BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Monday, April 20, 2015

চীন ভারতকে ছিদ্র করে ফেলছে

image
চীন ভারতকে ছিদ্র করে ফেলছে | daily nayadiganta
ব্রিটিশ শাসনামলে কবি দার্শনিক ইকবাল তাঁর সাহিত্যজীবনের প্রথম পর্বে লিখেছিলেন :সারে জাহাছে আচ্ছা হিন্দুস্তান হামারা,হাম বুলবুলিঁ হ্যায় ইসকা, ইয়ে গুলিস্তাঁ হামারা।পার...
Preview by Yahoo
এবনে গোলাম সামাদ
১৭ এপ্রিল ২০১৫,শুক্রবার, ১৭:১৬ 
ব্রিটিশ শাসনামলে কবি দার্শনিক ইকবাল তাঁর সাহিত্যজীবনের প্রথম পর্বে লিখেছিলেন :
সারে জাহাছে আচ্ছা হিন্দুস্তান হামারা,
হাম বুলবুলিঁ হ্যায় ইসকা, ইয়ে গুলিস্তাঁ হামারা।
পার্বত হো সাবছে উঁচা হামসায়ে আসমান কা,
হো সানত্রি হামারা, হো পাসবান হামারা।
টানা বাংলা করলে দাঁড়াবে, বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর দেশ হলো আমাদের দেশ, হিন্দুস্তান। আমরা হলাম এর বুলবুলি। আর এ হলো আমাদের ফুলবাগান। সবচেয়ে উঁচু আকাশছোঁয়া পাহাড় হলো আমাদের। যা হর আমাদের সান্ত্রি ও প্রতিরক্ষক।
ইকবাল যখন এসব কথা লিখেছিলেন, তখন নেপালকে মনে করা হতো ভারতের অংশ। তাই সবচেয়ে উঁচু পাহাড় মাউন্ট এভারেস্টকে নিয়ে ইকবাল করেছিলেন গৌরব; কিন্তু এখন আর এই গৌরব করা চলে না। কেননা, মাউন্ট এভারেস্ট ভারতে অবস্থিত নয়। তা অবস্থিত হলো তিব্বত ও নেপাল সীমান্তে। তিব্বতি ভাষায় মাউন্ট এভারেস্টকে বলা হয়, 'কোমোলাংমো'। এই পর্বতশৃঙ্গ পড়ে মোটামুটি তিব্বতের মধ্যে। এবং সামান্য কিছুটা পড়ে নেপাল সীমান্তের মধ্যে। চীন এখন চাচ্ছে কোমোলাংমোর মধ্য দিয়ে সুড়ঙ্গ কেটে রেলপথ স্থাপন করতে, যা থেকে নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডুর দূরত্ব হবে মাত্র ১৬০ কিলোমিটার। নেপাল এই ১৬০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করবে। এর ফলে কাঠমুন্ডু থেকে ট্রেনে করে যাওয়া সম্ভব হবে তিব্বতের রাজধানী লাসা হয়ে বেইজিং। এই রেলপথের মাধ্যমে বিপুলভাবে বেড়ে যাবে নেপাল-চীন বাণিজ্য। ভারত যার সাথে পাল্লা দিয়ে পারবে না। বিষয়টি আমাদের জন্য মনে হয় হতে যাচ্ছে ভালো। কেননা, ভারত যদি আমাদের নেপালে যাওয়ার জন্য ট্রানজিট দেয়, তবে নেপালের মাধ্যমে বাড়ার সম্ভাবনা থাকছে বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্য।
নেপালের ইতিহাস অনুশীলন করলে আমরা দেখি যে, একসময় নেপালে ছিল অনেক রাজার রাজ্য- যা ভারতের রাজপুতনা অঞ্চল থেকে নেপালিরা যেয়ে জয় করেন ১৭৬৮ খ্রিষ্টাব্দে। নেপালিদের ভাষা ছিল নেপালি। নেপালিরা এই ভাষা চালু করে নেপালে সরকারি ভাষা হিসেবে। নেপালদের নাম অনুসারেই দেশটার নাম হয় নেপাল। নেপালিরা ছিল হিন্দু। তারা সেখানে হিন্দু ধর্মকে সরকারি ধর্ম হিসেবে ঘোষণা করে। বলে, নেপাল হলো একটি হিন্দু রাষ্ট্র; কিন্তু নেপালের বিরাটসংখ্যক মানুষই হলো এখনো বৌদ্ধ। আর