BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Saturday, November 22, 2014

আবার যাদবপুর। সাথে প্রেসিডেন্সী। আবার রাজপথ। আবার ছাত্রসমাজ। এবং প্রতিবাদ! প্রতিবাদ সমাজের স্বঘোষিত মাতব্বরদের অনৈতিক খবরদারির বিরুদ্ধে! তাই আন্দোলন। আন্দোলন প্রতিটি মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতার স্বপক্ষে। আন্দোলন প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষার দাবিতে।


আবার যাদবপুর। সাথে প্রেসিডেন্সী। আবার রাজপথ। আবার ছাত্রসমাজ। এবং প্রতিবাদ! প্রতিবাদ সমাজের স্বঘোষিত মাতব্বরদের অনৈতিক খবরদারির বিরুদ্ধে! তাই আন্দোলন। আন্দোলন প্রতিটি মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতার স্বপক্ষে। আন্দোলন প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষার দাবিতে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে সেই আন্দোলনের প্রকরণ নিয়ে। প্রশ্ন উঠেছে ভারতীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও আধুনিকতার দ্বন্দ্ব নিয়েও। প্রশ্ন উঠেছে ছাত্রসমাজের অধিকারের সীমারেখা নিয়েও। আসলে নগর কোলকাতা তার শত প্রাগ্রসর মানসিকতা নিয়েও হয়ত প্রস্তুত ছিল না এহেন অভিনব প্রতিবাদী ধরণের সম্মুখীন হতে। কিন্তু কলকাতার ছাত্রসমাজ বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েই পথে নেমেছিল সেদিন! সন্ধ্যার রাজপথ আলোড়িত করে পৌঁছিয়ে দিয়েছিল তারা তাদের স্পষ্ট বার্তা! যে বার্তায় নড়েচড়ে বসেছে গেটা সমাজ। পক্ষে বিপক্ষে মানুষকে অন্তত ভাবতে বাধ্য করেছে তারা। এইখানেই তাদের সেদিনের আন্দোলনের প্রাথমিক সাফল্য বলা যেতে পারে। সাধারণ মানুষ ব্যক্তিস্বাধীনতা ও নাগরিকের মৌলিক অধিকারের গুরুত্ব সম্বন্ধে সচেতনতার বিষয়ে আরও বেশি করে ওয়াকিবহাল হওয়ার পরিসর খুঁজে পাবে। যে কোনো আন্দোলনই প্রশংসার সাথেই বিস্তর সমালোচনার সম্মুখীন হতে বাধ্য। কারণ সমাজে সকলেই একই মনোবৃত্তির হয় না। বিভিন্নজনের মানসিকতা ভিন্ন হবে সেটাই স্বাভাবিক। ফলে আন্দোলন তার পক্ষে বিপক্ষে কত মানুসকে পেল বা পাবে, সেখানেই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ!

আন্দোলনের ভবিষ্যৎ যাই হোক, বর্তমানের এই ছাত্রসমাজের উপরেই আমাদের সমাজ সংসারের ভবিষ্যতের ভার। আর সেই ভার যে তারা ভালোভাবেই সামলাতে পারবে সে বিষয়ে আশান্বিত হওয়ার যথেষ্ঠ কারণ রয়েছে। কারণ রয়েছে এইখানেই, যে যাদবপুর, প্রেসিডেন্সীর এই উজ্জ্বল মেধার ছাত্রছাত্রীরা বিগত প্রায় চার দশকের বন্ধ্যা দশার পর এই প্রথম রাজনৈতিক দলগুলির পতাকার বাইরে একটি অরাজনৈতিক আন্দোলনের পরিসর তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে। অবশ্যই এখন দেখার যে রাজনৈতিক দলগুলির প্রবল চাপের কাছে তারা কতদিন মাথা না নুইয়ে থাকতে পারে।

