প্রসঙ্গঃভোট ভাঁড়ে মা ভবানী!
দিদির খাস তালুক ভবানীপুরও হাতছাড়া হইতে পারে
দিদি ক্যান বুঝতাচেন না যে খাল কাইটা কুমির আনিলে, সেই কুমিরে প্রণসংশয় হইবই!গোকুলে বাড়তাছে বিজেপি।
দিদির লাইগা হ্যাভক চিন্তায় আছি।
লাল না হউক ,জনগণ যে গেরুয়াও হইতাছে এবং বেশি রকম হইতাছে,যেহেতু আপনে ও চান বিজিপি যা খুশি যেমন খুশি যাচ্ছে যা কিছু কইরা সিপিএম এবং কংগ্রেস সাবড়ে দিক।চুহা মারিবার ফন্দিতে বিল্লী আমদানি দিল্লী থেইকা,সেই বিল্লীই যদি বাঘিনী শিকার করে.তালে?
দাগে দাগে ভরা দাগিদের ভরষায় কেল্লা আগলাইয়া বইসা গান ধইরাছেন বেণী না ভিজাই,তলারও খাই ,গাছেরও কুড়াই- আহা,প্যাকেজ না হয় দিলই না,কিন্তু তা বলে কি যাহা চায়, সেইমত এই বাংলা হনুদের ভোগে লাগাইতে দিমু না,ভাবতাচেন ত ভাবুন,কারোও বাপের সাধ্যি নাই আপনকে বোঝায়,কিন্তু মগের মুল্লুক হনুদের ভোগে লাগলে যার যা কপালে জোটে,বাংলা আর বাংলা থাকতাছে না।
কি জানি কোথাকার জল কোথায় গড়ায়!
সত্যি সত্যি যদি কান টানতেই মাথাখানা ঘটাত কইরা ধূলায় লুটাইয়া পড়ে,ত একচের মাটি উত্সব সমেত তামাম উত্সব ক্যালাইয়া যাইব।
পলাশ বিশ্বাস
কংগ্রেসের সহিত জোট করিলেই কেরলের ভাটে সিপিএমের লালবাতি,ঔ আত্মহননের পথ আবার ক্ষমতার গন্ধে মম পাগলপ্রায মলয়ালি কমরেডেরা পোলিটব্যুরোকে মাডা়ইতে দেবনে না,বাজারি কাগজের গপ্পে তাহা চিন্তার কারণ নহে।
ন্যাতা ন্যাতিদের জোটে ভোটে শ্রমতার কুপি ওলটানোর কেস্সা বারম্বার ,বিশেষতঃ এই বাংলায় যেখানে যে কেউ সুযোগ পাইলাই এমএলএ এমপি হওনের লাগিয়া কাপড় চোপড় রা্স্তায় ফেলাইয়া জোর দৌড়ে বুড়ি ছোঁযার জোগাড় যন্তরে মানস অথবা ভুইয়াঁ বানাইয়া রহিযাছেন,গরুতে খাইলেও মানসে খাইব না।
দিদির রাগ ভয়ন্কর।মেজাজ প্রলয়ন্কর।কাব্যে দারুণ।
অত সোন্দর কবিতা লেখতে পারেন, ছবিও কোটি কোটি টাকায় বিকোয়,হাওযাই চপ্পলের সততার ছবি ছাড়া মাল কড়ি আহা কিছুই নাই,তবু বুঝিনা মোসাহেবদের পরামর্শে ও আবদারে তিনি ভোটের আগেই ভোট জিতা বইসাছেন।
দাগে দাগে ভরা দাগিদের ভরষায় কেল্লা আগলাইয়া বইসা গান ধইরাছেন বেণী না ভিজাই,তলারও খাই ,গাছেরও কুড়াই- আহা,প্যাকেজ না হয় দিলই না,কিন্তু তা বলে কি যাহা চায়, সেইমত এই বাংলা হনুদের ভোগে লাগাইতে দিমু না,ভাবতাচেন ত ভাবুন,কারোও বাপের সাধ্যি নাই আপনকে বোঝায়,কিন্তু মগের মুল্লুক হনুদের ভোগে লাগলে যার যা কপালে জোটে,বাংলা আর বাংলা থাকতাছে না।
অভিনেত্রীদের ক্ষেমতাও কম মনে কইরবেন না।
অভিনয় কোথা কোন কাজে অকাজে লাগে তাহা আপনি ভালোই বুঝেন।কিন্তু কোয়েল মিমি শ্রাবন্তী নুসরতদের মত বালিকারাও বাহালির সেরা রোমান্স সুচিত্রা সেনকে ভুলাইয়া ছাড়ছে।দেবের পাগলু ডান্সে বাংলা বাংলু খাইয়া কুপোকাত,উত্তম কুমারকে কে সুধোয়।
দ্রোপদী মহাবারতে কুরুবংশ ধ্বংস কইরাছিল,বাংলা জয়.কমসকম ভবানীপুর দখল এমন আর কি?
