#hokkolorob_live
শাসকের রক্তচক্ষুকে কিসের ভয়, ওদেরই তো সবচেয়ে বেশি ভয়!
হংকং লড়ছে, আমরা নামছি...
#হোককলরব বন্ধ হয় না । না ।না ।না ।
রাজা ক্রমশ ন্যাংটো হচ্ছেন... সপ্তমীতে যোধপুর পার্ক, অষ্টমীতে ম্যাডক্স স্কোয়ারের পর নবমীতে লাবণিতে চলছিল #হোককলরবের সমর্থনে শান্তিপূর্ণ জমায়েত,পোষ্টার লেখা,গান বাজনা। পুলিশ সেখান থেকে আমাদের ১৩জন বন্ধুকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়!! পূজোর মধ্যেও ছাত্রীছাত্ররা যাদবপুরের সমর্থনে রাস্তায় জেগে ছিলেন ।
পলাশ বিশ্বাস
শাসকের রক্তচক্ষুকে কিসের ভয়,ওদেরই তে সবচেয়ে বেশি ভয়!
ছাত্র দলের ঐক্য সুর
শহবাগ থেকে যাদবপুর
জামাতঃসঙ্ঘী ভাই ভাই
এক দড়িতে ফাঁসি চাই
রাজা ক্রমশ ন্যাংটো হচ্ছেন... সপ্তমীতে যোধপুর পার্ক, অষ্টমীতে ম্যাডক্স স্কোয়ারের পর নবমীতে লাবণিতে চলছিল #হোককলরবের সমর্থনে শান্তিপূর্ণ জমায়েত,পোষ্টার লেখা,গান বাজনা। পুলিশ সেখান থেকে আমাদের ১৩জন বন্ধুকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়!! পূজোর মধ্যেও ছাত্রীছাত্ররা যাদবপুরের সমর্থনে রাস্তায় জেগে ছিলেন ।
এখনো বন্ধুরা লিখে চলেছেনঃ
লাঠির ঘায়ে যে তরুণের ফাটল মাথা সে হতে পারত তোমার ভাই, তবে আজ তুমি কেন চুপচাপ ? চলো, নামতে হবে রাস্তায়। রাস্ট্রযন্ত্র নাড়ুক কলকাঠি তবু প্রতিবাদের গান গাই, প্রেম বেমানান কন্ঠস্বরে চলো, নামতে হবে রাস্তায়। যারা নিন্দা করে, করুক, জেনো শত্তুরের মুখে ছাই বিক্ষুব্ধ সময় দিচ্ছে ডাক, চলো, নামতে হবে রাস্তায়।
এখনো বন্ধুরা লিখে চলেছেনঃ
বৃষ্টির শব্দ ছাপিয়ে স্লোগান আঁছড়ে পড়েছে মায়ও রোডে. কমরেড ব্যারিকেড গড় ; ব্যারিকেড ! রাজপথ তোমার আমার ;. কলকাতার গাঢ়তম লাল ফুল ফুটবেই ! কলকাতার দৃঢ়তম মুঠোবাঁধা. সেই লক্ষ জনতার মিছিল আমার জীবনের ! শাসক-শাসক-অপশাসক তুমি নিপাত যাও ,. লক্ষজোড়া হাত একসারে. মহানগর জুড়ে সাহসী কথারা. ভয় কাটুক ; ভয় !
কেন ছিলাম?? স্ল্যাশ হোককলরব কোন সেলিব্রিটি নয়, ইন্টেলেকচুয়াল নয়, আঁভা গার্দ নয়, রেট্রো নয়… কারন তাকে গলার গর্জনে অনায়াসে বসানো যায়, হোককলরব… কারন তাকে হাততালিতে দোলানো যায়, হোককলরব… কারন তাকে ফিসফিস থেকে চীৎকার সমস্তকিছু অর্পন করা যায়,হোককলরব……
খবরের কাগজ বেরোয় নি মমম মহোত্সবে!!
চক্ষুদান যিনি করেছেন.বিসর্জনেও তিনিই নিয়ে যাবেন!!
মাঝখানে ধানাই পানাই প্যানপ্যানানি বাদে,এমনকি সবজান্তা প্যানেল বোদে সারা বঙ্গে গাজনের মেলা!!
প্যান্ডেনে প্যান্ডেলে ধুনুচি নাচ,সিন্দুর খেলা,আরও বনেদি বাড়ির পুজোর গুঁতো!!
লাল সুতো নীল সুতো একাকার!!
কোথায কে মরল,কি ঘটল দেশে কিংবা বিদেশে,কি জানার দরকার পড়েছে!!
তথ্য প্রযুক্তি অত্যাধুনিকতায় তথ্য অন্ধকার!!
সোশাল মীডিয়ায় আবাহন করে তবু ছেলে মেয়েগুলো সপ্তমীতে যোধপুর পার্ক, অষ্টমীতে ম্যাডক্স স্কোয়ারের পর নবমীতে লাবণিতে জড়ো হয়েছিল প্রতিবাদের আগুন মশাল হাতে হাতে নিয়েসপ্তমীতে যোধপুর পার্ক, অষ্টমীতে ম্যাডক্স স্কোয়ারের পর আজ নবমীতে লাবণিতেো!!
নিঃশব্দ ঘাতকের মতো পুলিশ তাঁদের তুলে নিয়ে গেল,আমরা জানতেই পারলাম না!!
কোথাো কোনো খবর নেই মমম মহোত্সব ছাড়া!!
বুদ্ধ হাসছে, সততা ফাঁসছে, মোদী দিচ্ছে ঝাঁট
১টা যাদবপুর নগ্ন করেছে রাজনীতির সাঁট #হোককলরব
Just like yesterday's rally in front of Maddox square a similar peace protest was going on at Laboni today round 5:30.
Within few moments as they started singing 15-20 who were there were all arrested by police and have been taken to Bidhan Nagar Thana North simply on this ground that they did not had the permission to conduct a peace protest rather simply they did not had the permission to sing.
It isn't democracy.
We demand their quick release.
সল্টলেক অঞ্চলে যাদবপুর কাণ্ডে প্রতিবাদরত ১৩জন ছাত্র-ছাত্রীকে আটক করে বিধাননগর উত্তর থানায় তুলে নিয়ে গেল পুলিস। এখনও পর্যন্ত থানায় আটক করে রাখা হয়েছে তাদের।
যাদবপুরে ছাত্রীর শ্লীলতাহানি ও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে 'হোক কলরব' নামে নবমীর দিন লাবণীতে প্রতীকী প্রতিবাদের আয়োজন করেছিলেন বিভিন্ন কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। সঙ্গে ছিলেন এই আন্দোলনের সমর্থনকারী বেশ কিছু সাধারণ মানুষও।
প্রতিবাদকারীদের অভিযোগ তাঁরা বাস স্টান্ডে বসে পোস্টার লিখছিলেন ও গান করছিলেন হঠাৎ করেই পুলিস সেখানে এসে তাঁদের জানায় তাঁরা সেই জায়গায় প্রতিবাদ জানাতে পারবেন না। ছাত্র-ছাত্রীরা তা অস্বীকার করায় পুলিস তাঁদের আটক করে। আটক করা ছাত্র-ছাত্রীদের বিরুদ্ধে ১৫১ ধারায় মামলা তৈরি করা হয়েছে।
তবু কিল্তু বন্ধুরা লিকে চলেছেন মুক্তির গান।
লিখেছেনঃ
#হোককলরব বন্ধ হয় না ।
হোক কলরব ‘বাম’ আমলের কারখানা নয় যে লকআউট হয়ে যাবে । হোক কলরবের কোন সাসপেনসন অফ ওয়ার্ক নেই । চারিদিকে একটা অদ্ভুত প্রশ্নহীন সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছিলাম । মেনে নিচ্ছিলাম । কষ্ট হলেও, নম্বর কমিয়ে দেবে, ইউনিয়ন রুমে ঢুকিয়ে থ্রেট করবে বলে ভয়ে কুঁকড়ে গেছিলাম । কালান্তরে রবীন্দ্রনাথ লিখছেন “আমি যখন প্রশ্ন করতে যাই, বিচার করতে যাই, আমার হিতৈষীরা ব্যাকুল হয়ে আমার মুখ চাপা দিয়ে ….
তবু কিল্তু বন্ধুরা লিকে চলেছেন মুক্তির গান।
লিখেছেনঃ
#হোককলরব বন্ধ হয় না ।
আজ লাবনীতে (সল্টলেক) ছাত্রীছাত্ররা গান বাজনা করছিলেন । VC’ পদত্যাগের দাবীতে পোস্টার লেখা । পূজোর মধ্যেও ছাত্রীছাত্ররা যাদবপুরের সমর্থনে রাস্তায় জেগে ছিলেন । খবর পেলাম পুলিশের বিশাল বাহিনী এসে তাদের তুলে নিয়ে গেছে ।
তুমি দেহটাকে ধরলে পুলিশ । আমাদের গানওলা তো গেয়েছেন ধরা পড়ে গেল দেহটাই শুধু, ধরা পড়বেনা মন । যত হামলা করো সব সামলে নেব, চ্যালেঞ্জ তোমায় যদি রুখতে পারো... পুজো শেষ এবার আবার দেখা হবে সম্মুখ সমরে...
হংকং লড়ছে, আমরা নামছি...
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক, টুইটারে ‘হোককলরব’ হ্যাশ ট্যাগ ব্যাবহার করে আন্দোলনের কথা ছড়িয়ে দিচ্ছেন তারা। #হোককলরব লেখা ব্যানারও ব্যাবহার করছেন ক্যাম্পাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা।
রাজা রানি ক্রমশঃ প্রকাশ্য পারদর্শী পোশাকের এই জ্বালা।
ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশাল মিডিয়ায়, যেখানে প্রতিবাদজনিত যাবতীয় সংবাদ পর্যায়ক্রমিক ভাবে সম্প্রচারিত হতে থাক #হোককলরব (#hokkolorob) হ্যাশট্যাগের সাথে!!