যাদবপুর থানার সামনে মানব শৃঙ্খল তৈরী করে তাদের পারস্পরিক আলিঙ্গনাবদ্ধ চুম্বনের মাধ্যমে তারা প্রতিবাদের যে নতুন দিগন্ত খুলে দিলেন, তাতে ভ্রূ কুঞ্চন হয়েছে অনেকেরই। সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছে দার্জিলিং থেকে দীঘা! এখন যারা এই অভিনব প্রতিবাদের ধরণ নিয়েই সমাজে গেল গেল রব তুলেছেন, তারা পড়ে রয়েছেন ঐ প্রকাশ্য রাজপথে চুম্বনটুকু নিয়েই। তলিয়ে দেখছেন না প্রতিবাদের লক্ষ্যটির প্রতি। অর্থাৎ তারা কিন্তু পড়ে রয়েছেন নাকের বদলে নরুণটুকু নিয়েই। কেন এই অভিনব প্রতিবাদ! ব্যক্তি নাগরিকের মৌলিক অধিকার খর্বের বিরুদ্ধেই তো এইভাবে রুখে দাঁড়ানো। সমাজের স্বঘোষিত মোড়লদের অনৈতিক খবরদারির বিরুদ্ধেই তো এই প্রতিবাদ।

আসলে আমাদের ভারতবর্ষ রাজনৈতিক স্বাধীনতা পেলেও সেই স্বাধীনতার অন্তর্নিহিত শক্তি আজও অর্জন করতে পারেনি। রাজনৈতিক স্বাধীনতা প্রভুজাতির বদান্যতাতেও পাওয়া যায়। কিন্তু প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জনের জন্যে সমাজের অভ্যন্তরে যে আত্মশক্তির উদ্বোধনের প্রয়োজন; দূর্ভাগ্যের বিষয়, ভারতবর্ষের সমাজব্যবস্থার অন্তরে সেই শক্তির উদ্বোধন আজও ঘটেনি। আর ঘটেনি বলেই সমাজের পরতে পরতে বহু শতাব্দীর জমাট অন্ধকার আজও থরে থরে জমে আছে। আজও দেশের আনাচে কানাচে কান পাতলে সতীদাহের মহিমা কীর্তন শোনা যায়। বিধবা বিবাহের নামে আজও অনেকেই নাক সিঁটকায়। বাল্যবিবাহের ঘটনা আজও ইতিহাস হয়ে যায়নি সম্পূর্ণ। আজও এদেশে নারীর সুরক্ষা একান্ত ভাবেই পিতা পূত্র স্বামী নির্ভর। আজও ভিন্ন ধর্মের মধ্যে বিবাহ, অসবর্ণ বিবাহ সামাজিক বিরুদ্ধতার সম্মুখীন হয়। আজও নারী পুরুষের সম্পর্ক মানেই দাম্পত্যের গণ্ডীতেই বিচার্য। ফলত সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গীর মধ্যেই রয়ে গিয়েছে সেই আত্মশক্তির নিদারুণ অভাব, যে কারণে সমাজ এখনো দূর করতে পারেনি তার ভেতরের অন্ধকার। আর সেই অন্ধকার নিয়েই বৃটিশের কাছ থেকে পারস্পরিক সমঝতার সূত্রে পাওয়া এই বকলমের স্বাধীনতায় এগিয়ে চলেছে ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থা!

স্বাধীনতার সাথে ব্যক্তিস্বাধীনতা নাগরিক দায়বদ্ধতা ও দেশের প্রতি কর্তব্য এবং নাগরিকের মৌলিক অধিকারের প্রশ্ন জড়িত। যে কোনো প্রকৃত স্বাধীন দেশেই একবার গেলে এই বিষয়টি পরিস্কার অনুধাবন করা যায়। সে সব দেশের সমাজের পরতে পরতে জড়িয়ে থাকে এই বোধগুলি। দুঃখের বিষয় ভারতবর্ষের স্বাধীনতার পর ছয় ছয়টি দশক অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও এদেশের সমাজে আজও এই বিষয়ে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। আর গড়ে ওঠেনি বলেই এদেশে নাগরিকের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষার বিষয়টি এত অবহেলিত! এবং এরই সাথে যুক্ত হয়েছে অন্যের মৌলিক অধিকার খর্ব করার মধ্যেই এক ধরণের ক্ষমতাচর্চার বীভৎস আনন্দ। ঠিক যে ক্ষমতাচর্চার সুপ্রাচীন ধারাটি ভারতীয় সমাজ বাস্তবতার প্রায় হাজার বছরের ট্র্যাডিশান! ধর্মের নামে, আচারবিচারের নামে, সামাজিকতার অজুহাতে ব্যক্তির মৌলিক অধিকার অবরুদ্ধ করার ইতিহাসটি ভারতীয় ইতিহাসের অন্যতম সকরুণ ধারা। দেশ স্বাধীন হলেও, স্বাধীন সংবিধান তৈরী হলেও, আইন ও বিচার ব্যবস্থার বিস্তার ঘটলেও, অনৈতিক ক্ষমতাচর্চায় ব্যক্তির মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করার অন্যায় ধারাটি বহাল রয়েছে আজও। রাজনীতির নামে, ধর্মের নামে, সামাজিক রীতিনীতির নামে, সর্বপরি ভারতীয় সংস্কৃতির সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের নামে নাগরিকের মৌলিক অধিকার তছনছ করার ঘটনা ঘটে চলেছে অহরহ। সত্যি করে বলতে কি দুঃখজনক হলেও এইটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্দ প্রকৃতি।