বিজেপি বাড়তাছে রোজ রোজ আর আপনার মনে মনে দিল্লীকা লাড্ডু টগবগাইতাইছে আহার এবার বুড়ো কমরেডরা দলে দলে পটল তুনিবেন কিংবা কংগ্রেসের সাইনবোর্ডও থাকতাছে না।
লাল না হউক ,জনগণ যে গেরুয়াও হইতাছে এবং বেশি রকম হইতাছে,যেহেতু আপনে ও চান বিজিপি যা খুশি যেমন খুশি যাচ্ছে যাকিছু কইরা সিপিএম এবং কংগ্রেস সাবড়ে দিক।চুহা মারিবার ফন্দিতে বিল্লী আমদানি দিল্লী থেইকা,সেই বিল্লীই যদি বাঘিনী শিকার করে.তালে?
যেমন কহিয়া থাকেন মিলমিলাইয়া ছন্দে ছন্দে,পাহাড় হাসতাচে,জঙ্গলমহল আল্লাদে আটকানা ধেইধেই নাচতাছে,
সরেজমিন কেহ কাঁদতাচে কিনা নিঃশব্দে কি সরবে,কোথাও হোক কলরব হইতাছে কিনা আর সব মতুয়া পাখিরা ফাঁদে পড়ছে কিনা আইবি দিয়া তদন্ত করলেই হয়,সিটে ভরসা থাকলে সিটও দুই একখানি কইরা হাল হকীকত দেখুন।
দলিত আদিবাসী পিছড়ে কে কোথায় আছড়ে পড়বেক,কেহ কি মাথা কিনিয়া রাইখছেন,সব বাড়িতে সাদা থান দিতা হইলে কত থান লাগে,কত ধানে তক চাল ?
সংখ্যালঘু ভোটও কারো বাপের জমিদারি নয়,যেমনটা ভাইবা যা ইচ্ছে তাই কইরা বামেদের পতন হইল,সেইদিনের কতা ভোলতে কি পারি?
নেডে়দের হাইকোর্ট দ্যাখাইয়া পওনের বেলায় কলা সর্বপাতে,ঠ্যালা বামেরা বোঝতাছে,টিপি পরাইয়া,হিজাপ পিনহে,নমজ দোয়া খোদা হাফিজে আম্মার চিঁড়া আবার না ভিজিলে কিন্তু মুদিখানার মাস্টার প্লান বাংলা দখলের কার্যকরি হইলেও হইতে পারে?
বাংলায় বর্গিরা আবার সবকিছু তহেস লহেস করার লাইগা ঝাঁপাইতাচে আর গেরুয়া গেরুয়া গাহিয়া জনগণ পদ্ম ফোটাইতাছে,চক্ষুর মাথা কি জন্মের মত খাইছেন,যে সবরকম ছাড়ে গেরুয়া গেরুয়া উত্সবে মাতিয়াছেন?
দিদির লাইগা হ্যাভক চিন্তায় আছি।
কি জানি কোথাকার জল কোথায় গড়ায়!
