ২০১৬তে আসামের নির্বাচন মিটে গেলে আসাম-বাংলাদেশ সীমান্ত নিয়ে চুক্তিতে ঠিক কি করা যায়, হারানো জমির ক্ষতি অন্যভাবে পুষিয়ে দেওয়া যায় কিনা সেগুলো তখন দেখা যাবে– এমনটাই আপাতত ভাবা হচ্ছে।

ফলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে স্থলসীমান্ত চুক্তি ভারত যদি অনুমোদনও করে ফেলে– সেটা হবে আসাম-বর্জিত ও আংশিক, এই সম্ভাবনা কিন্তু থাকছে ষোলো আনাই!

No comments:

LinkWithin

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...