তাই যাঁরা কথায় কথায় ভারতীয় সংস্কৃতির দোহাই পারেন তারা না জানেন ভারতবর্ষের প্রকৃত ইতিহাস, না জানেন স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ! সুখের কথা বর্তমান প্রজন্মের এই মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা এই দুইটি বিষয়েই সচেতন হয়ে উঠছে দ্রুত। আর ঠিক সেই কারণেই স্বাধীন নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষার প্রশ্নেই তাদের সময়চিত এই চুম্বন আন্দোলন। সেই আন্দোলনকে ভারতীয় সংস্কৃতির সুমহান ঐতিহ্যের প্রসঙ্গ তুলে যাঁরা সমালোচনায় উদ্যত- তাঁরা যে সত্যিই ভারতীয় সংস্কৃতির ইতিহাস সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল নন, সে কথা বুঝতে বাকি থাকে না। বাকি থাকে না, যাঁরা ইতিহাস সম্বন্ধে সচেতন তাঁদের!

সুখের কথা যাদবপুর প্রেসিডেন্সীর এই উজ্জ্বল শিক্ষার্থীরা ভারতীয় সংস্কৃতির তথাকথিত সুমহান ঐতিহ্য সম্বন্ধ যথকিঞ্চিত ওয়াকিবহাল। আর সেই কারণেই তাঁরা সংঘটিত করতে পেরেছেন এই আন্দোলন। যার পেছনে স্পষ্ট যুক্তি ও স্বচ্ছ জ্ঞানের সৎসাহসের প্রয়োজন পড়ে। ভারতীয় সংস্কৃতির ইতিহাসের বহুস্তর। বহু শাখা প্রশাখায় তার বিস্তার। সে সম্বন্ধে অন্যত্র আলোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু ভারতীয় সভ্যতার ইতিহাস মূলত দুইটি পর্বে বিভক্ত। প্রথম পর্বটি গৌরবের। যখন মানব সভ্যতার উৎকর্ষতার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন দেখা দিয়েছিল এই ভূখণ্ডে। যে ইতিহাসের দিকচিহ্ন আজও কিছু রয়ে গিয়েছে ছড়িয়ে ছিঠিয়ে। যে ইতিহাসের অন্তর্নিহিত শক্তিই ভারতবর্ষের সনাতন ঐতিহ্য। যে ঐতিহ্যে অভিভুত বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশের সচেতন মনীষা। এবং গর্বের কথা, যে ঐতিহ্য সনাতন হয়েও শাশ্বত আধুনিক। দুঃখের কথা আমরা অধিকাংশ ভারতীয়ই সেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অনুসারী নই, কারণ সে সম্বন্ধে আমাদের উত্তরাধিকারের কোনো সরাসরি সম্বন্ধ অবশিষ্ট নেই আর।