#HokKolorob #হোক_কলরব #হোক #Hok #হোককলরব !!
সীমানা ডিঙিয়ে শাহবাগ যাদবপুর একাকার,যাদের চোখে শুধুই অন্ধকারের রাজত্ব তাঁরা দেখেও দেখছেন না
সীমানা ডিঙিয়ে শাহবাগ যাদবপুর একাকার,যাদের কানে বাজে না প্রতিবাদের সুর,তাঁরা শুনেও শুনছেন না
আওয়াজ দিচ্ছে শাহবাগঃ
অনেক দূর থেকেও তোমাদের পাশে আছি, আমার মানচিত্র থেকে তোমাদের মানচিত্রে । #হোককলরব!!
শাহবাগ থেকে যাদবপুর, এক বাংলার একই সুর। #জয়বাংলা... #হোককলরব!!
#হোককলরব. যদি ওরা কামান আনে পথে, আমরা হাত মেলাবো হাতে; যদি করতে চাই বিরোধ- করুক, loss টা খাবে খোদ। আরে মশাই আছে সময় ভাবুন করবেন কোনটা যপ ।
লিখেছেন কবীর সুমনঃ কলকাতা। 56.158 জনের পছন্দ · 5.270 জন এটা নিয়ে কথা বলছেন। কবীর সুমনেরফ্যান পেইজ। ... না কি ছাত্ররা সত্যি সত্যিই একটা ছোট ঘটনাকে খুঁচিয়ে ঘা করেছে?? কিন্তু আজ আমার সব সংশয়ের অবসান হল। ধন্যবাদ দিয়ে আপনার অবদানকে ছোট করব না কিন্তু আপামর ছাত্রসমাজের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকলাম। #হোককলরব.
আরো লেখা হলঃরাণীমা ছি পি এমের সুযোগ্যা উত্তরসূরী, নতুনত্ব বলতে তিনি রাজনীতিতে কিছু রংচং মাখা সং আমদানি করেছেন (দয়া করে কবীর সুমনকে এই দলে ফেলবেন না)। আমাগো পেরাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে "সূর্যোদয়"-র (বাপ্রে বঙ্গীয় ছি পি এম "সূর্যোদয়" ও ঘটাতে পারে) পর কইসিল "We have paid them by their own coins".আর অখন রাণীমাও…
শামসুন্নাহার হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (২০০২) ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৪): হোক কলরব,'ইস্ক্রা' ছড়াক এপারে ওপারে ... ও অরাজনৈতিক ছাত্র-ছাত্রী, বিভিন্ন পত্রিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রতিবেদক সহ সবাই আমরা প্রশাসন ও পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে শুরু করলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন। 'ছি: ছি: আনোয়ার! তুই একটা জানোয়ার!' ক্ষমতাসীন দলের বশংবদ ভিসি অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরীর নামে এই শ্লোগানেই ২০০২-এর অগ্নিগর্ভ জুলাইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী (বিদ্যমান ও প্রাক্তন …
কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি নিগ্রহের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সল্টলেকে গ্রেফতার পড়ুয়ারা। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর জামিনে মিলল মুক্তি। পুলিশের দাবি, পড়ুয়ারা রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করছিলেন, তাই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। যদিও পড়ুয়াদের অভিযোগ, প্রতিবাদের কণ্ঠরোধ করতেই পুলিশের এই তৎপরতা।
ক্যাম্পাসের মধ্যে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভ করতে গিয়ে মাঝরাতে পুলিশের হাতে লাঠিপেটা হয়েছিলেন তাঁরা।। সেই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ফের গ্রেফতারি।
যাদবপুরকাণ্ডের পর প্রতিবাদীদের ‘হোক কলরব’ স্লোগান ঝড় তুলেছিল শহর জুড়ে। পুজোর মধ্যেও প্রতিবাদের সেই স্বর মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে তৎপর হন তাঁরা। সেই কর্মসূচিতে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাও। শুক্রবার তাঁরা সল্টলেকে একটি আবাসন চত্বরে গান-আবৃত্তি, পোস্টার-স্লোগানের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন নিজেদের প্রতিবাদের ভাষা। পড়ুয়াদের দাবি, সন্ধে ছ’টায় আচমকাই সেখানে হাজির হয় বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ। প্রথমে তাঁদের সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয়। তাঁরা রাজি না হলে পুলিশকর্মীরা জোর করে ১৩ জনকে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যান। সেখানে তাঁদের গ্রেফতার দেখানো হয়। ধৃতদের মধ্যে যাদবপুর ছাড়াও ছিলেন সেন্ট জেভিয়ার্স, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন পড়ুয়া।
পুলিশের দাবি, ওই ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করছিলেন। তাই ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৫১ ধারায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু সেই দাবি মানতে নারাজ প্রতিবাদী পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিবাদ পণ্ড করতেই পুলিশের এই তৎপরতা।
যাদবপুরকাণ্ডের পর এই ঘটনাতেও পুলিশের ভূমিকার প্রতিবাদে সোচ্চার যাদবপুরের ছাত্র-ছাত্রী থেকে প্রাক্তনীরা। গ্রেফতারির প্রায় দেড় ঘণ্টা পর এদিন সন্ধে সাতটা নাগাদ বিধাননগর উত্তর থানা থেকে জামিনে মুক্তি পান ১৩ জন পড়ুয়া। পুলিশের গাড়িতেই তাঁদের উল্টোডাঙায় নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
Such a nice feeling to see that supporters have joined us during the puja . A nice protest is going on just outside the main entrance of Maddox Square.
You can also join in
LATHIR MUKHE GANER SURE
JANIO DILO JADAVPUR E.
Status Update
By Hokkolorob
IF YOU ARE A TRUE SUPPORTER YOU WILL SHARE IT AND YOU WILL SPREAD IT AND YOU WILL READ IT.
Source: Times of India Page-4
Hokkolorob, the social networking page that triggered a students' movement just a week ago, is under scanner. The cyber cell of the DETECTIVE department has lodged an FIR based on a complaint filed by the Jadavpur University molestation survivor. Ironically, the entire movement owns its genesis to the "injustice" that this survivor was subjected to by the administration of her alma mater, Jadavpur University.
According to top Lalbazar sources, the girl had herself come down to Lalbazar and lodged the written complaint to what she claimed was "a deliberate attempt" to malign her image on the popular social networking site. The objectionable post came after her father expressed hope in the government probe and said he was no more supporting the stepping down of Jadavpur VC Abhijit Chakraborti. He also urged the students to return to the classes.
"We have registered a case under the IT Act," said Pallab Kanti Ghosh, joint CP (crime) refusing to elaborate further. The FIR has been registered under section 66 of the IT Act. "Any person who sends, by means of a computer resource or a communication device, — (a) any information that is grossly offensive or has menacing character; or (b) any information which he knows to be false, but for the purpose of causing annoyance, inconvenience, danger, obstruction, insult, injury, criminal intimidation, enmity, hatred or ill will, persistently by making use of such computer resource or a communication device," the law reads. The crime, if proved, shall be punishable with imprisonment for a term which may extend up to three years and with fine.
ANSWER TO THE ACCUSED CRIME
To this my answer: “Our page has never used anything that has been or even in the future will be harmful for the Girl who has accused us of such crime. We demanded for her justice and didn't point a finger towards her. Second our page makes it clear that the Finger is not pointed to any individual but all that belong to this society. The society is not only police and political parties but the common man in each and every one of them. Our culprit is the common man for resisting all malice’s till this date. After this statement if we are believed to be your culprits then we have nothing more to say.”
When the situation demanded we supported JU students in spite of not being from JU. Now time demands your help. We just expect support from the odd 50,000 people on this page. Hope all the Hokkolorobi understands us well. We also want legal advisers in this page to message us. Thank you.
From a Fellow Hokkolorobi.”