সত্যি সত্যি যদি কান টানতেই মাথাখানা ঘটাত কইরা ধূলায় লুটাইয়া পড়ে,ত একচের মাটি উত্সব সমেত তামাম উত্সব ক্যালাইয়া যাইব।
মনে কইরবেন ট্রাম্প কার্ড কিন্তু এক্ষুনি মুদিখানার দখলে।
বিরিন্চি বাবার টাইটেনিক জাহাজে চইড়া ভরাডুবি না হইলেই হয়।সবখানে হাইরা ভূত,বাংলায় সেই বূতের ন্রেত্য।
খয়রাতের দান ছত্রে যা কিছু রোজগার পাতি হইতে ছিল,তাহা ত বন্ধ হইবেই- তার চাইতেও বড় কথা কার বিরুদ্ধে যে কখন ফাঁসির রায় বেরোয় এবং তখন কিন্তু যাহার লাইগা চুরি করিনু,লূটপাট,রেপ, ইত্যাদির মাধ্যমে এই যে মগের মুল্লুকে সন্ত্রাসে বসবাস,সশরীরে স্বর্গবাস,তা নলেন গুড়ে বালির মতই না হইয়া যায়।
ইহার চাইতেও আরও একখানি চিন্তা বড়ই বেদনার,দিদি ত জনপ্রিয়তার নিরিখে দিদি নাম্বার ওয়ানের চাইতে মইল মাইল পিছিয়ে।
সাইকেল ,কম্বল ও জুতোয় কত আর মন ভরে।খাদ্য সুরক্ষার যে আশা জাগতাছিল,বেবাক রেশান দোকান জেলায় জেলায় পাবলিকের গুতোয় পাততাড়ি গোটাইতেছে,এহন যদিও মহার্ঘ্য ডিজিটাল রেশন কার্ড ভূলভাল ছাড়া কপালে জোটেও,হা কপাল খানি এমনিই পোড়া,যে রেশন মিলবে কি মিলবে না,না জানে কে জানে।
দিদি নাম্বার ওয়ানের জনপ্রিয়তা থেকে ক্লু লইয়া এহন যদি ওরিজিনাল দিদি মোদের কল্পতরু হইয়া সোনা দানা,সাড়ি গহনা,ফ্লাট না হইলেও ফ্লাট সাজাইবার যাবতীয় আসবাব জনগণের জন্য বরাদ্দ হয়,ত কোনো হালায় মানুষের জোট করুক বা অমানুষের জাট করুক,দিদিকে ইহজন্মে আর হারাইতে হইব না।
মুশকিল হইতাছে যে পিপিপি উন্নয়ণে হেজিয়ে মইরাও লগ্নি জুটতাছে না।
শুধু মুধু শিলান্যাস এবং প্রোমোটার বিল্ডার সিন্ডিকেটে কি রাজকোষ ভরে!
যা কিছু রাজ্যের আয়,তা মহার্ঘ ভাতা না দিলেও সপ্তম পে কমিশান লাগু করতেই উড়তাং,তাহার পর রাজ্য সরকারের কর্মচারি সকল উচ্চচিংড়ির একশ্যাষ।
কোন্ ব্যাডা বেডি তলায় তলায় তরবুজ,তা বোঝা দায়।তারপর বেতন বন্ধ হইল কি হইল না ,মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা সত্বেও মিলিল কি মিলিল না,উহারা শেষ পর্যন্ত কোন দিকে ঘুরিয়া দাঁড়ান এবং শেষ পর্যন্ত বৃদ্ধ কমরেডদের নেতৃত্বে,জোট হোক বা না হোক,সিপিএম যদি ঘুইরা দাঁড়ায়,হার্মাদ বাহিনী আবার যদি লালে লাল হয়,বেবাক চিন্তার কারণ।
দিদিকে হারানো তেমন কঠিনও নয়।
মোদীর সহিত গুজুর গুজুর কিংবা কামদুনি থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত মেক আপ ভ্যানসহ গেরুয়া তারকাদের অভিযান কিংবা প্রচন্ড গৌরিকায়ন হাওয়া বাতাসে দিকেদিকে পদ্ম ফুটানিতে দিদির দুর্জেয় কেল্লা লখীন্দরের অছিদ্র বাসর ঘরেরমত কাল কেউটের ছোবলে কুপোকাত তাসের ঘর না হইয়া যায়।
বাঙালিরা বড়ই সংবেদনশীল,পানেক থেইকা চুন খসলেিমহাভারত অশুদ্ধ,এমন বেয়াড়া পাবলিক যে কমরেডদের পয়ত্রিশ বছরের ফোলানো ক্ষমতার বেলুন ফাঁসাইয়া মানছে,শেষ পর্যন্ত কার ঢোল কে যে ফাঁসিয়ে দ্যায়।
মুদিখানার ভরসায় রাজকার্যের রকম সকম সুন্দরবনের ধ্বংসপ্রায় ম্যানগ্রোভ বা ঠাউর করেন হাঘরে মানুষদের শিল্পাযনের স্বপ্নে গ্রামবেদখল শহুরি শিকড়ছাডা় মানুষের বন্যা,কাহার ভোট যে কোথায় পড়ে।
কল কারখানা যতেক বন্ধ ছিল,পরিবর্তনের পরও গোটা কয়েকও খুলিল না।