দ্বিতীয় পর্বটি লজ্জার। ক্রমাগত বৈদেশিক শক্তিগুলির শাসনে, বিদেশী সংস্কৃতিগুলির অন্ধ অনুকরণে, ক্ষমতাবানের পদলেহনে আপন আত্মশক্তির বিস্মরণের পর্ব সেটি। ঠিক এই পর্বেই সুপ্রাচীন সনাতন ভারতীয় সংস্কৃতির অবক্ষয়ের সূত্রপাত। যার ধারা বিগত সহস্রাব্দ ব্যাপি কালপর্ব পেড়িয়েও আজও বহমান! আর সেই ধারারই উত্তরাধিকারী আমরা। যে ধারার প্রকৃতি সম্বন্ধে পূর্বেই কিছু আলোচনা করা হয়েছে। আর সেই ধারার প্রসঙ্গ টেনে কেউ যখন বলেন ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে এটা খাপ খায় না, ওটা খাপ খায় না; তখন ভারতীয় সংস্কৃতি সম্বন্ধে তাঁদের অজ্ঞতাই প্রমাণ হয়। আর ঠিক এইখানেই রুখে দাঁড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রসমাজ। কোনটা সনাতন ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে খাপ খায় আর কোনটা খায় না, সেই প্রসঙ্গেই সমাজকে জোর ধাক্কা দিয়েছেন তারা। আধুনিকতার সংজ্ঞা ও তার সাথে সনাতন ভারতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কি সম্বন্ধ সেই বিষয়ে নতুন করে আলোচনার পরিসর গড়ে ওঠার একটি সুযোগ করে দিয়েছে এই ছাত্রসমাজ। প্রশ্ন তুলে দিয়েছে শ্লীলতা অশ্লীলতার চিরন্তন দ্বন্দ্বেরও। সামাজিক পরিসরে এই প্রশ্নগুলি নিয়ে আলোড়ন হওয়া খুবই জরুরী, নয়ত সমাজের পুঞ্জীভুত বিষাক্ত ক্লেদ দূর হবে না কোনোদিনই।

সনাতন ভারতীয় সংস্কৃতির যে নিদর্শনগুলি আজও আবিশ্ব জনমানসকে বিস্মিত করে, মানুষের শিল্পবোধকে আলোড়িত করে, শিল্পচেতনার পরিসরকে নিরন্তর প্রণবন্ত করে রাখে; সেইগুলি থেকেই তো আমাদের শ্লীলতা অশ্লীলতার ধারণা গড়ে ওঠার কথা। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের কথা, ধর্মীয় বিধিনিষেধের নিক্তিতে কালে কালে কূপমণ্ডুকতার চর্চার হাত ধরে, সমাজপতিরা তাদের নিজেদের ঐহিক নানান স্বার্থের সুবিধার্র্থেই শ্লীলতা অশ্লীলতার নানান প্রকরণ তৈরী করে তোলেন। এবং গোটা সমাজকেই সেই কূপমণ্ডুক ধ্যানধারণার নাগপাশে আবদ্ধ করে ফেলেন। আর এই বিষয়ে তাদের সহায়ক হয়ে ওঠে সার্বিক অশিক্ষার ব্যপক প্রসার। প্রকাশ্যে চুম্বন নিয়ে যাঁরা সনাতন ভারতীয় সংস্কৃতির দোহাই পারেন, তাঁরা সনাতন ভারতীয় সংস্কৃতি সম্বন্ধে সম্পূর্ণ অজ্ঞতাবশত, এবং সমাজপতিদের তৈরী করা সামাজিক অন্ধকারের কূপমণ্ডুকতার কুশিক্ষায় দীক্ষিত হয়েই এইসব ভুল তত্ত্ব আুউড়ান মাত্র। বরং বলা ভালো আজকের উন্নত পাশ্চাত্য সভ্যতা যে আধুনিকতার আলো ছড়াচ্ছে সেই আলো সনাতন সুপ্রাচীন ভারতবর্ষ হাজার হাজার বছর পূর্বেই প্রজ্জ্বলিত করেছিল। করেছিল তাদের জীবন জিজ্ঞাসার মৌলিকতায় জীবনচর্চার পরিসরেই। আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা সেই আলোর পথ থেকে বহুপূর্বেই বিচ্যূত হয়ে পড়েছি। কিন্তু তাই বলে ক্রমাগত অন্ধকারেরই চর্চা করে যেতে হবে, সেটা কেমন কথা?