হোক্কলরব গ্লোববরাবর
ক্যাটেগরি:
'হোক্কলরব' নামে এই যে শ্লোগান এবং হ্যাশট্যাগটা এখন আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও দিব্বি জায়গা করে নিয়েছে, তার শুরুটা কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের এই পচাগলা রাজনীতির আর পাঁচটা ঘটনার মতই হয়েছিল| পশ্চিমবঙ্গে 'শ্লীলতাহানি' আর 'ধর্ষণ' আজকাল 'হাসি' আর খুশী'র মতই হরহামেশা খবরের কাগজের পাতায় বা মানুষের আলোচনায় থাকে| তো সেই নিত্যনৈমিত্তিক প্রাত্যহিকতায় 'যাদবপুরের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি'র অভিযোগকে তেমন গুরুত্ব দিয়ে ফলো করার কথা অনেকেই ভাবেন নি| বরং বিশ্বভারতীর যে ছাত্রী ধর্ষণের বিচার চেয়ে না পেয়ে পড়া ছেড়ে সিকিমে ফেরত চলে গেল, তাকে নিয়ে কিছু আন্দোলন হল না কেন সেই নিয়েই আলোচনা চলছিল কোথাও কোথাও| তো, আসুন প্রথমে একটু ঘটনাক্রমটা দেখে নিই
২৮ আগস্ট-- যাদবপুরের উৎসব 'সংস্কৃতি ' চলাকালীন ইতিহাসের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী কিছু ছাত্রের হাতে নিগৃহীত হন বলে অভিযোগ। 'ইউথ কি আওয়াজ' এ সৃষ্টি দত্ত চৌধুরির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযোগকারিণী বাথরুমের অভাবে ছেলেদের হস্টেলে ঢুকেছিলেন, তাঁর এক 'বহিরাগত' পুরুষবন্ধুর সঙ্গে। বেরোনোর সময় হস্টেলের একদল ছেলে কটুক্তি করে। বচসা হয়, এবং, টেনে নিয়ে যাওয়া হয় হস্টেলের ভিতরে। পুরুষবন্ধুকে মারা হয়। মেয়েটিকে মারধন ও নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ।
২৯ আগস্ট -- য়েটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। ভিসির সঙ্গে মিটিং হলে তিনি জানান, বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে হলে ১৫ দিন সময় লাগবে। ততদিন নিরাপত্তাজনিত কারণে যেন মেয়েটি কলেজ থেকে দূরে থাকেন।
২ সেপ্টেম্বর -- মেয়েটি যাদবপুর থানায় এফ আই আর করেন| এখানে উল্লেখ করে রাখা যাক ছাত্রীটি তৃণমুল ছাত্র পরিষদের হয়ে প্রাথী হয়েছিলেন|
৩ সেপ্টেম্বর -- ত্র-ছাত্রীরা একটি সাধারণসভা করে ডিন অফ স্টুডেন্টের কাছে একটি ডেপুটেশন দেয়। সেখানে একটি "নিরপেক্ষ" তদন্ত কমিটির দাবী করা হয়। তদন্ত কমিটির মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, একজন মানবাধিকার কর্মী থাকবেন, এরকম সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবও দেওয়া হয়। সাতদিনের মধ্যে এই অনুযায়ী কাজ করে সকলকে অবহিত করারও দাবী জানানো হয়।
৫ সেপ্টেম্বর -- ছাত্রছাত্রীরা মিছিল করে যাদবপুর থানা পর্যন্ত যায়| মেয়েটি হামলাকারী বলে একজনকে চিহ্নিত করেন| পুলুশ বলে ব্যবস্থা নিতে আরও সময় প্রয়োজন|
৮ সেপ্টেম্বর -- -আই-পি-ডাব্লিউ-এ ও সাধারণ ছাত্রদের একটি প্রতিনিধিদল প্রো-ভিসির কাছে যান। কিন্তু কোনো খবর পান না। একটি মিছিল হয় ক্যাম্পাসে। আইসিসি (ইনটারনাল কমপ্লেন কমিটি) থেকে কলা বিভাগ ছাত্র সংসদের প্রতিনিধি পদত্যাগ করেন। আইসিসি সদস্যদের আটকে রাখা হয়।
৯ সেপ্টেম্বর -- বাংলা সংবাদপত্র 'এই সময়' এ আইসিসির একজন সদস্যের বয়ান প্রকাশিত হয়, যেখানে তিনি তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। ছাত্রছাত্রীরা একটি সাধারণ সভা ডাকে। যেহেতু ঘটনাটা পুরোটাই সিসিটিভির আওতায় ঘটেছে, তাই সিসিটিভির ফুটেজ দেখিয়ে অভিযোগের প্রমাণ দাবী করা হয়।
১০ সেপ্টেম্বর -- অরবিন্দ ভবনের সামনে ধর্ণা শুরু হয়|
১৬ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা -- লিশ, র্যাফ, এবং শাসকদলের লোকজন জড়ো হয় ক্যাম্পাসে। বড়ো গন্ডগোলের আশঙ্কায় ছাত্রছাত্রীরা ফেসবুকে সকলকে জড়ো হবার আহ্বান জানান। পুলিশকে জানানো হয় ভিসি একটি বিবৃতি দিলেই তাঁরা এলাকা ছাড়বেন। পুলিশ ভিসির সঙ্গে দেখা করতে যায়।
রাত ১১টা -- প্রেসিডেন্সির একটি দল যাদবপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়| ছাত্ররা বিভিন্ন উপায়ে জানান, সংঘর্ষ শুধু সময়ের অপেক্ষা। পুলিশ শুধু প্রেসের এলাকা ছাড়ার অপেক্ষা করছে।
১৭ সেপ্টেম্বর ভোর ২টো --- পুলিশ সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে ক্যাম্পাসে আবার প্রবেশ করে। কিছুক্ষণ পরেই আক্রমন শুরু হয়। হঠাৎ অরবিন্দ ভবন এলাকার সমস্ত আলো নিভে যায়| লাঠি চলে। মারধোর করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় কিছু ছাত্রকে, একজনকে তৎক্ষণাৎ আইসিইউতে নিতে হয়। গ্রেপ্তারও হন কিছু ছাত্র। ছাত্রদের পোস্টারে দেখা যাচ্ছে, ৩৬ জন হাসপাতালে।, ৪০ জন গ্রেপ্তার।
১৭ সেপ্টেম্বর ভোর ৪টে --- ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস বয়কটের ডাক দেন, ভিসির পদত্যাগ দাবী করেন|
এরপরে অনেককিছু একসাথে ঘটে যেতে থাকে| প্রকাশ্যে আসে ঘটনার ভিডিও| আবাপ-আনন্দ দেখায় হঠাত করে একসাথে অরবিন্দ ভবনের সামনের আলো নিভে যাওয়া আর তারপরেই পুলিশের মার, সাথে কিছু টি-শার্টপরা লোকও লাঠি নিয়ে নির্মমভাবে মারছে| এদের আনন্দ নাম দেয় 'গেঞ্জি পুলিশ'| আরো দেখায় তার আগে ছাত্রছাত্রীরা বসে বসে কেউ গান গাইছিল, কেউ মাউথ অর্গ্যান বা গীটার বাজাচ্ছিল| তৃণমুল শিবির থেকে প্রচার শুরু হয় ছাত্রছাত্রীরা এ ওর গায়ে হেলান দিয়ে বসে আছে - এ কি আন্দোলন না অন্য কিছু? ছাত্রীদের পরণের হটপ্যান্টের দিকে কটাক্ষ করে মুলোদের কদর্য্য সব পোস্ট আসতে থাকে ফেসবুকে| খেয়াল রাখতে হবে ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দুটি বিধানসভা আসনের অন্তর্বর্তী নির্বাচনের ফল বেরিয়েছে| বসিরহাটে বিজেপী এবং কলকাতার চৌরঙ্গীতে তৃণমুল জিতেছে এবং সিপিএম একটিতে পঞ্চম ও অন্যটিতে চতুর্থ স্থানে আসায় পুরোপুরি জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে| ক্রমশ প্রকাশ হয় পুলিশবাহিনীতে দশ জনের একটি কম্যান্ডো বাহিনীও ছিল| ভিসি নাকি জানিয়েছিলেন ছাত্ররা তাঁকে মেরে ফেলতে চলেছে, অতএব অবিলম্বে পুলুশ নামিয়ে তাঁকে মুক্ত করা হোক| ধর্ণার সময় ছাত্রদের দাবীমত তিনি তাঁদের সাথে কোনও আলোচনায় বসেন নি কেন? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে ভিসি জানান ছাত্রদের সাথে কথা বলতে তাঁর ডিগনিটিতে বাধে, এর জন্য তাঁকে রাখা হয় নি| তাছাড়া ছাত্ররা তাঁর 'চামড়া গুটিয়ে নেবে' বলে শাসিয়েছে| ডিজি সুরজিত কর পুরকায়স্থ জানান ছাত্ররাই আসলে পুলিশকে মেরেছে, কোনও ছাত্রকেই মারা হয় নি আর ছাত্ররাই সমস্ত লাইট ভেঙে দিয়েছিল| আনন্দ বারবার ভিডিও ক্লিপ দেখায় হঠাৎ একসাথে সমস্ত আলো নিভে যাবার, সমস্ত আস্ত বালবের, জানায় আলোর স্যুইচ আছে ভেতরে, ছাত্ররা যেখানে বসেছিল ধর্ণায়, তাদের আওতার বাইরে| ডিজি জানান ছাত্রদের সাথে বহিরাগত মাওবাদীরা ছিল হাতে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে| টিভি চ্যানেলগুলোতে বারবার দেখানো হয় গীটার মাউথ অর্গ্যানের ছবি ছাত্রদের হাতে|
সমাজের সর্বস্তরে এই নিয়ে প্রবল ক্ষোভ সৃষ্টি হয়| প্রতিবাদ আসে শঙ্খ ঘোষ, সুমন মুখোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, মীরাতুন নাহার, বিভাস চক্রবর্তী, প্রতুল মুখোপাধ্যায় প্রমুখ বিশিষ্ট্ট গুণীদের তরফ থেকেও| ২০শে সেপ্টেম্বর মিছিলের ডাক দেওয়া হয়| শ্লোগান ওঠে হোক্কলরব গ্লোববরাবর| অর্ণবের একটি গান থেকে নেওয়া 'হোক হোক হোক কলরব' শব্দগুচ্ছ| ১৯ তারিখ রাতে অভিষেক ব্যানর্জী ফেসবুকে লেখে(ইচ্ছে করে ন বাদ দিলাম) 'মদ গাঁজা বন্ধ তাই কি প্রতিবাদের গন্ধ'| উদ্দেশ্য খুব স্পষ্ট, আন্দোলন আসলে মদ গাঁজা বন্ধের প্রতিবাদে হচ্ছে, এটাই দেখানোর চেষ্টা| এই অভিষেক ব্যানার্জী হল মমতা ব্যানার্জীর ভাইপো, সেইই তার ক্লেম ট্যু ফেম| তা ছেলেপুলেরা আরো ক্ষেপে ওঠে, অনেকে গিয়ে অভিষেকের প্রোফাইলে মদ-অন'এর সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেও আসেন| এখানে সচলের পাঠকদের জানিয়ে রাখি পশ্চিমবঙ্গের পরিবহনমন্ত্রী মদন মিত্র সম্পর্কে কথিত আছে যে বিকেল চারটের পর থেকে ওঁর কথার গ্রহণযোগ্যতা কমতে থাকে, সন্ধ্যে সাতটার পর আর কোনও কথাই ধরতে নেই| ২০ তারিখ সকাল থেকে আকাশ উপুড় করে আঝোরে বৃষ্টি শুরু হয়, আর কলকাতা দেখে এক অবাক মিছিলের| পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত, কলকাতার প্রায় সমস্ত কলেজ থেকে ছাত্রছাত্রী এসে পা মেলায় মিছিলে, আসে অজস্র সদ্য পাশ করা না-ছাত্রছাত্রীরা, আসেন অনেক বিশিষ্ট গুণী, আসেন মধ্যবয়সী ও প্রায় বৃদ্ধের দিকে যাওয়া নারীপুরুষ| গান গাইতে গাইতে, হাততালি দিয়ে শ্লোগান দিতে দিতে সুচারু শৃঙ্খলায় সব হাঁটতে থাকেন রাজভবনের দিকে, উদ্দেশ্য রাজ্যপালের সাথে দেখা করা| মেয়ো রোডে পুলিশ আটকে দেয় মিছিল| সবাই ওখানেই রাস্তায় বৃষ্টির মধ্যে বসে পড়েন, গান গাওয়া, শ্লোগান দেয়াঅ চলতে থাকে| ৮ জনের এক প্রতিনিধিদল গিয়ে রাজ্যপালের সাথে দেখা করে তাঁদের দাবীদাওয়াগুলি জমা দিয়ে আসেন| মুখ্য দাবী হল বিশাখা গাইডলাইন অনুযায়ী নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গড়ে মেয়েটির অভিযোগের বিচার করে তার ফল জানাতে হবে| পুলিশে করা এফ আই আরের এগেইনস্টেও চার্জশীট জমা দিয়ে উপযুক্ত শাস্তির বিধান করতে হবে| ভিসির পদত্যাগ চাইই চাই| আরো বেশ কিছু ন্যায়সঙ্গত দাবী| রাজ্যপাল অনেকক্ষণ ধরে মন দিয়ে ছাত্রদের কথা শোনেন, আশ্বাস দেন ব্যবস্থা নেওয়ার| প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি রাজ্যপালই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য্য|