চতুর্দিকে নানাবিধ হাব হাবি দিতাছে।মলে মল।
মরণের তরে পিপীলিকার পাখা গজায়,পাড়ায় পাড়ায় ভুয়ো শিক্ষার লাখো লাখ দোকানে যে বেকার সৈন্যবাহিনী হাউ হাউ কইরা ডিগ্রি বগলে চাকরির সন্ধানে সারা দেশে ভিখারির মত কাজ চাই কাজ চাই কইরা পাগল প্রায়,এই কুলাঙ্গার যদি অঙ্গার হইয়া আবার আরেকখানি পরিবর্তনেরক ষড়যন্ত্র কইরা বসে অথবা সাজানো কেসে এমনতর আদালতের রায় গণ ফাঁসির উত্সব হইয়া যায় ঘন ঘন,এবং বাঙালি মাছের গন্ধে দিল্লীর বেড়াল হেঁসেলে ধাওয়া কইরা সিবিআই দিয়া ওলটপালট কইরা দেয়,তহন?
দিদি ক্যান বুঝতাচেন না যে কাল কাইটা কুমির আনিলে সেই কুমিরে প্রণসংশয় হইবই।গোকুলে বাড়তাছে বিজেপি।
দিদির খাস তালুক ভবানীপুরও হাতছাড়া হইতে পারে
দিদি ক্যান বুঝতাচেন না যে কাল কাইটা কুমির আনিলে!
সেই কুমিরে প্রণসংশয় হইবই!গোকুলে বাড়তাছে বিজেপি।
পিত্তি জ্বালানিঃ
ভোট ভাঁড়ে মা ভবানী
নিজস্ব সংবাদদাতা |জানুয়ারি ২৪, ২০১৬
ভবানীপুরে একবার যখন 'কলঙ্ক' লেগে গিয়েছে, তখন সেখানে না-দাঁড়ানোই ভাল। বিরোধীরা কিছু বলে খোঁচা দেওয়ার চেষ্টা করলে পাল্টা যুক্তি দেওয়া যাবে, ওটা আসলে সুব্রত বক্সির আসন। তাই সেটা তাঁকেই ছেড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
গত লোকসভা নির্বাচনের পর বিরোধী শিবির ইস্তফার দাবি তুলেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শুনে ঘনিষ্ঠমহলে মুখ্যমন্ত্রী একটা তাচ্ছিল্যের 'হুঁ' দিয়েছিলেন। অস্যার্থ— হাতিঘোড়া গেল তল, ব্যাং বলে কত জল!
বিরোধীরা তবু হল্লা করতে ছাড়েনি। কারণ, খানিকটা হলেও ভবানীপুরে সত্যিই ভোটে টান পড়েছিল তৃণমূলের। কয়েকশো ভোটে হলেও ভবানীপুরে তৃণমূলের চেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি।
যে ভবানীপুর রাজনীতি এবং প্রশাসনের খাতায় ভিভিআইপি'র মর্যাদা পায়। যেমন পেত যাদবপুর।
কারণ, ভবানীপুর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী কেন্দ্র। কারণ, ভবানীপুর দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা আসনের অন্তর্গত। যে কেন্দ্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদত মৌরসিপাট্টা। হতে পারেন তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু মনে মনে এখনও তিনি সেই দক্ষিণ কলকাতারই সাংসদ।
সেই দক্ষিণ কলকাতারই ভবানীপুরে তাঁকে (আসলে তাঁর দল তৃণমূলকে) পিছনে ফেলে দিয়েছিল বিজেপি। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে ভবানীপুর বিধানসভা এলাকায় কংগ্রেস পেয়েছিল ১৫,৪৮৪ ভোট। সিপিএম ২১,৯৫৪টি। তৃণমূল ৪৭,২৮০ ভোট এবং বিজেপি ৪৭,৪৫৬টি ভোট। পাটিগণিতের হিসাবে তৃণমূল মাত্রই ১৭৬ ভোটে পিছিয়ে ছিল বিজেপি'র থেকে। কিন্তু রাজনীতিতে সাধারণ পাটিগণিত চলে না। কারণ, সেখানে সাধারণ পাটিগণিতের মতো দু'য়ে-দু'য়ে চার না-হয়ে তিন বা পাঁচও হতে পারে। ফলে লোকসভা ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ বলেছিল, বিজেপি'র চেয়ে নিজের কেন্দ্রেই ভোট সংখ্যার বিচারে পিছিয়ে পড়েছেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী। ফলে তাঁর 'নৈতিক পরাজয়' হয়েছে। অতএব, বিরোধীদের দাবি— তাঁকে ইস্তফা দিতে হবে!