এইখানেই প্রশ্ন তুলেছে নবীন প্রজন্মের কচি কাঁচারা! রবীন্দ্রনাথ যাদের উদ্দেশ্যে কবেই ডাক দিয়েছেন, 'আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা' বলে। সুখের কথা গর্বের কথা, এই প্রজন্মের একটি অংশ অন্তত কবির ডাকে সারা দিতেই যেন পথে নেমেছে তাদের নিজেদের মতো করে, নিজেদের ভাষাতে নিজেদের কথাটাই বলতে। আর সেই ভাষাতেই চমকে উঠেছে স্থবির সমাজ। টনক নড়েছে সমাজের স্বঘোষিত মাতব্বরদের।
তাই প্রশ্ন উঠেছে আন্দোলনের প্রকরণ নিয়েই। নীতিবাগিশরা খুরধার যুক্তিতে শান দিতে উঠে পড়ে লেগেছেন। উঠে পড়ে লেগেছেন সেই কূপমণ্ডুকতারই ধ্বজা ধরে। অথচ এই নবীন প্রজন্মের মেধাবী উজ্জ্বল কচিকাঁচারা আন্দোলনের যেন একটা নতুন দিগন্তই খুলে দিয়ে গেল। সনাতন ভারতীয় ঐতিহ্যের উপর পড়ে থাকা হাজার বছরের পুরানো ধুলোকে বেশ সজোরেই ঝাঁকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে তারা। অন্তত প্রাথমিক ভাবে তো বটেই। তাই তাদের আন্দোলনের এই অভিনব প্রকরণ নিয়ে যে যতই কটাক্ষ করুক না কেন, আগামী ভবিষ্যতের বহু আন্দোলনের দিশারী হয়ে পৌরহিত্য করবে এঁদের এই অভিনব প্রয়াস।

এই প্রসঙ্গেই স্মরণে আসে কবিগুরুর মেজদাদা সত্যন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা। তিনিও একদিন এইরকমই সজোরে ধাক্কা দিয়েছিলেন তৎকালীন অসাড় সমাজকে। প্রকাশ্য দিবালোকে সস্ত্রীক ঘোরায় চড়ে গড়ের মাঠে হাওয়া খেতে বেড়িয়েছিলেন বলে চারিদিকে ঢিঢি পড়ে গিয়েছিল সেদিনের কলকাতার সমাজে। সমাজপতিরা বিস্তর নড়ে চড়ে বসেছিল গেল গেল রব তুলে। তাদের আশংকা ছিল এরপর আর ঘরের স্ত্রীলোকদিগকে ধরে রাখা যাবে না। রসাতলে যাবে সুপ্রাচীন ভারতীয় সমাজ সভ্যতা। সেদিনও আজকেরই মতো অভিজ্ঞ প্রাজ্ঞ বিজ্ঞদের দল মাথা নেরে হায় হায় করে উঠেছিল একি অধঃপতন হল বলে। কিন্তু সেদিন সত্যেন্দ্রনাথ যদি প্রচলিত সামাজিক রীতির দোহাই দিয়ে সস্ত্রীক গড়ের মাঠে হাওয়া খেতে বেড়োতে দিধ্বান্বিত হতেন তবে আজকের সমাজ আজকের জায়গায় এসে পৌঁছাতে পারত না। ঠিক যে কারণেই রামমোহন বিদ্যাসাগর তাঁদের সময়ের সমাজকে নিজ নিজ পথে সজোরে ধাক্কা দিয়ে গিয়েছিলেন। তাই কূপমণ্ডুক সমাজকে যুগে যুগে এইভাবেই ধাক্কা দিয়ে সচকিত করে সামনের দিকে এগিয়ে দিতে হয়। সেটাই যুগন্ধরদের কাজ। ভাবতে ভালো লাগছে আজ আমাদের এই সন্তানতুল্য নবীন প্রজন্ম যেন সেই যুগন্ধর হয়ে ওঠার পথে প্রথম পা বাড়িয়েছে। সার্থক হোক তাদের এগিয়ে চলা।

- See more at: http://attarsanniddhe.blogspot.in/2014/11/blog-post.html…

আসলে আমাদের ভারতবর্ষ রাজনৈতিক স্বাধীনতা পেলেও সেই স্বাধীনতার অন্তর্নিহিত শক্তি আজও অর্জন করতে পারেনি। রাজনৈতিক স্বাধীনতা প্রভুজাতির বদান্যতাতেও পাওয়া যায়। কিন্তু প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জনের জন্যে সমাজের অভ্যন্তরে যে আত্মশক্তির উদ্বোধনের প্রয়োজন; দূর্ভাগ্যের বিষয়, ভারতবর্ষের...
ATTARSANNIDDHE.BLOGSPOT.COM|BY শব্দের মিছিল
LikeLike ·  · Share

No comments:

LinkWithin

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...