২২ তারিখ কলকাতায় পাল্টা মিছিলের ডাক দেয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং কুখ্যাত শঙ্কুদেব পান্ডা| সেই মিছিলে টিভি চ্যানেলের লোকজন আসার কারণ জিগ্যেস করলে অনেকেই জানান যাদবপুরে পুলুশ ঢুকে ছাত্রদের পেটানোর প্রতিবাদে তাঁরা এসেছেন| এই নিয়ে চ্যানেলে চ্যানেলে চ্গলে তুমুল খিল্লী, তাতে অবশ্য শঙ্কুপান্ডার বা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোনও কিছু আসে যায় না| সেই মিছিল নিয়ে গিয়ে শঙ্কু পান্ডাও চেষ্টা করে খুব রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার| রাজ্যপাল কিন্তু দেখা করেন না| স্বভাবতই ২০র মিছিলের উদ্যোক্তারা ছাত্রছাত্রীরা খুবই উল্লসিত হন| এর মধ্যে রবিবার রাতে আবার পার্থ চট্টো এবং শঙ্কুপান্ডা গিয়ে সেই মেয়েটির বাড়ীতে দেখা করে কথাবার্তা বলে আসেন| যে বাবা শনিবার ২০ তারিখে ছাত্রদের মিছিল দেখে আপ্লুত হয়েছিলেন এরা ওঁর মেয়ের জন্য, ন্যায়বিচারের দাবীতে লড়ছে, সেই তিনিই এবারে বিবৃতি দিয়ে জানান তিনি মনে করেন রাজ্য সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ঠিকই ন্যায়বিচার দেবে, ছাত্ররা যেন আর ক্লাস নষ্ট না করে ক্লাস শুরু করে দেয়| কিছু লোক আবার শুরু করে মেয়েটি ও তাঁর বাবা বিক্রী হয়েছেন ইত্যাই| এবারে আবার হোক্কলরব টিম রুখে দাঁড়ায়, বিবৃতি দিয়ে জানায় কেউ যেন ওঁদের একটিও কটুবাক্য না বলে, কারণ আমরা কেউ জানি না ঠিক কি পরিস্থিতিতে উনি কী বলেছেন| আর সবচেয়ে বড় কথা এতদিন বাদে শিক্ষামন্ত্রী বাড়ী এসে উপস্থিত হলে একজন নির্বিরোধী ভালমানুষ, হঠাৎ করে মিডিয়ার অনাকাঙ্খিত অ্যাটেনশান পেয়ে যাওয়া নিরীহ মানুষ কী-ই-বা করতে পারেন!
২৫ তারিখ থেকে বিশ্বজুড়ে 'হোক্কলরব'এর ডাক দেওয়া হয়| সাড়া আসছে সমস্ত্ অঞ্চল থেকে| মূলত যাদবপুরের প্রাক্তনীরাই উদ্যক্তা, কিন্তু আন্দোলনে সহমর্মিতা জানাচ্ছেন বহু বহু মানুষ| ২০ তারিখ মিছিলের কিছু শ্লোগান
এই ভিসিকে চিনে নিন/ ওএলএক্সে বেচে দিন
পুলিশ পেলে জাপটে ধরে/গান শোনাব বিশ্রী সুরে (বোধহয় রোদ্দুর রায়ের গান শোনাবে বলে ভেবেছিল)
ভিসি তুমি বাজে লোক/তোমার মাথায় উকুন হোক
আরো বেশ কিছু মজার মজার ছিল| আর চলছে পোস্টার বানান| ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন, ক্লাস বয়কট চলছে| এরমধ্যে শিক্ষামন্ত্রী একটি নতুন তদন্ত কমিটি বানিয়ে দিয়েছেন, বিশাখা গাইডলাইনের ধার না ধেরেই| আর নিরপেক্ষতার বদনাম তাঁর কোনওদিনই নেই| কাজেই সেই কমিটি নিয়েও শুরু হয়ে গেছে তুমুল বিক্ষোভ| এই নতুন কমিটি আবার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে একটা রিপোটর্ও জমা দিয়েছে| দুজন ছাত্রকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে, বলাবাহুল্য ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্য এটা আসল দোষীদের আড়াল করা ও বিক্ষুব্ধদের টাইট দেওয়া জন্য একটি চাল এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবেই ভুল লোকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে|
ব্যক্তিগতভাবে ছাত্ররাজনীতির অতি দেউলিয়া চেহারা দেখে কলেজ লাইফ কাটানো আমি এই আন্দোলনের শুরুতে যথেষ্ট সিনিক ছিলাম| কিন্তু পরে এদের ম্যাচিওরিটি দেখে নিজেদের বক্তব্যে অবিচল থাকা দেখে, অত্যন্ত স্বচ্ছ ভাবনাচিন্তা দেখে একেবারে অবাক ও মুগ্ধ|
শেষে ওদের সাথে গলা মিলিয়েই বলি হোক হোক হোক্কলরব
সংযোজনঃ
এই মুহূর্ত্তে তদন্তের কী অবস্থা
## খুব তাড়াহুড়োয় লেখা পরে কিছু ভুল চোখে পড়লে সংশোধন করে দেব| আর সময় করে বিশ্বের বিভিন্ন কোণে যে প্রতিবাদের ঝড়্ উঠেছে তার কিছু ছবিছাবা জুড়ে দেব|
২০১৪-এর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আন্দোলন
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
২০১৪-এর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আন্দোলন
| |||||||
| |||||||
ক্ষয়ক্ষতি
| |||||||
|
২০১৪ সালের 'হোক কলরব' আন্দোলন বা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় ভারতের কলকাতা শহরের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেপ্টেম্বরের ১৩ তারিখে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ঐ বিশ্ববিদ্যালয়েরই কিছু ছাত্রের বিরুদ্ধে তার উপর শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনলে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ সেই অভিযোগের যথাযথ মর্যাদা দেননি বলে জানা যায়। কতৃপক্ষের কাছে এই ঘটনার নিরপেক্ষ বিচারের দাবি নিয়ে প্রতিবাদে এগিয়ে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্রছাত্রী। এরপর তাদের এই ধারাবাহিক বিক্ষোভ ও অবস্থানের খবর ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশাল মিডিয়ায়, যেখানে প্রতিবাদজনিত যাবতীয় সংবাদ পর্যায়ক্রমিক ভাবে সম্প্রচারিত হতে থাকে #হোককলরব (#hokkolorob) হ্যাশট্যাগের সাথে। সেপ্টেম্বরের ১৬ তারিখ অব্দি ঘটতে থাকা ধারাবাহিক বিক্ষোভের পরও সমঝোতার সিদ্ধান্তে না-পৌঁছনো গেলে উপাচার্য সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু অধ্যাপককে ঘেরাও করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীদের দল।
১৭ তারিখ মধ্যরাত্রে এই বিক্ষোভ সামলানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে পুলিশের দল আসে এবং নির্মম ভাবে লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের উপর। পুলিশের লাঠিচার্জের সাথে সাথে তৃণমুল কংগ্রেসের কর্মচারীরাও ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে ছাত্র দের গায়ে হাত তোলেন বলে জানা যায়। সংঘর্ষে গুরুতর ভাবে জখম হন ৪০ জন ছাত্র, সাথে গ্রেপ্তার করা হয় ৩৭ ছাত্রকে। এই ঘটনা সংবাদমাধ্যম এবং সোশাল মিডিয়ায় সম্প্রচারিত হলে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিবাদ সংক্রামিত হতে থাকে কলকাতার বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। আন্দোলনে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে দিল্লি, মুম্বাই, হায়দ্রাবাদ, বেংগালুরু সহ ভারতের বিভিন্ন শহরের আপামর ছাত্রসমাজ।[১][২][৩][৪]আন্দোলনের ঢেউ এমনকি ছড়াতে থাকে দেশের বাইরেও। অচিরেই হোক কলরব শব্দবন্ধটি হয়ে যায় বিশ্বব্যাপী এক ছাত্র আন্দোলনের মুখে মুখে ফেরা স্লোগান। ১৭ তারিখের পর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে নানান মিছিল সংগঠিত হতে থাকে কোলকাতা শহরে, তা বিপুল আকার নেয় ২০ সেপ্টেম্বরের মহামিছিলে। ঐদিন দুপুর ২'টোয় নন্দন থেকে যে মিছিলটি বেরোয় তাতে হাঁটতে দেখা যায় অসংখ্য মানুষকে, কোলকাতা শহরের বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা তো বটেই, মিছিলে ওদের সমর্থনে পা মেলান নানা বয়সের ও নানা পেশার মানুষও। মিছিলের শেষে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে থেকে কয়েকজনের প্রতিনিধিদল দল যখন দেখা করেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরী নাথ ত্রিপাঠির সাথে, বাকিরা তখন অবস্থানে বসেন কলকাতার মেয়ো রোডে পুলিশের ব্যারিকেডের মুখে।[৫][৬]