এইসব 'নীতিগত' দাবি অবশ্য বিভিন্ন সময়ে ভোটের ফলাফলের প্রেক্ষিতে তোলা হয়ে থাকে। তাতে কেউ বিশেষ কান-টান দেন না। মমতার ইস্তফার দাবিও তেমন কেউ কানে তোলেননি। কিন্তু শাসকদলের মধ্যে বিষয়টা নিয়ে নাড়াচাড়া হয়েছিল বইকি! কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরোক্ষে হলেও পিছিয়ে-পড়ার 'বিলাসিতা' দেখাতে পারেন না। সেই কোন অতীতে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে মালিনী ভট্টাচার্যের কাছে হেরেছিলেন মমতা! তারপর থেকে তাঁর নিজস্ব ভোটে কোথাও পরাজয়ের উদাহরণ নেই। ফলে ভবানীপুরে তিনি দু'শোরও কম ভোটে পিছিয়ে থাকলেও সেই ধাক্কার একটা অভূতপূর্ব অভিঘাত তৈরি হয়েছিল।
গতবছরের পুরসভা ভোটে অবশ্য সেই 'ক্ষতি'র অনেকটাই মেরামত করে ফেলেছে তৃণমূল। ২০১৫ সালের কলকাতা পুরভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত আটটি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র একটিতেই এগিয়েছিল বিজেপি। আরও একটিতে এগিয়েছিল সিপিএম। বাকি ছ'টি ওয়ার্ডেই জয়ী তৃণমূল। ফলে আসন্ন বিধানসভা ভোটে ভবানীপুর কেন্দ্র আর 'লাল সংকেত'ভুক্ত নয়। তবুও সেখানে আবার লড়ার আগে 'ভাবছেন' মমতা। দলীয় সূত্রে তেমনই খবর।
তৃণমূলের অন্দরের খবর বলছে, ভবানীপুর কেন্দ্র দলের রাজ্য সভাপতি তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সিকে ছেড়ে দিতে পারেন মমতা। তিনি নিজে সরে যেতে পারেন ভবানীপুরের পাশের কেন্দ্র রাসবিহারীতে। সেখানকার বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে দাঁড় করানো হতে পারে সুব্রত বক্সির ছেড়ে-দেওয়া দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে। শোভনদেব নিজে অবশ্য লোকসভায় লড়তে খুব একটা অগ্রহী নন। কিন্তু মমতা নির্দেশ দিলে তাঁকে তা মানতে হবে। নইলে লোকসভাও যাবে। রাসবিহারী বিধানসভার টিকিটও মিলবে না।
দলের একাংশের অবশ্য দাবি, নেত্রী কোনও অবস্থাতেই ভবানীপুর ছেড়ে যাবেন না। এই অংশের কথায়, ''উনি ভবানীপুরে না-দাঁড়ালে তো বিরোধীরা বলবে, আগে থেকেই হার স্বীকার করে নিলেন! যেহেতু লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ওই কেন্দ্রে এগিয়েছিল, তাই নেত্রীর আরও বেশি করে ভবানীপুরে দাঁড়িয়ে বিপুল ব্যবধানে জিতে সকলকে তাঁর ক্যারিশমা দেখিয়ে দেওয়া উচিত! ভবানীপুর ছাড়লে নেত্রীর নৈতিক পরাজয় হবে। বিরোধীরা কিন্তু সেটা নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়বে না।''