এই বৌদ্ধধর্ম হলো তিব্বতের অনুরূপ। নেপালের সব লোক এখনো নেপালি ভাষায় কথা বলে না। নেপালি ভাষা হলো আর্যভাষা। তা লেখা হয় নাগরী অক্ষরে। কিন্তু নেপালে বহু লোক এখনো কথা বলে নেওয়ারী ভাষায়, যা হলো বৃহৎ চীনাভাষাপরিবারভুক্ত। নেওয়ারীরা হিন্দু নয়, বৌদ্ধ। গৌতম বুদ্ধ জন্মেছিলেন নেপালের লুম্বিনী শহরে। তাই অনেকে মনে করেন গৌতম বুদ্ধ আসলে ছিলেন বৃহৎ মঙ্গলীয় মানবধারাভুক্ত মানুষ। যেহেতু গৌতমবুদ্ধ ছিলেন মঙ্গলীয় মানবধারাভুক্ত মানুষ, তাই তার ধর্ম সহজেই বিস্তারিত হতে পেরেছিল বৃহৎ মঙ্গলীয় মানবধারাভুক্ত মানুষের মধ্যে। ভারতে হিন্দু ধর্মের চাপে বৌদ্ধ ধর্ম বিলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু তা টিকে আছে প্রধানত মঙ্গলীয় মানবধারাভুক্ত বিভিন্ন জাতির মধ্যে।
নেপালকে আগে ঠিক একটি পুরোপুরি স্বাধীন দেশ বলা যেত না। কেননা, ১৮১৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত হতো ভারতের ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক। কিন্তু নেপাল এখন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। কারণ, তার পররাষ্ট্রনীতি আর ভারতের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে না, যদিও ভারত চেয়েছিল ভারতের দ্বারা নেপালে পররাষ্ট্রনীতি নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। নেপাল হিন্দুরাষ্ট্র, কিন্তু নেপালের সাথে এখন ভারতের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। নেপালবাসী ঝুঁকে পড়ছে চীনেরই প্রতি। নেপালের সংস্কৃতি আসলে ভারতের সংস্কৃতির সাথে মেলে না। নেপালের ভাস্কর্যের ওপর রয়েছে তিব্বতের বিরাট প্রভাব। নেপালের বাড়িঘরের ওপর আছে চীনের বাড়িঘর তৈরির বিশেষ প্রভাব। নেপালের স্থাপত্য আর ভারতের স্থাপত্য এক নয়। প্রাচীনকালে নেপালের ব্যবসাবাণিজ্য চলেছে তিব্বতের সাথে নোলা গিরিপথ দিয়ে। এখন তা শুরু হতে যাচ্ছে রেলপথের মাধ্যমে; যে রেলপথ স্থাপিত হতে যাচ্ছে মাউন্ট এভারেস্ট বা কোমোলাংমো ভেদ করে।
নেপালের ওপর ভারত এখন আর আগের মতো চাপ সৃষ্টি করতে পারবে না। কেননা, তেমন চাপ সৃষ্টি করতে গেলে বিবাদে জড়িয়ে পড়তে হবে চীনের সাথে। চীনের সাথে ১৯৬২ সালে সেপ্টেম্বর মাসে হয়েছিল সীমান্তসংঘর্ষ। এই সংঘর্ষে ভারত পরাজিত হয়েছিল খুবই করুণভাবে। চীন তার দাবি অনুসারে দখল করে নিয়েছে পূর্ব ও পশ্চিমে উভয় সীমান্তে ২৪০০০ বর্গকিলোমিটার, যা সে ভারতকে ছেড়ে দিতে ইচ্ছুক নয়। আর ভারতের পক্ষেও সম্ভব নয়, সামরিক অভিযান চালিয়ে চীনের কাছ থেকে এই জায়গা দখল করে নেয়া। নেপালে তাই চীনের প্রভাব বাড়লে ভারতের পক্ষে নেপালকে আর ধমক দেয়া সম্ভব নয়। নেপাল আর এখন ভারতের বলয়ভুক্ত কোনো রাষ্ট্র নয়। নেপালে ভারতের প্রভাব কমার একটা অর্থ দাঁড়াবে বাংলাদেশেও ভারত লবির প্রভাব-প্রতিপত্তি আর আগের মতো বজায় না থাকা।