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম কতৃক প্রচারিত পরিসংখ্যান গুলি থেকে অনুমান করা যায় ঐদিনে মিছিলের জনসমুদ্রে ছিলেন ত্রিশ হাজার থেকে এক লক্ষ মানুষ। বিক্ষুব্ধ মানুষের জোট ঐদিন একসাথে দাবি জানিয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যরাতে লাঠিচার্জের মত ঘটনার প্রতিবাদে তার যোগ্য বিচার হিসেবে উপাচার্য অভিজিত চক্রবর্তীর পদত্যাগ এবং নির্যাতিতা মেয়েটির শ্লীলতাহানির উপযুক্ত নিরপেক্ষ তদন্ত জন্য।[৬][৭][৮]
পরিচ্ছেদসমূহ
আন্দোলনের প্রকৃতি[সম্পাদনা]
এই আন্দোলনের মূল ধারা কোনও রাজনৈতিক দল দ্বারা প্রভাবিত নয়। লক্ষ্য করার মত বিষয় হল এই যে আন্দোলনের ধারায়, প্রথম দিন থেকেই ছাত্রছাত্রীদের তৈরি অগণিত গান, ছড়া, কবিতা, পথনাটিকাই ছিল এই আন্দোলনের প্রধান হাতিয়ার।[৭][৮] স্বভাবতই এই আন্দোলনের সাথে বারংবার তুলনা টানা হয়েছে সত্তরের দশকের ছাত্র আন্দোলনগুলির। সোস্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য অনলাইল কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে গণ-অভ্যুত্থান অবশ্য ইতিপূর্বে ভারতে খুব বিশেষ দেখা যায়নি।[৯]
প্রতিক্রিয়া[সম্পাদনা]
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হওয়া এই ছাত্রদের ধারাবাহিক বিক্ষোভ সামান্য কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্যব্যাপী এক ছাত্র অভ্যুত্থানের চেহারা নেয়। রাজ্যের বিভিন্ন ছোট-বড় স্কুল কলেজ তো বটেই আন্দোলনে অংশ নেয় দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়, ইংলিশ আণ্ড ফরেন ল্যাঙ্গোয়েজ ইউনিভার্সিটি, আই আই টি বম্বে, প্রমুখ জাতীয় স্ততরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও। আন্দোলন ক্রমশই দানা বাঁধতে থাকলে পাশে এসে দাঁড়ায় বিদেশের বহু স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছাত্রছাত্রীদের দল।
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- Jump up↑ "Protest in Delhi against police lathicharge on Jadavpur University students"। The Times of India। সংগৃহীত 22 September 2014।
- Jump up↑ "Students of IIT Mumbai march for counterparts at Jadavpur University"। Daily News and Analysis। সংগৃহীত 22 September 2014।
- Jump up↑ "Jadavpur University fiasco: Professor steps down, refuses to show reason"। The Times of India। সংগৃহীত 22 September 2014।
- Jump up↑ "Kolkata: Protest March by Students, Governor Intervenes"। NDTV। সংগৃহীত 23 September 2014।
- ↑ Jump up to:৬.০ ৬.১ "In Pictures: Jadavpur University Shows The Power Of Solidarity, Over 1 Lakh March For Justice!"।Youthkiawaaz.com। সংগৃহীত 23 September 2014।
- ↑ Jump up to:৭.০ ৭.১ "30,000 march in rain to seek Jadavpur VC’s scalp"। The Times of India। সংগৃহীত 21 September 2014।
- ↑ Jump up to:৮.০ ৮.১ "JU-bagh at heart of city"। The Telegraph, Calcutta। 21 September 2014। সংগৃহীত 23 September 2014।
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
উইকিসংবাদে নিম্নের বিষয় সংক্রান্ত খবর আছে: Students protest against police action in Jadavpur University, Kolkata
|
পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র আন্দোলন
তারিখ: ২৪ ডিসে ২০১১
প্রকাশক: মঙ্গলধ্বনি
ট্যাগসমূহ: অধিকার, অল বেঙ্গল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন, ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র নির্যাতন, ছাত্র সংগঠন, তৃনমূল কংগ্রেস, পশ্চিমবঙ্গ, প্রতিবাদ, বাম ফ্রন্ট, বিদ্রোহ,মমতা ব্যানার্জী, মুক্তি, রাজ্য সরকার, রাষ্ট্রীয় দমন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, লড়াই, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ, সংগ্রাম,সারা বাংলা ছাত্র সংসদ, সিপিএম
লিখেছেন: শিহাব ইশতিয়াক সৈকত
প্রসঙ্গঃ সারা বাংলা ছাত্র সংসদ
১৯৯১ সাল থেকে ভারতে গ্লোবালাইজেশনের হাওয়া বইতে থাকায় আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বিপর্যয় আরো দ্রুতগামী হয়েছে। গত দশকের মাঝামাঝি থেকে এই হাওয়া ঝড়ে পরিণত হয়। কর্মী সংকোচন,বেসরকারীকরণ, গণহত্যাসহ গ্লোবালাইজেশনের একাধিক বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠে ‘মরূদ্যান’ বাংলায়। আক্রমণ যত তীব্র হয়েছে, জনগণ তত বেশি করে আন্দোলনে নেমেছে, ঘটে গেছে একের পর এক গণ-আন্দোলন। ২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই সময়টাকে গণ-সংগ্রামের পূনর্জাগরণ বলা যেতে পারে।
সিঙ্গুর থেকে শুরু, তারপর নন্দীগ্রাম, ভাঙ্গরসহ একাধিক জায়গায় জমি বাঁচাবার আন্দোলন, কালোবাজারির বিরুদ্ধে আন্দোলন, পরবর্তীকালে আত্মমর্যাদা, বিকল্প উন্নয়ন ও সামাজিক কাঠামোর আন্দোলন- লালগড় আন্দোলন গড়ে উঠে। স্বাভাবিকভাবেই এই সমস্ত আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিল ছাত্ররা। জনগণ ‘নেতা’-দের থেকে ছাত্রদের বেশি বিশ্বাস করে। তাই ২০১১ এর আগে বাম ফ্রন্ট সরকার গরীব, নিপীড়িত মানুষের আন্দোলনকে নারকীয়ভাবে দমন করার সাথে সাথে নিপীড়িত গণ-মানুষের আন্দোলনের সমর্থক, প্রচারক ছাত্রদের উপর একাধিকবার হুমকি দিয়েছে, আক্রমণ করেছে। আর এই হুমকির সামনে দাঁড়িয়ে ছাত্ররা বারবার কলকাতার রাজপথে নেমেছে, পুলিশের সন্ত্রাস তথা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, ফাঁস করেছে একের পর এক সরকার ও রাষ্ট্রীয় দালাল মিডিয়ার অপপ্রচার। এর জন্য তারা গ্রেপ্তার হয়েছে, মার খেয়েছে ভাড়াটে গুন্ডাদের হাতে।
কিন্তু ২০১১ এর পর বাম ফ্রন্ট সরকারকে হটিয়ে গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা মমতার সরকারের সময়ও অবস্থার কোন পরিবর্তন হলনা। বাম ফ্রন্ট আমলের মতই এই সরকারের সময়েও ছাত্ররা পথে নেমেছে ভোটের প্রতিশ্রুতিমত রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি, নিজের দেশের জনগণের উপর সামরিক অভিযান বন্ধের দাবী, সিঙ্গুর এ জমি ফেরত এর দাবী, পুলিশের সন্ত্রাস বা বিশ্ববিদ্যলয়ে অর্ডিন্যান্স জারি করে ছাত্রদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের প্রতিবাদ জানাতে। পুরনো বাম ফ্রন্ট আমলের মতো এ আমলেও ছাত্ররা সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। আর গ্লোবালাইজেশনের নীতিগুলোকে বিনা বাধায় প্রয়োগ করতে গেলে আগে ছাত্রদের মুখ বন্ধ করা প্রয়োজন; তাই শুরু হয়ে গেল হুমকি দেয়া। এবার একেবারে সংগঠন-প্রতিষ্ঠানের নাম ধরে ধরে মূখ্যমন্ত্রী হুমকি দিলেন ছাত্র সংগঠনগুলোকে, সেই সাথে অধ্যাপকদের। ‘ছাত্র সংগঠনগুলোর সাথে মাওবাদী যোগাযোগ’, ‘মাওবাদীদের সাহায্য’ ছাড়াও মেয়েদের ‘ইজ্জত, অপহরণ’, ‘পুরুলিয়ার হোটেলে শুধুমাত্র খেয়ে এক লাখ টাকা বিল!!!’, অপহরণ, খুন সহ একাধিক কিছু সুলভ মিথ্যা অভিযোগ আনেন।
শিক্ষা ব্যবসায়ীদের প্রতিহত করতে, শিক্ষায় সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ঠেকাতে, অ-বৈজ্ঞানিক পাঠক্রমের বিরুদ্ধে,শিক্ষার মৌলিক অধিকার রক্ষা করার জন্য, মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকার সুনিশ্চিত করার দাবীতে,শিক্ষাক্ষেত্রে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবং ঐক্যবদ্ধ ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার শ্লোগান নিয়ে এই নভেম্বরে ‘সারা বাংলা ছাত্র সংসদ (ALL BENGAL STUDENTS’ UNION)’এর প্রথম রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। নভেম্বরের ৯ তারিখে এর প্রকাশ্য সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই এই নবগঠিত সংগঠনটিও রক্ষা পায়নি নিপীড়ন থেকে। শিক্ষাসংক্রান্ত বিষয়ে গড়ে উঠা ‘সারা বাংলা ছাত্র সংসদ’ সহ আরো কিছু ছাত্র সংগঠনকে মাওবাদী তকমা, সংগঠনগুলোর নেতা কর্মীদের গ্রেপ্তার করার হুমকি দেয়া হল। কিন্তু মূখ্যমন্ত্রী এটা স্পষ্ট করেননি যে তার রাজ্যে বাকস্বাধীনতা, প্রতিবাদ করার স্বাধীনতা আছে কিনা, মাওবাদী দর্শনে বিশ্বাস করাটা তিনি অপরাধ বলে মনে করেন কিনা, কেউ মাওবাদী হলেই তার উপর যাবতীয় অত্যাচার করার বৈধতা চলে আসে কিনা, অথবা কাউকে একবার মাওবাদী ছাপ মেরে দিলে তার হয়ে কথা বলাটা অপরাধ কিনা। বন্দীমুক্তি, লালগড় থেকে যৌথবাহিনী প্রত্যাহার, সিঙ্গুরের জমি ফেরত সহ যে যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি তিনি ভঙ্গ করেছেন, সেই বিষয়ে তার মতামত তিনি পরিষ্কার করেননি।
শিক্ষা কি শুধুমাত্র বড়লোকের ছেলে-মেয়েদের সম্পত্তি নাকি প্রত্যেক শিক্ষার্থীর?
বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শিক্ষার্থীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাদের বাদ দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা কোন ধরণের গণতান্ত্রিক চরিত্রের মধ্যে পড়ে?
মূখ্যমন্ত্রীর হুমকিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অর্ডিন্যান্স এর বিরোধিতা, বন্দীমুক্তি, লালগড় এ প্যারা মিলিটারি অভিযানের বিরোধিতা (সরকারের কাছে যার অর্থ দাঁড়ায় মাওবাদীদের সমর্থন করা) করাসহ একাধিক দাবীতে ছাত্ররা কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে ঢুকে পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে পরে। এটা মূখ্যমন্ত্রীর হুমকির বিরুদ্ধে একটা থাপ্পর। ছাত্রদের বক্তব্য পরিষ্কার, তাহলো- চেতনাকে জেল এ ঢোকানো বা ভয় দেখানো যাবেনা বা এইসমস্ত হুমকিতে ছাত্র আন্দোলন শেষ হয়ে যায়না। চলচ্চিত্র উৎসব থেকে ৫ জনকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়,যদিও জনমতের চাপে ঐ রাতেই তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, অধিকাংশ ছাত্র বা ব্যাপক জনসাধারণের স্বার্থে কথা বলা মুখ বন্ধ করার আকাঙ্ক্ষাতেই হোক, চক্রান্তের অংশ হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আঙ্গুল উঠেছে এই ছাত্র মঞ্চটির বিরুদ্ধে। সরকারের এই চক্রান্তের আভাস পাওয়া যায় সেদেশের পত্র-পত্রিকাতে। ১০ নভেম্বর, ‘সংবাদ প্রতিদিন’ পত্রিকায় ছাত্রদের যৌক্তিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধবাদিতা করা হয়, কোন কোন ক্ষেত্রে সিপিএম’এর সাথে মিলিয়ে দেয়া হয়। রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার কর্তৃক এদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়াটাই স্বাভাবিক। এই সমস্ত ছাত্ররাই সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামসহ আরো বিভিন্ন সংগ্রামে যুক্ত ছিল- এই একটা উদাহরণই মনে হয় যথেষ্ট সরকারের ভন্ডামীর কারণ বোঝার জন্য।
এবারে আসা যাক এই নবগঠিত ছাত্র সংগঠন ‘সারা বাংলা ছাত্র সংসদ (All Bengal Students’ Union)’এর প্রসঙ্গে। এটি মূলতঃ ‘ইউনাইটেড স্টুডেন্টস ডেমক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউএসডিএফ)’, ‘ঝাড়খন্ড স্টুডেন্টস ফেডারেশন (জেএসএফ)’ এবং ‘ছাত্র সমাজ’; এই তিনটি সংগঠন একীভুত হয়ে গড়ে উঠেছে। ২০০৫’এর ১০ জুন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ হামলা চালায়। সেসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩টি অনুষদের মধ্যে শুধুমাত্র কলা অনুষদে ক্ষময়তায় ছিল স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (এস এফ আই)। অনশনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের এই হামলার ঘটনার পর তাদের সরকার বিরোধী ক্ষোভকে সংগঠিত করতে বিপ্লবী ছাত্র সংগঠন ‘রেভল্যুশনারি স্টুডেন্টস ফ্রন্ট (আর এস এফ)’এর সদস্যবৃন্দ এবং গণতন্ত্রপ্রিয় শিক্ষার্থীরা কলা অনুষদে তৈরি করে ‘ফোরাম ফর আর্টস স্টুডেন্টস (এফএএস)’। উল্লেখ্য আরএসএফ ছিল অল-ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস ফেডারেশন (এআইএসএফ)’এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শাখা। অপরদিকে, প্রেসিডেন্সী কলেজে সংসদে ছিল স্বাধীন ছাত্র সংগঠন ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট কন্সোলাইডেশন’ বা আইসি। এই এফএএস এবং আইসি’এর যৌথ মঞ্চ হিসেবে তৈরি হয় ইউএসডিএফ। ২০০৬’এ এই ইউএসডিএফ ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে এসএফআই’এর একচেটিয়া প্রভাব এবং খবরদারীর বিরুদ্ধে বহু স্বাধীন ছাত্র মঞ্চ গড়ে তোলে। আর সেই সাথে সিঙ্গুর,নন্দীগ্রাম, ডানকুনিসহ একের পর এক কৃষক আন্দোলনে অংশ নিতে থাকে। তারা আন্দোলনকে জাগিয়ে তুলতে গ্রামে চলে যায়। সেসময় যারা সখের রাজনীতি করত, তাদের বেশিরভাগ অংশ ইউএসডিএফ’এর বিরোধিতা শুরু করে। এর পর ২০০৯ সালে এই মঞ্চ থেকেই ইউএসডিএফ একটি বিপ্লবী ছাত্র সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। অন্যদিকে, যে জেএসএফ দীর্ঘদিন ধরে আদিবাসী সমাজ এর দাবী, শিক্ষা সঙ্ক্রান্ত দাবী নিয়ে আন্দোলন করে আসছে, লালগড় আন্দোলনেও তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। আর লালগড় আন্দোলনের সময় স্কুল থেকে পুলিশ ক্যাম্প তুলে দেওয়ার দাবীতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মঞ্চ ছাত্র সমাজ গড়ে উঠে।
ঘোষণাপত্র অনুযায়ী, সারা বাংলা ছাত্র সংসদ দলতন্ত্র এবং শিক্ষাকে বাণিজ্যিক পণ্যে রূপান্তরিত করার বিরোধী। আমরা দেখতে পাই, প্রচলিত রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাষ্ট্রক্ষমতার একটা শক্তিশালী অংশীদার হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদনির্ভর পুঁজিবাদ। দালাল বা লুটেরা পুঁজিপতিরা তাদের শাসন-শোষণ টিকিয়ে রাখার স্বার্থে ‘বিরাজনীতিকরণ’ নামক এক নোংরা রাজনীতির ধ্বজাধারী। নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্ব ঢাকতে বা নিজেদের অমানবিক শোষণকে চিরস্থায়ী করার স্বপ্নে তারা বিরাজনীতিকরণের বুলি আওড়ায়। রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে,বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনও একই কায়দা অনুসরণ করে। শিক্ষা ক্রয়-বিক্রয়ের দোকান খুলে বসেছে প্রশাসন। প্রশাসন এর স্বৈরশাসন প্রক্রিয়া বাণিজ্যিক এবং সেই সাথে সামরিক। ‘স্থিতিশীলতা আনয়ন’ এর নামে নীল নকশা এঁকে শিক্ষাঙ্গনকে সামরিকায়ন করাসহ শিক্ষার্থীদের মুখ বন্ধ করে দেয়ার অপচেষ্টা করা হয়। এর ফলাফল অত্যন্ত ভয়াবহ। এভাবে একসময় নির্যাতিতদের হাতে কলমের পরিবর্তে বন্দুক উঠবে। কারণ এটা করতে তারা বাধ্য। তাদের রাজনৈতিক শ্লোগান শুনতে প্রশাসন রাজী নয়। যে সামরিক বাহিনি তাদের হাত বেঁধে রেখেছিল, সেই সামরিক বাহিনীর অস্ত্র সেইসমস্ত নির্যাতিতের হাতে উঠবে। ঐ রাষ্টীয় বাহিনীর অস্ত্রই শিক্ষাঙ্গনে নিজেদের কবর খুড়বে। রাজনীতি বিকাশ লাভ করবে জন-যুদ্ধে।
নিজেদের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সংগঠিত আন্দোলন এর বিকল্প নেই। ‘সারা বাংলা ছাত্র সংসদ’ ঘোষণা করেছে যে তারা যেকোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাধীন উদ্যোগে নিজস্ব সংগঠন গড়ে তোলার প্রচেষ্টাকে সমর্থন ও সহযোগিতা করবে। সংগঠিত আন্দোলন শুধুমাত্র নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে নয়,বরং এতে নিজেদের মুক্তচিন্তা বিকাশ লাভ করে। সংগঠিত আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে নতুন চিন্তাধারার উদ্ভব হয়। আমরা দেখেছি যে, আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে বিকশিত চিন্তাধারা, মাও সে-তুঙ চিন্তাধারাকে মানবজাতি নিজেদের মুক্তির দিশারী হিসেবে পেয়েছে, যা আজ মাওবাদ’এ প্রমাণিত সত্য। সংগঠিত আন্দোলনের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মুক্তচিন্তা চর্চার মতো সুব্যবস্থা, ‘মুক্তবুদ্ধি বিকাশের উর্বর ক্ষেত্র’ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়ক প্রশাসক করে দিবেনা; তাই শিক্ষাঙ্গনে এধরণের সংগঠন গড়ে তোলাটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, যা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ক্রমেই বিকশিত হবে।
শিক্ষার কেন্দ্রীকরণ বা শিক্ষা-সংকোচন আর কার স্বার্থেই বা হতে পারে?