আবার ভবানীপুর-বিরোধীদের যুক্তি— ''মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের যে কোনও আসন থেকে লড়লেই জিতবেন! সে অর্থে রাজ্যের ২৯৪টি আসনই তাঁর। কারণ, তাঁর নামেই ভোট হয়। তাঁর আকর্ষণেই মানুষ তৃণমূলকে রাজ্যের ক্ষমতায় এনেছেন। ভবিষ্যতেও আনবেন। ফলে কলকাতার ভবানীপুর হোক বা পুরুলিয়ার বান্দোয়ান— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বত্রই নিরাপদ।'' সেই সূত্রেই দলের এই অংশের আরও বক্তব্য, ''ভবানীপুর আসনটি আদতে সুব্রত বক্সির। ২০১১ সালে তিনি ওই আসন থেকেই জিতে মন্ত্রী হয়েছিলেন। এখন যখন নেত্রী আবার বক্সিকে রাজ্যে নিয়ে আসার ব্যাপারে মনস্থির করেছেন, তখন বক্সিকে তাঁর পুরনো আসনেই টিকিট দেওয়া উচিত হবে।''
তৃতীয় একটি অংশও রয়েছেন দলের অন্দরে।
তাঁদের বক্তব্য, ভবানীপুরে একবার যখন 'কলঙ্ক' লেগে গিয়েছে, তখন সেখানে না-দাঁড়ানোই ভাল। বিরোধীরা কিছু বলে খোঁচা দেওয়ার চেষ্টা করলে পাল্টা যুক্তি দেওয়া যাবে, ওটা আসলে সুব্রত বক্সির আসন। তাই সেটা তাঁকেই ছেড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্য একটি সূত্র আবার বলছে, ভবানীপুরের সঙ্গেই মমতা বেহালা পূর্ব কেন্দ্রটি নিয়েও নাড়াচাড়া করছেন। আপাতত সেখানকার বিধায়ক কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু গত কয়েকমাস ধরেই শোভন ঘনিষ্ঠমহলে জানাচ্ছেন, তিনি আর বিধানসভায় লড়তে আগ্রহী নন। সম্প্রতি এক প্রকাশ্য অনুষ্ঠানেও মেয়র তেমনই 'সংকেত' দিয়েছেন। মেয়রের ঘনিষ্ঠেরা বলছেন, তিনি সাংসদ হতে চান। প্রাথমিকভাবে তিনি রাজ্যসভায় যেতে আগ্রহী। একান্তই তা না-হলে লোকসভাতেও আপত্তি নেই। তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, সেই অঙ্কেই মেয়র তাঁর 'নিরাপদ' বিধানসভা আসনটি মুখ্যমন্ত্রীর করকমলে অর্পণ করতে চাইছেন। সেক্ষেত্রে, প্রথমত, তাঁর নিজের বিধানসভায় না-দাঁড়ানোর মনোবাসনা পূর্ণ হবে। দ্বিতীয়ত, নেত্রীকে আসন ছাড়লে কালীঘাটে তাঁর নম্বর আরও বাড়বে। তৃতীয়ত, সুব্রত বক্সিকে রাজ্যে নিয়ে এলে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা আসনে তাঁকে টিকিট দিতে পারেন মমতা। ফলে জাতীয় রাজনীতিতে অভিষেকও সম্পন্ন হবে শোভনের।
এসবই অবশ্য এখনও জল্পনার স্তরে। তবে এটা অনস্বীকার্য যে, ভবানীপুর-রাসবিহারী-বেহালা পূর্ব নিয়ে কালীঘাটে নাড়াচাড়া হচ্ছে। কোন ঘুঁটি কোথায় যায়!
এবেলা তেকে সধন্যবাদ!