বাংলাদেশ সার্ক গঠনে উদ্যোগ নিয়েছিল। প্রধানত তারই উদ্যোগে নেপালের রাজধানীতে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে সার্কের সদর দফতর। যেহেতু কাঠমুন্ডু হয়েছে সার্কের সদর দফতর, তাই এই অঞ্চলের রাজনীতিতে বেড়ে যেতে পেরেছে নেপালের ভৌগলিক গুরুত্ব। চীন একসময় চেয়েছিল নেপাল, সিকিম ও ভুটানকে একত্র করে একটি হিমালয়ান কনফেডারেশান গড়তে। ভারত এটা হতে দিতে চায় না। তাই সে দখল করে নেয় সিকিম। কিন্তু নেপাল ও ভুটানকে দখল করেতে পারে না। কেননা, রাজ্য হিসেবে নেপাল ও ভুটান ছিল অনেক বেশি স্বাধীন; ঠিক সিকিমের মতো আশ্রিত নয়। চীন বহু দিন সিকিমকে ভারতের অংশ বলে মানতে চায়নি; কিন্তু এখন সে সিকিম নিয়ে থাকছে নীরব। তার প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে নেপালকে পক্ষে পাওয়া। আর এভারেস্ট পর্বত ভেদ করে রেলপথ স্থাপন করলে এ ক্ষেত্রে চীন পেতে পারবে একটা বড় রকমের সাফল্য। চীনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভারেস্ট পর্বতশৃঙ্গের মধ্য দিয়ে সুড়ঙ্গ কেটে তারা রেলপথ নির্মাণ করতে পারবেন মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে। সুড়ঙ্গ কেটে রেলপথ করা এখন আর আশ্চর্য কিছু হয়ে নেই। ইউরোপের আল্পস পর্বতমালা ভেদ করে রেলপথ স্থাপিত হয়েছে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে। এখন এ বিষয়ে মানুষ যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পেরেছে। চীন এই অভিজ্ঞতাকে সহজেই তার কাজে লাগাতে পারবে।
এভারেস্ট পর্বতশৃঙ্গ একসময় ছিল সমুদ্রের নিচে। পরে ঘটতে পেরেছে তার উদ্ভব। এর প্রমাণ পাওয়া চলে এভারেস্ট পর্বতমালার উপরিভাগে পাওয়া প্রবালপথর থেকে। এভারেস্টের উপরিভাগে অনেকখানি হলো চুনাপাথর। কিন্তু এই চুনাপাথর সহজেই ক্ষয় হতে পারে না। কেননা, তা ঢাকা থাকে বরফের দ্বারা। যাকে বলে হিমালয় পর্বতমালা, তাতে রয়েছে অনেক রকম পাথর। এভারেস্টের গোড়ার এবং মাথার পাথর একই রকম নয়। গোড়ার পাথর হলো রূপান্তরিত শীলা, যা খুবই শক্ত। কিন্তু এখনকার কৃত কৌশলে যাকে কেটে শুড়ঙ্গ করা মোটেও কঠিন কাজ নয়। যেহেতু এভারেস্টের নিচের শীলা রূপান্তরিত কঠিন শীলা, তাই তা ভেঙে পড়ার সম্ভাবনাও কম, সুড়ঙ্গ কাটতে যেয়ে। চীন বলছে সে এই সুড়ঙ্গ কাটতে যাচ্ছে নেপালের বিশেষ অনুরোধে। কেননা, নেপাল যাচ্ছে চীনের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে। ভারত এটাকে ভালো চোখে দেখছে না। কিন্তু আপাতত ভারতের এ ক্ষেত্রে কিছু করণীয় নেই। কেননা, নেপাল এখন আন্তর্জাতিকভাবে একটা স্বীকৃত স্বাধীন দেশ। সে যেকোনো দেশের সাথে স্বাধীনভাবে যেকোনো রকম চুক্তি করতেই পারে।
==
লেখক : প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট

No comments:

LinkWithin

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...