নিজের ভাষায় শিক্ষাগ্রহণের অধিকার মানুষের, সেই সাথে নিজের জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রেও মাতৃভাষা ব্যবহারের অধিকারও রয়েছে। ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ন্যায়সঙ্গত’, যাবতীয় অন্যায়, নিপীড়ণ, কুশাসনের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। প্রতিষ্ঠিত করতে হবে মানবতা। এই সংগঠন মানবতা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে শামিল হতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন, সন্ত্রাস, বিভ্রান্তি মোকাবেলা করে এগিয়ে যাওয়া বা ব্যাপক জনসাধারণের সাথে সম্মিলিত রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের অভিজ্ঞতা নিয়ে গড়ে উঠেছে ‘সারা বাংলা ছাত্র সংসদ’। এই সংগঠনটি গড়ে তোলার নায়কেরা দেখিয়েছেন যে, লড়াইয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে সংগঠন আবশ্যক, লড়াইয়ের স্বার্থে আরো হাজারটা সংগঠন গড়ে উঠতে পারে, হাজারটা মুষ্টিবদ্ধ হাত এক হয়ে আঘাত করতে পারে। এই ছাত্ররাই দেয়ালে দেয়ালে লিখেছিল-
ভেঙ্গেছি বলেই সাহস রাখি গড়ার//
ভেঙ্গেছি বলেই সাজিয়ে দিতে পারি
স্বপনের পর স্বপ্ন সাজিয়ে আজ//
আমরা এখনো স্বপ্নের কারবারি//
প্রবুদ্ধ ঘোষ
সভাপতি,
সারা বাংলা ছাত্র সংসদ।
রক্তিম ঘোষ
সাধারণ সম্পাদক,
সারা বাংলা ছাত্র সংসদ।
যোগাযোগঃ
সৌম মন্ডল
পত্রিকা সম্পাদক,
সারা বাংলা ছাত্র সংসদ।
ইমেইল: absu2011@gmail.com
শেয়ার করুন:
রাজনৈতিক বন্দী মুক্তকরণ কমিটি (পশ্চিমবঙ্গ শাখা)
১৮ সূর্য্যসেন স্ট্রিট
কোলকাতা ৭০০০০৯
.
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
গতরাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনরত ছাত্র-ছাত্রীদের উপর পুলিশি হামলার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। ২৮ আগস্ট, উৎসব চলাকালে ক্যাম্পাসের ভেতরে একজন ছাত্রীর যৌন নিগ্রহের অভিযোগের বিষয়টিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেভাবে সামাল দিচ্ছে তার বিরুদ্ধে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে গত কয়েকদিন ধরে। ঘটনার তদন্তে নিয়োজিত “অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি”র একজন নারী সদস্যের বিরুদ্ধে ঘটনার শিকার ছাত্রীকে আপত্তিকর প্রশ্ন করার অভিযোগ ওঠলে, আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীরা তার নিন্দা জানায়। তারা তদন্তকারী দল থেকে দুইজন নারী সদস্যেকে অপসারণের এবং সেইসাথে একজন আইনজীবী ও একজন মনোবিদকে বহিরাগত জুরি হিসেবে তদন্তদলে অন্তর্ভূক্ত করার দাবী জানায়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য জনাব অভিজিৎ চক্রবর্তী তাদের দাবী প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু এর পরিবর্তে কতৃপক্ষ একটি আচরণবিধি প্রকাশ করে এবং ক্যাম্পাসের ভেতরে নজরদারীর জন্য একটি নতুন দল গঠনের ঘোষণা দেয়। এই পদক্ষেপটি ছাত্র-ছাত্রীদের আরও ক্ষুব্ধ করে তোলে এবং অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচীটি ঘেরাও কর্মসূচীতে রূপ নেয় এবং মিটিং চলাকালে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাহী পরিষদের সদস্যদের তারা ঘেরাও করে।
জানা যায় যে, নির্বাহী পরিষদের কিছু সদস্যের পুলিশি হস্তক্ষেপের বিরোধিতা সত্ত্বেও বিক্ষোভ দমন ও ঘেরাও মুক্ত করতে উপাচার্য পুলিশি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কায়,ছাত্র ও কতৃপক্ষের মধ্যে মধ্যস্ততাকারী শিক্ষকদের অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে পুলিশ তলব করতে উপাচার্যকে নিষেধ করেছিলেন। যাই হোক, উপাচার্য তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। ফলশ্রুতিতে, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪, উপাচার্যের নির্দেশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। শান্তিপূর্ণ অবস্থান আন্দোলন কর্মসূচীকে ছত্রভঙ্গ করতে, কিছু অচিহ্নিত সাদা পোশাকের পুলিশ ও নিয়মিত পুলিশ অগণিত ছাত্র-ছাত্রীদের লাঠিপেটা করে। এতে ত্রিশ জনের অধিক ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়। পুরুষ পুলিশই ছাত্রীদের টানা-হেঁচড়া করে। টিমটিতে কোন মহিলা পুলিশ ছিল না। একজন ছাত্রীসহ প্রায় পঁয়ত্রিশ জন ছাত্রকে তারা গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। এই ঘটনাটি ২০০৫ সালে বুদ্ধদেবের আমলে অনশন ধর্মঘটে চালানো পুলিশি হামলার কথা আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয়।
পুরো ঘটনাটি কেবলমাত্র ছাত্র সমাজ থেকে কতৃপক্ষের সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নতাকেই তুলে ধরে না,আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে বোঝাপড়ায় প্রশাশনের সম্পূর্ণ অদক্ষতাকেও ফুটিয়ে তোলে। কয়েক বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছিলেন। বিবৃতিতে তারা বলেন যে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় একটি পুলিশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। কারণ, ক্যাম্পাসে অসংখ্য সাদা পোশাকের পুলিশের উপস্থিতি আছে। পরিস্থিতি কতোটা ভয়াবহ হয়েছে, কিভাবে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার পদদলিত হচ্ছে এবং কিভাবে বাকস্বাধীনতা ও চলাচলের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে, তা ফুটে উঠেছে নজরদারীর জন্য পৃথক দল গঠনের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে। আমরা ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। গ্রেফতারকৃত ছাত্র-ছাত্রীর অনতিবিলম্ব মুক্তি ও ক্যাম্পাস থেকে সাদা পোশাকের গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও সকল পুলিশের তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার দাবী করছি।।
.
অমিত ভট্টাচার্য
সাধারণ সম্পাদক, রাজনৈতিক বন্দী মুক্তকরণ কমিটি (সিআরপিপি)
.
সুজাতো ভদ্র
সহ-সভাপতি, সিআরপিপি
.
সুখেন্দু ভট্টাচার্য
সহ-সভাপতি, সিআরপিপি
.
অরুণ চক্রবর্তী
আহবায়ক, সিআরপিপি(পশ্চিমবঙ্গ শাখা)
—————————————
অনুবাদ: সুলতান মাহমুদ
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪
প্রথমেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত সকল আন্দোলনকারী সহযোদ্ধাদের জানাই লাল সালাম!