কাঁটা সবার ঘরেই, বুঝছে টিম-মমতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা, ৩০ এপ্রিল, ২০১৫, ০৩:১৫:০২
তৃণমূলের অন্দরে আক্ষেপ আর বিস্ময়ের যুগলবন্দি— দক্ষিণবঙ্গের ১২টি জেলায় বিরোধীরা কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু 'ঘরের উঠোন' দক্ষিণ কলকাতা স্বস্তি দিল না মোটেই! ভোটের ফলাফল বলছে, দক্ষিণবঙ্গের মোট ৭৯টি পুরসভার মধ্যে তৃণমূলই দখল করেছে ৬৩টি। অথচ শহরের দক্ষিণ প্রান্তে সেই তাদেরই বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড হারাতে হল। আর এই সব এলাকায় কিছুটা হলেও ভোট বাড়িয়ে নিল বিরোধীরা।
ভবানীপুরে জন্মলগ্ন থেকে কখনও ফিরে তাকাতে হয়নি তৃণমূলকে। এখানে তাদের এতই প্রভাব যে, তাতে ভর করে আশপাশের এলাকাতেও এত দিন ইচ্ছেমতো ছড়ি ঘুরিয়েছে শাসক দল। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর মমতা এই ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক হওয়ায় তা বাড়তি মাত্রা পেয়েছে। তবু সেই নিশ্ছিদ্র বাসরঘরেও ছিদ্র দেখা গেল ২০১৪-র লোকসভা ভোটে। দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ভবানীপুর বিধানসভা এলাকাতেই তৃণমূলকে পিছনে ফেলে কয়েকশো ভোটে এগিয়ে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী তথাগত রায়। তাতে ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত বক্সীর জয় না আটকালেও এই নিয়ে দলের অন্দরে তোলপাড় হয়েছিল। তার বছরখানেক পরে পুরভোটের ফলাফলেও দেখা যাচ্ছে, ছিদ্র ভরাট তো হয়ইনি, উল্টে শাসক দলকে আরও চিন্তায় ফেলে মুখ্যমন্ত্রীর খাসতালুকে দু'টি ওয়ার্ডে বড় ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল।
ভোটের ফল বলছে, ভবানীপুরের ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির কাছে তৃণমূল প্রার্থী সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় হেরে গিয়েছেন প্রায় দু'হাজার ভোটে। ''এই কেন্দ্র হাতছাড়া হতে পারে স্বপ্নেও ভাবিনি''— মন্তব্য তৃণমূলের এক নেতার। বিদায়ী পুরসভার চেয়ারম্যান সচ্চিদানন্দবাবু কী করে হারলেন, তা নিয়ে নানা মুনি নানা ব্যাখ্যা দিলেও ঘটনা হল, এখানে লোকসভা ভোটের ধারাই অব্যাহত রেখেছে বিজেপি। গত বার ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়ী ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলর পরে তৃণমূলে যোগ দেন। শাসক দলের আশা ছিল, এ বারের পুরভোটে ওই ওয়ার্ড তাদের ঝুলিতেই আসছে। বাস্তবে তা হয়নি। এ বারেও তৃণমূলের প্রার্থীকে সাড়ে ছ'হাজার ভোটে হারিয়ে সেই ফরওয়ার্ড ব্লকই ওই ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে।
ভবানীপুর থেকে কাঁটা ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণের বিভিন্ন প্রান্তে। যেমন শিক্ষামন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা-পশ্চিম। সেখানে দু'টি ওয়ার্ড তৃণমূলের হাত থেকে গিয়েছে সিপিএমের ঝুলিতে। চলে আসুন রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রের বিধায়ক বিধানসভার মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এখানেও দু'টি ওয়ার্ড এ বার তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে। তৃণমূলের দীর্ঘদিনের 'গড়' ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছেন বিজেপির তিস্তা বিশ্বাস। ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডেও তৃণমূলের তনিমা চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে আসনটি বের করে নিয়েছে বিজেপি। তনিমাদেবী পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন।
শহরের যে বন্দর এলাকা ওঠাবসা করে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কথায়, সেই গার্ডেনরিচ বিধানসভা এলাকায় এ বার হাতের দাপাদাপি। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই এলাকার দু'টি ওয়ার্ড— ১৩৫ এবং ১৪০ এ বার তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে। দু'টিই জিতেছে কংগ্রেস। বন্দর এলাকায় কোনও ওয়ার্ড না পেলেও ভাল ভোট পেয়েছে বিজেপি। মমতা-ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী ও টালিগঞ্জের বিধায়ক অরূপ বিশ্বাসের এলাকাতেও বিরোধীরা ভোট বাড়িয়ে নিয়েছে।
শাসক দলের নেতারা প্রকাশ্যে 'কিছু হয়নি' ভাব করলেও ঘনিষ্ঠ মহলে অনেকেই বলছেন, ''যেখানে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকার কথা, সেখানে মশার কামড় কি ভাল লাগে? মশার কামড়েই তো ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া হয়!''
-আনন্দবাজারের খবর
No comments:
Post a Comment