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনে আমরা একই সাথে উজ্জীবিত এবং মর্মাহত। পুলিশি ও সন্ত্রাসী হামলায় আহতদের কষ্টে আমরা মর্মাহত। আবার স্বৈরতান্ত্রিক, ফ্যাসিবাদী,নিপীড়ক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলনে আমরা উজ্জীবিত।
২৮ আগস্ট, ক্যাম্পাসের ভেতরেই একজন ছাত্রী সন্ত্রাসীদের দ্বারা যৌন নিগ্রহের শিকার হন। অভিযোগ করা হলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা সালিশী ঢঙে মিটমাট করার উদ্যোগ নেয়। শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। প্রশাসনের তদন্ত কমিটি হতে তখন নির্যাতিত ছাত্রীর “চরিত্র” নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীরা এর তীব্র নিন্দা জানায়।
আন্দোলন ফুঁসে ওঠছে লক্ষ্য করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী, তা দমনে সচেষ্ট হন। আন্দোলনকারীদের দাবী না মেনে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ উল্টো একটি আচরণবিধি প্রকাশ করে এবং ক্যাম্পাসের ভেতরে নজরদারীর জন্য একটি নতুন দল গঠনের ঘোষণা দেয়। সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গোয়েন্দা বাহিনী ও সাদা পোশাকের পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন পদক্ষেপে ছাত্র-ছাত্রীদের আরও বিক্ষুব্ধ করে তোলে।
শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিষদের মিটিংয়ে ঘেরাও করে। রাজ্য সরকার বা তৃণমূলের পকেটস্থ উপাচার্য এবং শিক্ষকেরা নির্বাহী পরিষদের কিছু সদস্যের বিরোধিতা সত্ত্বেও আন্দোলন দমনে পুলিশি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪, উপাচার্যের নির্দেশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচীকে ছত্রভঙ্গ করতে,কিছু সাদা পোশাকের পুলিশ ও নিয়মিত পুলিশ ছাত্র-ছাত্রীদের লাঠিপেটা করে। এতে ত্রিশ জনের অধিক ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়। বেশ কয়েকজন জন আন্দোলনকারীকে এসময় গ্রেফতার করা হয়। তবে এমন ঘটনা নতুন কিছু নয়। তা এই ব্যবস্থার ধারাবাহিকতা মাত্র। ২০০৫ সালে ক্ষমতাসীন ছিল সিপিএম। সেই বুদ্ধদেবের আমলে অনশন ধর্মঘটে চালানো হয়েছিল পুলিশি হামলা। এখন ক্ষমতা হারিয়ে সিপিএম তৃণমূলের সমালোচনা করলেও আদতে শাসকশ্রেণীর এই দুই অংশের মাঝে কোন পার্থক্য যে নাই, তা বলাই বাহুল্য।
যাই হোক, ১৭ স্বপ্টেম্বর হামলার পর শিক্ষার্থীরা দমে যাননি। বরং দেশে বিদেশে বিভিন্ন ব্যক্তি,সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তারা সমর্থন পেয়েছেন। পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করের “বহিরাগত তত্ত্ব” শতভাগ সফল!হ্যাঁ, এতে বহিরাগতরা অংশ নিয়েছে, নিচ্ছে ও নিবে। কারণ, এটি কেবলমাত্র কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি এই সমাজে বিরাজমান পুরুষতান্ত্রিক চেতনার বিরুদ্ধে, শাসকশ্রেণীর ফ্যাসিস্ট চেতনার বিরুদ্ধে, এই সিস্টেমের বিরুদ্ধে আন্দোলন। তাতে গণতন্ত্রমনা জনগণের যেকোন অংশই সামিল হতে পারে খুব স্বাভাবিকভাবেই। আর এটিই আমরা লক্ষ্য করেছি মহামিছিলে।
একটি সমাজের প্রগতি প্রধানত নির্ভর করে তার শিক্ষাব্যবস্থার ওপর। অর্থাৎ সমাজের উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে তার শিক্ষাব্যবস্থা উৎপ্রোতভাবে জড়িত। তা সমাজের মরুদণ্ড স্বরূপ। উৎপাদন ব্যবস্থা যদি গণমুখী হয়, তবে শিক্ষাব্যবস্থাও হবে গণমুখী। অপরদিকে, যদি এই উৎপাদনব্যবস্থা গণমুখী না হয়, তবে শিক্ষাব্যবস্থাও হবে তার অনুরূপ। কর্পোরেট সাম্রাজ্যবাদ পীড়িত বাঙলাদেশ-ভারতের মতো দেশসমূহে উৎপাদনব্যবস্থা নয়া-ঔপনিবেশিক হওয়ায়, প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাও ক্রমেই কর্পোরেট পুঁজি ও সাম্রাজ্যবাদের কাছে নতি স্বীকার করেছে ও করছে। যার মূল উদ্দেশ্য কেবলই মুনাফা অর্জন, বা শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ। এই ব্যবস্থা ক্রমেই মানুষকে ব্যক্তিকেন্দ্রিক করে তোলে, যা শাসকশ্রেণী এবং কর্পোরেট সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে। এর সঙ্গে মিশেছে কর্পোরেট সংস্কৃতি, ইতিহাস বিকৃতি আর সযতনে লালিত পুরুষতন্ত্র।
এমন শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের শুধু পরীক্ষায় পাশ করতেই শেখাচ্ছে, নৈতিক গুণাবলী বৃদ্ধিতে যা তেমন কোনো ভূমিকাই রাখছে না। ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাঝে দিনদিন আত্মকেন্দ্রিক প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যাদের মা-মাটি-মানুষ নিয়ে ভাবনার চেতনাটুকুও অবশিষ্ট নাই। ভোগবাদীতায় আচ্ছন্ন হয়ে তারা নারীদের যৌনবস্তু, ভোগ্যপণ্য বলে মনে করতেই শিখছে। ফলে এক ভোগবাদী চেতনার ধারক প্রজন্ম গড়ে ওঠছে প্রতিনিয়ত।
সাম্প্রতিক সময়ে বাঙলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দ্বারা ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সামান্য প্রতিবাদেই যেন তার সমাপ্তি। প্রকৃতার্থে যাদবপুরের আন্দোলন দিশা দেখাতে পারে এমন হাজারো প্রতিবাদকে আন্দোলনে রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে।
এক সময় ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষকদের একটা বড় অংশ যুক্ত হতে দেখা যেত। কিন্তু ১৯৯০ সালের পর থেকে কথিত বিশ্বায়নের নামে কর্পোরেটদের অবাধ আগমণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে এখন শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টিও অনেকাংশেই নির্ভর করে, সেই শিক্ষক কোন চিন্তাধারার ধারক, তার ওপর। সেই সাথে এই শিক্ষকরাও কিন্তু এই নয়া-উপনিবেশবাদী ব্যবস্থাতেই বেড়ে ওঠেছেন,অনেকে প্রগতিশীলতা ঝেরে ফেলে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়েছেন। আর তাদের চিন্তা-কাঠামোটিও কিন্তু সেভাবেই গড়ে ওঠেছে। যে কারণে এখানকার সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনগুলোতে নগণ্য সংখ্যক শিক্ষককেই শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে। যাদবপুরের আন্দোলন এ ক্ষেত্রেও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তাতে সমর্থন রয়েছে অনেক শিক্ষকদের, গায়ক, অভিনেতা, সংবাদকর্মী, পেশাজীবী এবং নিপীড়িত জনগণের।
সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনগুলো মূলতঃ বেতন, ফি বাড়ানো বা নাইটকোর্সের প্রতিবাদেই গড়ে ওঠে। সেখানে শিক্ষার্থীদের পড়ার বিষয়বস্তু, কারিক্যুলাম - যা এনজিও আর কর্পোরেটদের স্বার্থে নির্ধারিত, এর বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রতিরোধই গড়ে তোলা যায়নি। বিশ্বভারতী থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, অথবা কলকাতা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়;সবখানেই রয়েছে যৌন নিপীড়ন। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদও হয়েছে, কিন্তু তাতে গড়ে তোলা যায়নি আন্দোলন। এ ক্ষেত্রেও যাদবপুরের আন্দোলনকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে ভাববার অবকাশ নাই। ভারতীয় উপমহাদেশে ছড়িয়ে থাকা পুরুষতন্ত্রকেই তা নির্দেশ করে মাত্র।
এমতাবস্থায় গণতান্ত্রিক বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের দাবীটাই হওয়া উচিৎ মূল দাবী। কারণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নির্মাণের মাধ্যমেই কেবল স্বৈরতন্ত্র -পুরুষতন্ত্র ধ্বংসের দিকে ধাবিত হওয়া সম্ভব। আর এ কারণেই গণতান্ত্রিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবীটি বিপ্লবী রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত। এক্ষেত্রে আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় অংশ এই বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছে। আর তাই আন্দোলনগুলোও দীর্ঘসময় টিকে থাকেনি। অর্জিত হয়নি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য।
বাঙলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা দরকার। রাজনৈতিক ব্যানার ব্যবহার না করে “সাধারণ শিক্ষার্থীদের” নামে ব্যানার ব্যবহার করাটা ছিল এখানকার বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর আরেকটি বড় ব্যর্থতা। অনেকেই সাফাই দিচ্ছেন যে, রাজনৈতিক সংগঠনের নামে ব্যানার ব্যবহার করা হলে শিক্ষার্থীরা আসবেন না, কিন্তু তা কখনোই সঠিক চিন্তা নয়। পৃথিবীর সবকিছুতেই যেখানে রয়েছে রাজনৈতিকতা, সেখানে এই আন্দোলন অরাজনৈতিক থাকে কিভাবে। আর তাকে অরাজনৈতিক বলার মানে হলো - বিরাজনীতিকরণের রাজনীতিকে সমর্থন করা। আর আন্দোলনের এই ব্যর্থতায়, এই আন্দোলন অর্থনীতিবাদী আন্দোলনে আবদ্ধ হয়েই থেকেছে। যে কারণে এই আন্দোলনগুলো একটা ধাপ পেরিয়েই থমকে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ছাত্র রাজনীতি যদি শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি জনগণের আন্দোলন সংগ্রামের সাথে যুক্ত হতে পারে, তবেই তা বিপ্লবী রাজনীতির পক্ষে পরিচালিত হওয়া সম্ভব। অপরদিকে, যখন তা কেবল শিক্ষার্থীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে পরিচালিত আন্দোলনেই আবদ্ধ হয়ে পড়ে, তখন সে আন্দোলন যে অল্প সময়েই নেতিয়ে পড়বে, তা বলাই বাহুল্য।
বিপ্লবী রাজনৈতিক চেতনাকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে শুধু শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ নয়, বেতন-ফি কমানোর আন্দোলন নয়, কেবল পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন নয়; বরং শাসকশ্রেণীর প্রভাব বলয় থেকে মুক্ত, এক গণতান্ত্রিক বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে পারলেই কর্পোরেট, এনজিওবাদীদের অপশক্তিকে মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।।
.
সংগ্রামী শুভেচ্ছাসহ
শাহেরীন আরাফাত
(মঙ্গলধ্বনি-র পক্ষে)
———————-
# হোক কলরব
No comments:
Post a Comment